HomeTech Newsসাবধান! অন্ধের মতো Google এর এই তথ্য বিশ্বাস করবেন না, লক্ষ লক্ষ...

সাবধান! অন্ধের মতো Google এর এই তথ্য বিশ্বাস করবেন না, লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন বহু মানুষ

মার্কেটে একটি নতুন স্ক্যাম এসেছে, যার নাম সার্ভিস সেন্টার স্ক্যাম (Service Center Scam)। যার ফাঁদে পা দিয়ে ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন বহু সংখ্যক ইউজার

বর্তমান ডিজিটাল যুগ পুরোপুরিভাবে হয়ে গিয়েছে Google নির্ভর। একথা নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য যে, চলতি সময়ে Google আমাদের সকলের জীবনেরই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এখন যে-কোনো বিষয়ে কিছু জানার প্রয়োজন হলেই আমরা এই সার্চ ইঞ্জিনটির শরণাপন্ন হই। সেক্ষেত্রে দুঃখের বিষয় হল, Google-এর প্রতি ব্যবহারকারীদের এই অগাধ বিশ্বাসের সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকরা, যার ফলে ভালো কিছু জানতে গিয়ে উল্টে ইউজারদেরকে সাইবার জালিয়াতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সত্যি কথা বলতে গেলে, বর্তমানে ‘স্ক্যাম’ শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। প্রতিদিনই নতুন নতুন স্ক্যামের কথা শোনা যায়। তবে এখন মার্কেটে একটি নতুন স্ক্যাম এসেছে, যার নাম সার্ভিস সেন্টার স্ক্যাম (Service Center Scam)। যার ফাঁদে পা দিয়ে ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন বহু সংখ্যক ইউজার। কিন্তু ঠিক কীভাবে ঘটছে এই জালিয়াতি? আসুন জেনে নিই।

সার্ভিস সেন্টার স্ক্যাম কী?

নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, সার্ভিস সেন্টারকে হাতিয়ার করেই এই কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয়েছে। আসলে চলতি সময়ে কোনো ডিভাইস বা প্রোডাক্ট ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা সকলেই নিকটবর্তী সার্ভিস সেন্টারের সন্ধান করি। সেক্ষেত্রে চটজলদি পরিষেবা কেন্দ্র খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল গুগল সার্চ। অর্থাৎ যা জানতে চাইছি, তা গুগলের সার্চ বারে টাইপ করলেই অতি অনায়াসে প্রয়োজনীয় তথ্য হাতের মুঠোয় চলে আসে। তবে দুঃখের বিষয় হল, চলতি সময়ে এই সুযোগেরই সদ্ব্যবহার করছে স্ক্যামাররা।

মূলত কোনো সার্ভিস সেন্টারের নম্বর সার্চ করলে গুগল যে নম্বরটি দেয়, তাতেই অন্ধভাবে বিশ্বাস রেখে কল করি আমরা। কিন্তু এখান থেকেই হচ্ছে সমস্যার সূত্রপাত! আসলে ব্যাপারটা হল, সাইবার অপরাধীরা কোনো প্রোডাক্টের পরিষেবা কেন্দ্রের একেবারে অনুরূপ একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে। এরপর নানা ছলাকলায় সেই ওয়েবপেজটিকে গুগল র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে নিয়ে যায়। অর্থাৎ, ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিষেবা কেন্দ্র সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে সার্চ করলে হ্যাকারদের তৈরি করা ওয়েবসাইটটিই সবার প্রথমে প্রদর্শিত হয়। ফলে বেশিরভাগ মানুষই সাইটটির সত্যতা যাচাই না করে সেটিকে ওপেন করেন, এবং সেটিতে থাকা মোবাইল নম্বরে কল করে বসেন। তারপর সেখান থেকেই শুরু হয় আসল খেলা!

জাল ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে ভুয়ো ফোন নম্বর দিয়ে ইউজারদেরকে প্রতারিত করে স্ক্যামাররা

হ্যাকার কর্তৃক প্রদত্ত ভুয়ো নম্বরটিতে কল করা মাত্রই সাইবার অপরাধীরা সেই কোম্পানির কর্মচারীর রূপ ধারণ করে ইউজারদের সাথে কথা বলতে শুরু করে। তারপর নানা ছলাকলায় ব্যবহারকারীদের সমস্যা সমাধানের নাম করে তাদের কাছ থেকে নানান ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে নেয়, যার মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলসও শামিল থাকে। আর ইউজাররাও অগাধ বিশ্বাসে সার্ভিস সেন্টারের কোনো কর্মীর সঙ্গে কথা বলছেন ভেবে তাদেরকে সমস্ত গোপন তথ্য দিয়ে বসেন। আর ব্যবহারকারীদের ব্যাংক ডিটেলস সহ নানাবিধ পার্সোনাল ডেটা স্ক্যামারদের হাতে চলে গেলে তার ফলটা যে কী হয়, সে সম্পর্কে এখন নিশ্চয়ই আর আলাদা করে কাউকে কিছু বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

অনেক সময় ইউজারদেরকে ম্যালিশিয়াস অ্যাপ ডাউনলোড করার নির্দেশ দেয় হ্যাকাররা

আবার অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা সমাধানের নাম করে ব্যবহারকারীদেরকে নির্বাচিত কিছু অ্যাপ ডাউনলোড করার নির্দেশ দেয় হ্যাকাররা। কিন্তু এখানে গোলমালটা হল, জালিয়াতদের নির্দেশিত ভুয়ো অ্যাপে ক্ষতিকারক ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার মজুত থাকে। ফলে ইউজাররা সেই অ্যাপটি নিজেদের ডিভাইসে ইন্সটল করে ফেলা মাত্রই তাতে বিদ্যমান ম্যালওয়্যারের সৌজন্যে ব্যবহারকারীদের নেটব্যাংকিং সহ আরও নানাবিধ গোপন তথ্যের অ্যাক্সেস হ্যাকারদের হাতে চলে যায়, যার ফলে ব্যবহারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এক নিমেষে গড়ের মাঠ করে দিতে জালিয়াতদের বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয় না।

হ্যাকারদের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে চোখকান খোলা রাখা একান্ত আবশ্যক

বর্তমান ডিজিটাল যুগে Google-এ কোনো কাস্টমার কেয়ার নম্বর বা সার্ভিস সেন্টারের ফোন নম্বর সার্চ করার সময় অবশ্যই যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, নইলে কিন্তু সাইবার জালিয়াতির ফাঁদে পড়ে ইউজারদেরকে বড়োসড়ো লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে। যেহেতু অনলাইনে কাস্টমার কেয়ার বা সার্ভিস সেন্টারের ফোন নম্বর সহজেই এডিট করা যায়, সেই কারণে বেশ অনেক ক্ষেত্রেই সহজসরল সাধারণ মানুষকে চূড়ান্ত প্রতারণার শিকার হতে হয়। ফলে চলতি সময়ে হ্যাকারদের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে ইউজারদের সর্বদা কোনো কোম্পানির অথেন্টিক অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে কাস্টমার কেয়ার বা সার্ভিস সেন্টার নম্বর নেওয়া উচিত।

RELATED ARTICLES

Most Popular