কেউ আপনার ফোন ট্যাপ বা WhatsApp ট্র্যাক করছে? জেনে নিন সরকার প্রকাশিত নয়া নির্দেশিকার খুঁটিনাটি

Avatar

Published on:

দেওয়ালে কান রেখে অন্যের ঘরে আড়ি পাতার কথা আমরা সকলেই শুনেছি। বাস্তব জীবনের পাশাপাশি সিনেমাতেও হামেশাই এরকম দৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু বর্তমানে লোকের ঘরে আড়ি পাততে অর্থাৎ লোকের ওপর নজর রাখার জন্য আর দেওয়ালে কান রাখতে হচ্ছে না, বরং এসব কাজ অত্যন্ত স্মার্ট উপায়ে মানে ডিজিটালভাবে হচ্ছে। অসংখ্য মানুষের ফোন আজকাল নানাভাবে, নানা কারণে ট্যাপ করা হচ্ছে। আর এখনকার দিনে স্মার্টফোন মানেই তাতে আর কিছু থাক বা না থাক, WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ) তো থাকবেই, যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথা ব্যক্তিগত অনেক তথ্য মজুত থাকে। ফলে ফোন ট্যাপ করে হোয়াটসঅ্যাপ ট্র্যাক করার ঘটনাও আজকাল বহুল পরিমাণে ঘটে চলেছে।

আসলে স্মার্টফোনের যুগে ফোন ট্যাপ করাটা কোনো ব্যাপারই নয়! কারণ এর জন্য আপনার মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক হ্যাক করার প্রয়োজন হয় না। হ্যাকাররা শুধুমাত্র আপনার ফোনের ভালনারেবিলিটি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করে সহজেই আপনার ফোনকে ট্যাপিং ডিভাইসে পরিণত করে ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে বর্তমান ডিজিটাল যুগে কীভাবে বুঝবেন যে আপনার ফোনে কেউ আড়ি পাতছে কী না?

এমনিতে আপনার অনলাইন ক্রিয়াকলাপের উপর কার্যত কারা নজর রাখছে, এ বিষয়ে তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন যা নিরাপত্তার দিক থেকেও অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে প্রমাণিত হতে পারে। এমত পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সরকার সংসদে এক বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দিল যে, আপনার ডিভাইসে সঞ্চিত তথ্য কে কে অ্যাক্সেস করতে পারবে। এই বিবৃতির ফলে ইউজারদের তথ্য ভুল হাতে গিয়ে পড়ার ঘটনা অনেকটা হলেও রোখা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে। আসুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিই…

সরকারের জারি করা বিবৃতি

ফোন, কম্পিউটার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ট্র্যাক করার বিষয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে, কেবলমাত্র অনুমোদিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির ডিজিটাল ইনফর্মেশন অ্যাক্সেস করার অধিকার রয়েছে। প্রয়োজনে এই সংস্থাগুলি দেশের যে-কোনো ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ট্র্যাক করতে পারে। সেইসাথে টেলিফোন এবং কম্পিউটারের মতো অন্য কোনো বৈদ্যুতিন ডিভাইস ট্র্যাক করার অধিকারও এই সংস্থাগুলিকে দেওয়া হয়েছে। সংস্থাগুলি যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ট্রান্সমিশন ইনফর্মেশন অ্যাক্সেস করতে সক্ষম।

এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থার হোয়াটসঅ্যাপ কনভারসেশনের মতো কোনো ডিজিটাল তথ্য ডিক্রিপ্ট করার অধিকার রয়েছে কি না। জবাবে মন্ত্রী বলেছেন যে, শুধুমাত্র অনুমোদিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে যেকোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ইনফর্মেশন ইন্টারসেপ্ট করা, মনিটর ও ডিক্রিপ্ট করা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০২০-এর ধারা ৬৯-এর আইনি বিধান অনুযায়ী, যেকোনো কম্পিউটারে জেনারেটেড, ট্রান্সমিটেড, রিসিভড, এবং স্টোর করা ইনফর্মেশন অ্যাক্সেস করা যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, কিছুদিন আগেই ইজরায়েলি সফটওয়্যার পেগাসাস ভারতীয়দের তথ্য ট্র্যাক করায় তুমুল হইচই পড়ে যায়।সেক্ষেত্রে সরকারের তরফে জারি করা এই নতুন নির্দেশিকা ইউজারদের কল্যাণে ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে বলেই আশা করা যায়।

সঙ্গে থাকুন ➥