চাইনিজ স্মার্টফোন আপনার জন্য কী আদৌ নিরাপদ? দেশবাসীর স্বার্থে এবার তা পরীক্ষা করবে কেন্দ্র

Published on:

ভারত-চীন দ্বন্দ্বযুদ্ধের কথা আমাদের কারোরই অজানা নয়। গত বছর জুনে সীমান্তে উত্তেজনার পর থেকেই চীন সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়েই সন্দিহান বা প্রতিবাদমূলক মনোভাব প্রকাশ করে চলেছে কেন্দ্র। নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে গতবছর ২২০ টি চীনা অ্যাপও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এবার এই উদ্বেগের বশবর্তী হয়েই চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলিকে টার্গেট করেছে ভারত সরকার। The Morning Context-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলিতে ব্যবহৃত ডেটা এবং উপাদানগুলির বিশদ জানতে চেয়ে তাদের উদ্দেশ্যে নোটিশ জারি করেছে মোদী সরকার।

Counterpoint Research এর তথ্য অনুযায়ী, এই চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলির তালিকায় রয়েছে Vivo, Oppo, Xiaomi এবং OnePlus-এর নাম। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে ভারতীয় স্মার্টফোন মার্কেটের ৫০%-এরও বেশি এই কোম্পানিগুলির দখলে রয়েছে। তবে এই চীনা ব্র্যান্ডগুলির বিক্রি করা স্মার্টফোন ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ কি না তা অনুসন্ধান করতে চায় ভারত সরকার, আর সেই সুবাদেই সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। দেশের মানুষের সুরক্ষার সাথে কোনোরকম আপোষ করতে যে একেবারেই নারাজ কেন্দ্র, তা এখান থেকেই স্পষ্ট।

গত বছর ভারত একাধিক চীনা অ্যাপ্লিকেশন ব্যান করার পর থেকেই সেদেশের স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি বেশ আক্রমণাত্মকভাবে ভারতীয় মার্কেটে ভাগ বসায়, এবং দেশে স্থানীয় উৎপাদন এবং বিনিয়োগের পরিমাণও বৃদ্ধি করে। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলি সরকারকে যে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার মধ্যে বেশ কিছু যথাযথভাবে পূরণ না হওয়ায় এই নতুন নোটিশকে এক ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এই সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে Oppo, Vivo এবং এর সাব-ব্র্যান্ড iQOO। তবে Xiaomi-কে কেন এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়, কারণ সংস্থাটি ভারত সরকারকে দেওয়া যাবতীয় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পালন করেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে ইকোনমিক টাইমস (ET)-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ চীনা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বৃহত্তর অভিযানের অংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ET-এর মতে, উল্লিখিত নিয়মগুলির সুবাদে Huawei বা ZTE-এর মতো চীনা ব্র্যান্ডগুলিও সরকারের নজরে থাকবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, শুধু হার্ডওয়্যার নয়, সফ্টওয়্যারের বিশদ বিবরণ, বিশেষ করে চীনা স্মার্টফোনগুলিতে প্রি-ইনস্টল করা অ্যাপগুলিও তদন্তের আওতায় আসতে পারে।

তবে একটি সূত্র ET-কে জানিয়েছে যে, এইভাবে সরকার কোম্পানিগুলিকে ভয় দেখাতে চায় না, বরং কেবলমাত্র নিজের দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায়। যদিও ভারত সরকার কর্তৃক জারি করা এই নোটিশের জন্য চীনা ব্র্যান্ডগুলি বেশ ভালোরকমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে পরবর্তীকালে তারা কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥