স্কুলের পাঠ্যসূচিতে যুক্ত হোক অনলাইনে নিরাপদ থাকার উপায়, মনে করছেন ৮৯ শতাংশ অভিভাবক

Avatar

Published on:

দেশের উত্তরোত্তর সাইবার আক্রমণ বৃদ্ধির ঘটনা ইতিমধ্যেই সব স্তরের মানুষের মধ্যেই গভীর চিন্তার ছাপ ফেলেছে এবং এই আক্রমণের হাত থেকে সাধারণ জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে নামজাদা সংস্থাগুলি অহরহ পরিশ্রম করে চলেছে এবং হ্যাকারদের সৃষ্ট নিত্যনতুন উপায়ে জনগণের প্রতারিত হওয়া আটকাতে সময়ে সময়ে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা জারি করছে। কিন্তু এ তো গেল বড়োদের কথা, কিন্তু সাম্প্রতিককালে হ্যাকিংয়ের ঘটনা এত বিপুল পরিমাণে বেড়েছে যে শিশুদের তথা স্কুলপড়ুয়াদের এ সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক। পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাসের প্রচলন হওয়ায় এখন সবার হাতেই মোবাইল বা ল্যাপটপ এবং সবাই প্রচুর পরিমাণে ইন্টারনেটের ব্যবহার করছে। সুতরাং, বাচ্চা থেকে বুড়ো যে কেউ, যে কোনো সময়ে হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারেন, অতএব সকলেরই সতর্ক থাকা উচিত।

তাই হ্যাকিং সম্পর্কে বাচ্চা তথা স্কুলপড়ুয়াদের সচেতন করতে অনেকেই এখন মনে করছেন যে স্কুলে আবশ্যিকভাবে শিশুদের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে শিক্ষিত করা উচিত। সদ্য প্রকাশিত McAfee-র এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই মহামারী অনেক স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যম হিসেবে অনলাইন বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য করেছে। ভারতের ৮৯ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, স্কুলগুলির উচিত শিশুদের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে শিক্ষিত ও সচেতন করা। এর মধ্যে ৬২ শতাংশ বিশ্বাস করে যে, ডিজিটাল ওয়েলনেস এবং প্রোটেকশনের নিজস্ব পৃথক পাঠ্যক্রম থাকা উচিত যা গ্রেড স্কুলে শেখানো হয়, এবং ২৭ শতাংশ মনে করে যে এতে IT-র মতো টেকনোলজি সাবজেক্টে একীভূত করা উচিত। এছাড়াও, ভারতের ৮১ শতাংশ মানুষ বলেছেন যে, গত বছর থেকে তাদের পরিবারের কমপক্ষে একজন সদস্য ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পূর্ণ-সময়ের বা আংশিক সময়ের জন্য অনলাইন লার্নিং শুরু করেছেন। এর মধ্যে ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ৫-১২ বছর বয়সী এবং ৯ শতাংশের বয়স ৫ বছরেরও কম।

McAfee কনজিউমারের (Consumer at McAfee) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জুডিথ বিটারলি (Judith Bitterli) এক বিবৃতিতে বলেছেন, “শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও এখন স্বাভাবিক শিক্ষাদানের পদ্ধতিকে একপাশে সরিয়ে রেখে ভার্চুয়ালি অনলাইন ক্লাসে অভ্যস্ত হচ্ছেন। তাই ফিশিং, সাইবারবুলিং এবং সামগ্রিক সাইবার নিরাপত্তা স্বাস্থ্যবিধি রপ্ত করার মতো মৌলিক বিষয়গুলি সম্পর্কে তাদেরও শিক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তা একান্ত অপরিহার্য। যেহেতু প্রযুক্তি এখন প্রতিটি মানুষের তথা শিশুর জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই সাইবার সিকিউরিটি অবশ্যই বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের অংশ হতে হবে, এবং এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া অবশ্যই উচিত। সাইবার সিকিউরিটিকে আমাদের পঠনপাঠনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”

সাইবার হ্যাকিংয়ের হাত থেকে কীভাবে বাঁচবেন

এর পাশাপাশি সাইবার হ্যাকিংয়ের হাত থেকে নিরাপদে থাকতে জনগণকে কী কী করতে হবে সে সম্পর্কেও কিছু পরামর্শ দিয়েছে McAfee। তাদের নির্দেশিকা অনুসারে, রিপ্লাই করার আগে যে কোনো ইমেল/টেক্সট অবশ্যই যাচাই করতে হবে; সমস্ত সামাজিক প্রোফাইলে আঁটোসাঁটো সিকিউরিটি সেটিংস রাখার পাশাপাশি নিরাপদ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে এনগেজ থাকতে হবে। এছাড়া, শিশুরা যখন বাড়ি থেকে অনলাইন লার্নিং পরিষেবাগুলি অ্যাক্সেস করছে তখন হ্যাকারদের পাসওয়ার্ড বা ডেটার মতো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা বন্ধ করার জন্য ব্যাংক-লেভেল এনক্রিপশনের সাথে ইন্টারনেট কানেকশনের গোপনীয়তা রক্ষা করতে একটি VPN ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে McAfee।

এছাড়া, শিশুদের অবশ্যই ভুয়ো খবর সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি কীভাবে একটি ফিশিং স্ক্যাম চিহ্নিত করতে হয়, জোরালো ও জটিল পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হয়, সেসব বিষয়েও ওয়াকিবহাল হতে হবে। আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, এই গবেষণার জন্য McAfee, MSI International-কে এপ্রিল ২০২১ সালে ভারতে ১৮-৭৫ বছরের মধ্যে ১,০০০ এরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের উপর একটি সার্ভে করার দায়িত্ব দিয়েছিল।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥