Robot human Skin: বিজ্ঞানের নয়া সৃষ্টি, রোবটের আঙুলে এবার মানুষের ত্বক

Published on:

হুবহু মানুষের মতো রোবট (Robot) প্রস্তুতির ক্ষেত্রে নয়া দিশা দেখাতে পারে জাপানের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণা! এক্ষেত্রে যে বিজ্ঞানী দলের কথা আমরা বলছি তারা ইতিমধ্যেই রোবটের আঙুলে প্রায় সাধারণ মানবত্বক সৃষ্টিতে সফল হয়েছেন। আজ্ঞে হ্যাঁ, বিস্মিত হলেও সম্প্রতি জনসমক্ষে আসা এই খবরে কোনও অসত্য লুকিয়ে নেই। গবেষণাকারী জাপানের বিজ্ঞানীরা নিজেদের অনুসন্ধান সম্পর্কিত পেপার এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক জার্নালে পেশ করেছেন। সেখানেও তাদের স্পষ্ট উল্লেখ যে পরীক্ষাগারে তারা একদম অবিকল মানবত্বক তৈরীর কাজে সফলতা লাভ করেছেন। শুধু এটুকুই নয়, রোবটের আঙুলে জুড়তে সমর্থ এহেন ত্বক জলরোধী এবং আপনা থেকেই ক্ষত নিরাময়ে সক্ষম বলেও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

রোবটের আঙুলে মানুষের ত্বক – এও কি সম্ভব?

অবগতির জন্য জানিয়ে রাখি, এই মুহূর্তে রোবট প্রস্তুতির সময় সাধারণত সিলিকন নির্মিত ত্বক ব্যবহার করা হয়। মানবত্বকের সাথে এই সিলিকন নির্মিত ত্বকের অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে মানুষের ত্বকের যে নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা এ ধরনের ত্বকে দেখা যায়না।

তবে মানুষের ত্বকের সব বিশেষত্বগুলি না পেলেও জাপানী বিজ্ঞানীদের তৈরী ত্বকে ঈষৎ স্বেদাক্ত ভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গবেষণাকারীদের অন্যতম প্রধান সোজি তাকেউচি দাবি করেছেন। তাছাড়া তিনি একথাও উল্লেখ করেন যে বৈদ্যুতিন মোটর দ্বারা চালিত হলেও পরীক্ষাগারে পুরোপুরি কৃত্রিম উপায়ে প্রস্তুত মানবত্বক বিশিষ্ট এই রোবটের আঙুলের সাথে সাধারণ মানুষের চামড়ার পার্থক্য করা মুশকিল হবে।

যেভাবে রোবটের আঙুলে জুড়লো মানুষের কোষ

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক জার্নালে পেশ করা পত্রে তাকেউচি জানান, রোবটের আঙুলে স্কিন-সেল (Human skin cells) আরোপ করার ক্ষেত্রে তারা টিস্যু মোল্ডিং প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন। এভাবে তারা প্রথমেই রোবটের আঙুলে ত্বকীয়-টিস্যুর আস্তরণ গড়ে তুলতে সফল হয়েছেন। এরপর সেটি মানবত্বকের আচ্ছাদনে ঢেকে ফেলার জন্য রোবটিক আঙুলটিকে কোলাজেন এবং হিউম্যান ডার্মাল ফাইব্রোব্লাস্টের মিশ্রণপূর্ণ একটি সিলিন্ডারে প্রবেশ করানো হয়েছে। এই দুই প্রধান উপাদানের দ্বারাই মানুষের ত্বকের কানেকটিভ বা সংযোগ রক্ষাকারী টিস্যুগুলি গড়ে ওঠে।

তাকেউচির বক্তব্য, শেষোক্ত মিশ্রণের অতি স্বাভাবিক কুঞ্চনধর্মের কারণে সেটি এরপর খুব সহজে রোবটের আঙুলে জমাট বাঁধে। এর ফলে পরবর্তী পর্যায়ে তার উপর ত্বকের কোষ আরোপ করার পথ সুগম হয়, যা এই রোবটের আঙুলে প্রায় মানবত্বকের মতো আর্দ্রতা রক্ষাকারী বিশেষত্ব নিয়ে আসতে সফল হয়েছে।

তবে দেখা গেছে এমনিতে কৃত্রিম এই ত্বকে রোবটের কার্য পরিচালনার পক্ষে উপযোগী ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপকতা থাকলেও সেটি মোটেও মানবত্বকের মতো শক্তিশালী নয়। এমনকি তাতে আপনা থেকে ক্ষত সারাবার সামর্থ্য থাকলেও তা মানুষের ত্বক অপেক্ষা অনেক দুর্বল। নিয়মিতভাবে পুষ্টি না যোগালে এহেন ত্বকের জন্য টিকে থাকা বেশ মুশকিল। তবে এই ধরনের দুর্বলতাকে সরিয়ে আগামীদিনে তারা সম্পূর্ণ মানুষের মতো স্বাভাবিক ত্বকের চাদরে ঢাকা রোবট প্রস্তুতিতে সফল হবেন বলে তাকেউচি দাবি করেছেন।

সঙ্গে থাকুন ➥