YouTube থেকে উপার্জন করেন? Google কে দিতে হবে ট্যাক্স

Published on:

গুগলের (Google) ঘোষণায় ইউটিউবার মহলে আশঙ্কার কালো মেঘ। ইউটিউবের (Youtube) মালিকানাধীন সংস্থাটি সম্প্রতি তাদের একটি ই-মেলে জানিয়েছে যে এবার থেকে ইউটিউব ক্রিয়েটারদের নিজস্ব উপার্জনের একাংশ কর হিসেবে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। অর্থাৎ ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে আপনি চারটি পয়সা আয় করবেন, সেখানেও আর স্বস্তি নেই! তবে কিছুটা হলেও সান্ত্বনার কথা হল এই যে শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপার্জিত টাকার কিয়ৎ পরিমাণ এক্ষেত্রে কর হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। এজন্য অবিলম্বে ইউটিউবারদের ট্যাক্স বা কর সংক্রান্ত তথ্য নিজেদের Adsense অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় গুগল ইউটিউবারের মোট আয়ের ২৪% অর্থই নির্বিচারে কেটে নিতে পারে যা ইতিমধ্যেই অজস্র কনটেন্ট প্রস্তুতকারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। আসুন বিস্তারিতভাবে গুগল এর এই নতুন পলিসি সম্পর্কে জেনে নিই।

আগেই বলেছি যে মোট আয় নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপার্জিত অর্থের একটি অংশকেই কর হিসেবে গুগলের হাতে তুলে দিতে হবে। এখন ধরে নেওয়া যাক কনটেন্ট তৈরী করে Youtube থেকে প্রতি মাসে আপনার সামগ্রিক আয় ১০০০ মার্কিন ডলার। আবার এর মধ্যে ১০০ মার্কিন ডলার অ্যাড ভিউ, ইউটিউব প্রিমিয়াম, সুপার চ্যাট, সুপার স্টিকার, চ্যানেল মেম্বারশিপ প্রভৃতি বাবদ আমেরিকার দর্শকদের থেকে প্রাপ্ত। এখন গুগলের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী ইউটিউবারকে এই ১০০ মার্কিন ডলারের কিয়দংশ কর হিসেবে দাখিল করতে হবে। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাদে অন্যান্য দেশের ভিউয়ার্সদের থেকে উপার্জিত অর্থের জন্য ইউটিউবারকে কোন ট্যাক্স প্রদান করতে হবেনা। একই সাথে গুগল এটাও জানিয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনটেন্ট প্রস্তুতকারকেরা এক্ষেত্রে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, কেননা কোন অবস্থাতেই তাদের কোনরকম কর প্রদানের ঝঞ্ঝাট নেই।

কর প্রদানের জন্য মার্কিন বহির্মুলুকের ইউটিউবারদের ৩১মে, ২০২১ -এর মধ্যে তাদের অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট আপডেট করতে বলা হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাস থেকেই গুগল এই কর গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্যাক্স সংক্রান্ত তথ্য অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে জমা না করলে সেক্ষেত্রে গুগল ইউটিউবারের মোট মাসিক আয়ের ২৪% অর্থ কেটে নিতে বাধ্য হবে!

তাহলে প্রশ্নটা হলো, মার্কিন মুলুকের বাইরের কনটেন্ট প্রস্তুতকারকদের ঠিক কতটা অর্থ এবার থেকে গুগলের খাতায় জমা হতে পারে। প্রথমেই সবথেকে খারাপ পরিণতির কথা শুনিয়ে অর্থাৎ ট্যাক্স সংক্রান্ত তথ্য জমা না করলে কি হতে পারে, তা দিয়ে শুরু করা যাক। এক্ষেত্রে ইউটিউবারের মাসিক আয় যদি ১০০০ মার্কিন ডলার হয়, তবে তার ২৪% অর্থ (হিসেব অনুযায়ী ২৪০ মার্কিন ডলার) গুগল বিকারহীনভাবেই কেটে নেবে। কিন্তু, ইউটিউবার যথাসময়ে ট্যাক্সের যাবতীয় তথ্য আপডেট করে থাকলে সেক্ষেত্রে অনেক কম অর্থের অপচয় হবে। উল্লেখ্য, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর সংক্রান্ত চুক্তি অনুযায়ী ধার্য করের পরিমাণ আয়ের শতকরা ১৫ ভাগ।

সুতরাং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজন ভারতীয় ইউটিউবার মাসে ১০০ ডলার আয় করে থাকেন, তবে তার ১৫% অর্থাৎ মাত্র ১৫ ডলার তাকে গুগলের খাতায় জমা করতে হবে। তবে দুই দেশের কর লেনেদেনের চুক্তির অন্তর্ভুক্ত না হলে অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাসিক আয়ের ৩০ শতাংশ ট্যাক্স হিসেবে বাদ যাবে। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে ১০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে থেকে ৩০ ডলার ইউটিউবারের অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে যাবে।

এখন আমাদের এই প্রতিবেদন পড়ার পরেও যাদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, কর সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এবং নথির জন্য আপনারা গুগলের সাপোর্ট পেজে সন্ধান করতে পারেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥