সময়ের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা সকলেই ক্রমাগত আধুনিক হচ্ছি। আর এই আধুনিকীকরণের সাথে ডিজিটাল ভারতের শ্লোগান যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে! তাই আমাদের বেশিরভাগ পরিষেবাই এখন অনলাইন নির্ভর, ব্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা নয়। কিন্তু সম্প্রতি নেট ব্যাঙ্কিং ও অনলাইন পেমেন্টের সময় অধিকাংশ মানুষ একটা বড় অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন যেটা মূলত ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড অর্থাৎ ওটিপি(OTP) পরিষেবাকে কেন্দ্র করে। সকলেই জানেন যে এই ওটিপি(OTP) হচ্ছে একটি ইউনিভার্সাল মেসেজিং কোড, ভারতে বেশিরভাগ অনলাইন ব্যাঙ্কিং ও পেমেন্টের ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত জরুরী। ওটিপি ভেরিফিকেশনের মধ্যে দিয়েই সকলে তাদের অর্থ আদান-প্রদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারেন। কিন্তু উপযুক্ত সময়ে নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে যদি ওটিপি না আসে তবে সম্পূর্ণ লেনদেন আটকে যেতে পারে! অসংখ্য ভারতীয় এই মুহূর্তে ঠিক এমন সমস্যারই সম্মুখীন হচ্ছেন অর্থাৎ ট্রানজাকশনের সময় তারা মেসেজের মাধ্যমে ওটিপি পাচ্ছেন না। ফলে পড়তে হচ্ছে বিপদে। এর কারণ কি? দায় কার? আসুন বিস্তারিত ভাবে জেনে নিই।
প্রথমেই বলে রাখি ফোনে ওটিপি না পেয়ে যারা নিজেদের টেলিকম অপারেটরদের দুষছেন, তাদের আক্রোশ বৃথা। কেননা জিও হোক বা এয়ারটেল, এই সমস্যার ক্ষেত্রে তারা দায়ী নয়! তাহলে সমস্যাটা ঠিক কোথায়? এক্ষেত্রে মূল অপরাধী নয়া Distributed Ledger Technology বা DLT এসএমএস ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা। আজ্ঞে হ্যাঁ, ব্লকচেন (BlockChain) নির্ভর এই প্রযুক্তি প্রতারকদের ভুয়ো মেসেজ শনাক্তকরণের জন্য তৈরী করা হয়েছে। অনলাইনে অর্থ আদান-প্রদানের সময় জালিয়াতির বাড়বাড়ন্তের কারণেই ডিএলটি (DLT) ব্যবস্থাটির আগমন। এটি গুচ্ছ এসএমএস যাচাইয়ের একটি নতুন ফ্রেমওয়ার্ক - লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য পেমেন্ট মাধ্যমগুলিকে এর শরণাপন্ন হতেই হবে। এজন্য তাদের নিজস্ব টেলিমার্কেটিং আইডি রেজিস্টার করতে হবে যার ফলে কমে যাবে অনলাইন প্রতারণা সংখ্যা।
ডিএলটি(DLT) যাচাই ব্যবস্থার শর্তগুলি মেনে নিয়ে সমস্ত ব্যাঙ্ক এবং পেমেন্ট মাধ্যম যাতে টেলিকম অপারেটরদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করে, দেওয়া হয়েছে তেমন নির্দেশ। এই নির্দেশ অনুসরণ করে টেলিকম সংস্থাগুলিকেও আপাতত সমস্ত বাল্ক মেসেজ স্ক্রিনিং করতে হচ্ছে। ঠিক এই কারণেই অধিকাংশ মানুষ তাদের মোবাইলে ওটিপি (OTP) পাচ্ছেন না। গত কয়েকদিন ধরেই ব্লকচেন ভিত্তিক এই ডিএলটি ভেরিফিকেশন আপডেট রোল-আউট শুরু হয়েছে, যার ফলে অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ের সময় এসএমএসের দ্বারা ওটিপি প্রেরণ আটকে যাচ্ছে। সমস্ত ব্যাঙ্ক গ্রাহকেরাই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
সুতরাং বিষয়টি নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। কেননা আর কিছুদিনের মধ্যেই এই সংক্রান্ত সব সমস্যা মিটে যাবে। তবু একান্ত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সকলে সকলে ফোন কলিংয়ের সাহায্যে ওটিপি ভেরিফিকেশন পদ্ধতির দ্বারস্থ হতে পারেন। যদিও হাই ট্রাফিকের জন্য এখানেও কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে ওটিপি(OTP) পরিষেবা আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে দেরী হবে না বলেই আমরা মনে করি।