বর্তমান সময়ে যতোই WhatsApp, Facebook ব্যবহার করা হোক না কেন, স্মার্টফোনের মেসেজ ইনবক্স প্রচুর এসএমএস মেসেজে ভরে যায়। বেশিরভাগ সময়েই বিভিন্ন কোম্পানির (এমনকি স্প্যামারদেরও) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, কোনো স্কিমে বিনিয়োগ করা, সম্পত্তি কেনা বা সস্তায় ঋণ নেওয়ার মতো নানা টেক্সট মেসেজের জ্বালায় আমার-আপনার মতো অনেকেই বিরক্ত হই। তবে খুব শীঘ্রই এই ঝামেলা থেকে মুক্তি মিলতে চলেছে – বছরের শেষদিকে এসে সরকার এমন একটি নিয়ম চালু করছে যার কারণে কোনো বিরক্তিকর কল বা এসএমএস ফোনে আসবেনা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। সম্প্রতি মোবাইল ইউজারদের সুবিধার্থে এবং নিরাপত্তার প্রদানের উদ্দেশ্যে TRAI একটি নতুন সিস্টেম আনার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। এই সিস্টেমের আওতায় কোনো কোম্পানি অনুমতি ছাড়া কাস্টমারদের বাণিজ্যিক কল বা এসএমএস পাঠাতে পারবেনা। আসুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিই।
বাণিজ্যিক কল, মেসেজ এড়াতে DCA সিস্টেম আনছে TRAI
আজ বুধবার অর্থাৎ ৮ই নভেম্বর, ট্রাই মানে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির জন্য নতুন নির্দেশ জারি করেছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলিকে (ব্যাঙ্ক, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, ট্রেডিং কোম্পানি, বাণিজ্যিক সংস্থা, রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ইত্যাদি) বিজনেস মেসেজ পাঠানোর আগে ইউজারদের সম্মতি অবশ্যই নিতে হবে, যাচাই করতে হবে ইউজারের কন্টেন্টও। এই সিস্টেমের নাম দেওয়া হয়েছে ডিজিটাল কন্টেন্ট অ্যাকুইজিশন (DCA)।
TRAI-এর ঘোষণা অনুযায়ী, টেলিকম কমার্শিয়াল কমিউনিকেশন সাবস্ক্রাইবার প্রেফারেন্স রেগুলেশনস, ২০১৮ (TCCCPR-2018)-এর অধীনে প্রিন্সিপাল এন্টিটি (PEs) বা সেন্ডার হিসাবে নিবন্ধিত সংস্থাগুলিকে ১২৭ কোড দিয়ে শুরু হওয়া একটি মেসেজের মাধ্যমে গ্রাহক বা মোবাইল ব্যবহারকারীদের কাছে সম্মতি নিতে হবে। এবার অনেকেই বলবেন, মোবাইল কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ (DND) ফিচার উপলব্ধ আছে, তাহলে আর নতুন কী?
সেক্ষেত্রে বলি, কোম্পানিগুলিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে এই মেসেজ বিষয়ক সম্মতি নিতে হবে। আর এর মধ্যে ডিসিএ মেসেজে যা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা হল –
১. মেসেজের উদ্দেশ্য, চুক্তির সুবিধা এবং ব্র্যান্ডের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
২. সম্মতি চাওয়া মেসেজগুলিতে শুধুমাত্র বৈধ URL/APK/OTT লিঙ্ক/কল-ব্যাক নম্বর দিতে হবে।
৩. গ্রাহকদের কনফার্মেশন মেসেজে ডিসিএ সম্মতি প্রত্যাহার সংক্রান্ত তথ্যও থাকবে।
৪. অ্যাক্সেস প্রোভাইডারদের একটি এসএমএস/অনলাইন বেনিফিটও ডেভেলপ করতে হবে যাতে গ্রাহকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা নিবন্ধিত থাকবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই মুহুর্তে নির্দেশটি শুধুমাত্র ফোন কল এবং এসএমএসের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাকি অন্য প্ল্যাটফর্ম যেমন হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরিত মেসেজগুলিতেও কার্যকরী, তা স্পষ্ট নয়।