Cyber Crime: সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলা সেজে ডাক্তার, শিক্ষকদের সাথে জালিয়াতি! গ্রেফতার ২৪ বছরের হাকিমুদ্দিন
সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলা সেজে অন্যদের প্রতারণার অভিযোগে হাকিমুদ্দিন নামের এক ২৪ বছর বয়সী যুবককে রাজস্থান থেকে গ্রেপ্তার করলো দিল্লি পুলিশের সাইবার শাখা। এই যুবক মহিলা পরিচয়ে ধনী ব্যক্তিদের সেক্স চ্যাটে ডেকে এনে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো বলে জানা গিয়েছে। শুধুমাত্র এটুকুই নয়, বরং রীতিমতো পরিকল্পনামাফিক সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন করে সে তাদের ছবি বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত জায়গায় (ফটো/ভিডিও) ব্যবহার করতো। এরপর শুরু হতো ব্ল্যাকমেলিং পর্ব। বিকৃত ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাকিমুদ্দিন আক্রান্তদের কাছে মোটা টাকা আদায়ের ব্যবসা ফেঁদে বসে। অনেকদিন ধরেই বিষয়টি সম্পর্কে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ছিল। এবার মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ার ফলে এই সমস্ত অভিযোগের যথেষ্ট সুরাহা হবে বলে নাগরিক মহল মনে করছে।
যৌনফাঁদ পেতে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ধনী ব্যক্তিদের প্রতারণার কাজে হাকিমুদ্দিন একেবারে সঙ্গীহীন ছিলো না। বরং একাজে সে বেশ কিছু অল্পবয়সী সঙ্গী জুটিয়েছিল। বয়স কম হলেও হাকিমুদ্দিনের কারবারে তার সহকারীদের ভূমিকা ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের নেতা পুলিশের জালে ধরা দেওয়ার ফলে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে তারাও সরে পড়েছে।
পুলিশের দাবী, একাধিক ব্যাক্তিকে ভয় দেখিয়ে ও বিপাকে ফেলে শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসে হাকিমুদ্দিন তাদের কাছ থেকে ১.৯ লক্ষ টাকা আদায় করে! এক্ষেত্রে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে সে রিটায়ারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার, ডাক্তার এবং শিক্ষকদের বেছে নেয়। উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ধনী ব্যক্তিদের নির্বাচনের দায়িত্ব হাকিমুদ্দিন তার সহযোগীদের উপরে অর্পণ করে। এজন্য তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ফেক প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করতো বলে জানা গিয়েছে।
অবশেষে গত ২১শে সেপ্টেম্বর দিল্লীর একটি স্কুলের রিটায়ারপ্রাপ্ত সহ-অধ্যক্ষ পুলিশের কাছে সাইবার জালিয়াতির ব্যাপারে অভিযোগ জানান। পুলিশের কাছে তিনি স্বীকার করেন যে প্রথমে তার কাছে একটি ভিডিও কল আসে যা গ্রহণ করতেই অপর প্রান্তে পর্নোগ্রাফিক কনটেন্ট দেখাতে থাকে। এরপর নিজের একটি বিকৃত ভিডিও তার কাছে পৌঁছয় যা ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে প্রতারণাকারী তার কাছ থেকে ১.৯৬ লক্ষ টাকা আদায় করে বলে অভিযোগকারী জানান।
দিল্লীর স্কুলশিক্ষক অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ ব্যাপারটি সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে প্রথমে তারা ভিডিও কলের জন্য ব্যবহৃত প্রতারণাকারীর ফোন নম্বর ট্র্যাক করেন। দেখা যায় আসাম থেকে ইস্যু করা হলেও নম্বরটি রাজস্থানের ভরতপুর থেকে ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর অর্থ লেনদেনের সূত্র ধরে তারা অপরাধীদের ব্যাঙ্ক ট্রানজাকশন খতিয়ে দেখে। তাছাড়া অপরাধীদের একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের উপরেও কড়া নজর রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ হাকিমুদ্দিন ও তার সহযোগীদের চিহ্নিত করে। অবশ্য সুদূর রাজস্থান থেকে হাকিমুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও, তার সহযোগীরা এখনো পলাতক।