BSNL এর খারাপ অবস্থার জন্য দায়ী কে? জানালো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
একটা সময়ে জমিয়ে ব্যবসা করার পাশাপাশি চুটিয়ে মুনাফা অর্জন করলেও বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলির সৌজন্যে গত কয়েক বছর ধরে আর্থিক সঙ্কটে জেরবার হয়ে যাচ্ছে সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানি Bharat Sanchar Nigam Limited বা BSNL। ইতিমধ্যেই দেশে 5G পরিষেবার আগমন ঘটে গেলেও BSNL এখনও 4G সার্ভিসই রোলআউট করে উঠতে পারেনি, যার ফলে প্রায়শই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটিকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করা চলতেই থাকে। যদিও বাজারে টিকে থাকতে সংস্থাটি প্রতিনিয়তই প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোনোভাবেই তারা বেসরকারি কোম্পানিগুলিকে টেক্কা দিতে পারছে না। কিন্তু সংস্থাটির এরকম বেহাল দশার মূল কারণ কী? এ বিষয়ে গত বুধবার সংসদে এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw)। BSNL-এর আর্থিক সঙ্কটের জন্য ইউপিএ জমানার কিছু রাজনৈতিক দলকে দায়ী করেছেন অশ্বিনী। কারোর নাম না করলেও মন্ত্রীর অভিযোগ, সংস্থাটিকে ব্যবহার করে নিজেদের রোজগারের বন্দোবস্ত করেছিল বেশ কিছু মানুষ, যারা এখনও সংসদের সদস্য।
কিছু রাজনৈতিক দলের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে BSNL, দাবি অশ্বিনীর
সংবাদসংস্থা পিটিআই (PTI)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, অশ্বিনীর মতে, ইউপিএ আমলের কিছু রাজনৈতিক দলই বিএসএনএলের খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার মূল কারণ। অনেক টাকাই অন্য খাতে ব্যয় করা হয়েছে। বিরোধীদের আসনকে লক্ষ্য করে বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে, পূর্বে কয়েকজন মন্ত্রী (প্রাক্তন) বিএসএনএলকে রোজগারের যন্ত্র (ক্যাশ কাউ) হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তবে কংগ্রেসের দিকে ইশারা করলেও তিনি স্পষ্টভাবে কোনো রাজনৈতিক দল বা মন্ত্রীর নাম নেননি। অশ্বিনী আরও বলেছেন যে, বর্তমানে গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারতে সবথেকে সস্তায় ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়। চলতি সময়ে ভারতে ১ জিবি নেট ব্যবহার করতে চাইলে খরচ হয় ২০ টাকা, যা ইউপিএ জমানায় ছিল ২০০ টাকা।
মোদী সরকারের সহায়তায় আগামী দিনে পুরোপুরিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে BSNL
তবে এর পাশাপাশি লোকসভায় বৈষ্ণব একথাও বলেছেন যে, এখন সময় অনেকটাই বদলে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিএসএনএলের জন্য ১.৬৪ লক্ষ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবন প্রকল্প অনুমোদন করেছেন। এছাড়াও, নানা ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে সংস্থাটিকে, যার ফলে পুরোপুরিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে বিএসএনএল। এর সুবাদে খুব শীঘ্রই ভারতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির ৪জি এবং ৫জি পরিষেবার দেখা মিলবে। অশ্বিনী আরও বলেছেন যে, বিএসএনএলের পরিষেবার মান উন্নয়নের জন্য স্পেকট্রাম বণ্টনের পাশাপাশি মূলধন যোগানের উপরও ফোকাস করা হচ্ছে।
আগামী বছরেই ভারতে উপলব্ধ হতে পারে BSNL-এর 4G এবং 5G পরিষেবা
বৈষ্ণব আরও জানিয়েছেন যে, মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিতে 5G-র জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোও তৈরি হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে BSNL-ই হবে ভারতের একমাত্র টেলিকম অপারেটর, যারা দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করবে৷ উল্লেখ্য, বৈষ্ণব এর আগে বলেছিলেন যে BSNL, 4G চালু করার পর পাঁচ থেকে সাত মাসের মধ্যে 5G চালু করতে পারে। অর্থাৎ সবকিছু যদি পরিকল্পনামাফিক চলতে থাকে, তাহলে ২০২৩ সালেই এদেশে BSNL-এর 4G এবং 5G পরিষেবার আবির্ভাব ঘটবে বলে আশা করা যেতে পারে।