২০০ শহরে শীঘ্রই পৌঁছে যাবে 5G পরিষেবা, লক্ষ্য স্থির সরকারের
চলতি মাসের গোড়ার দিকে ভারতে লঞ্চ হয়েছে বহুপ্রতীক্ষিত 5G সার্ভিস। Reliance Jio এবং Airtel দেশের নির্বাচিত কয়েকটি শহরে ইতিমধ্যেই তাদের পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু করেছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ এই দ্রুতগতির নেট সার্ভিস আপামর দেশবাসীর হাতের মুঠোয় গিয়ে পৌঁছোবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে আমজনতার জন্য সরকারের তরফে হালফিলে একটি বড়োসড়ো ঘোষণা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে যে, আগামী মাসগুলিতে দেশের আরও বেশ কয়েকটি শহরে এই পরিষেবা উপলব্ধ হবে। কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ওড়িশার অন্তত ৪ টি শহরে 5G সার্ভিসের দেখা পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, আগামী বছরের শেষের দিকে গোটা রাজ্যটির মানুষই এই 'রকেটের' গতির নেট পরিষেবার স্বাদ চেখে দেখতে সক্ষম হবেন বলে সরকারের তরফে জানা গিয়েছে।
আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে দেশের আরও ২০০ টি শহরে মিলবে 5G পরিষেবা
আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও জানিয়েছেন যে, পঞ্চম প্রজন্মের দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক পরিষেবাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমানে সরকার জোরকদমে কাজ চালাচ্ছে। তাঁর কথায়, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে দেশের ২০০ টিরও বেশি শহরের মানুষের কাছে এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র, এবং তারপরে ভারতের প্রত্যন্ত কিছু এলাকা এবং গ্রামেও ৫জি সার্ভিস উপলব্ধ করা হবে। তবে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত শহরগুলির সম্পর্কে এখনও বিশদে কিছু জানা যায়নি।
বর্তমানে দেশের নির্বাচিত কয়েকটি শহরে পাওয়া যাচ্ছে Jio এবং Airtel-এর 5G সার্ভিস
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, মাসখানেক আগে ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশনস (DoT) জানিয়েছিল যে, দেশে ৫জি সার্ভিসের আগমন ঘটলে প্রাথমিকভাবে ১৩ টি বড়ো শহরে সর্বপ্রথম তা উপলব্ধ হবে, যদিও বাস্তবে কিন্তু তা ঘটেনি। উল্লেখ্য, চলতি মাসের দশেরার দিন থেকে মুম্বাই, কলকাতা, দিল্লি, এবং বারাণসী – মাত্র এই চারটি শহরে 5G পরিষেবা চালু করেছে রিলায়েন্স জিও। তবে দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অপারেটরটির তুলনায় এয়ারটেল কিঞ্চিৎ এগিয়ে রয়েছে; কারণ ইতিমধ্যেই ভারতের আটটি শহরের এয়ারটেল ব্যবহারকারীরা ৫জি পরিষেবা পেতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, গুরুগ্রাম, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ, দিল্লি, বারাণসী, এবং চেন্নাই। তবে উভয় টেলিকম সংস্থার তরফেই নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি মিলেছে যে, খুব শীঘ্রই দেশের আরও বেশ কয়েকটি শহরের মানুষ এই ঝড়ের গতির নেট সার্ভিসের অ্যাক্সেস পেতে সক্ষম হবেন।
খুব শীঘ্রই বাজারে আসতে পারে নতুন 5G রিচার্জ প্ল্যান
প্রসঙ্গত বলে রাখি, ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea)-র ৫জি পরিষেবা ঠিক কবে উপলব্ধ হবে, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। অনুমান করা হচ্ছে , চূড়ান্তভাবে আর্থিক দুর্দশাগ্রস্ত হওয়ায় খুব শীঘ্রই সংস্থার ৫জি সার্ভিস রোলআউট হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই এই মুহূর্তে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবার স্বাদ পেতে হলে ইউজারদেরকে জিও কিংবা এয়ারটেলের শরণাপন্ন হতে হবে। উল্লেখ্য যে, উভয় কোম্পানিই এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ৫জি প্ল্যান লঞ্চ করেনি। ইউজাররা বর্তমানে ৪জি (4G) সিমেই তাদের বিদ্যমান রিচার্জ প্ল্যান মারফত সংস্থাদ্বয়ের ৫জি পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে সক্ষম হচ্ছেন। তবে জানা গিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই টেলিকম অপারেটর দুটি বাজারে নতুন ৫জি রিচার্জ প্ল্যান নিয়ে হাজির হবে।
ঝড়ের গতির 5G নেট স্পিডের কাছে কুপোকাত 4G
রিপোর্ট অনুযায়ী, 5G প্রতি সেকেন্ডে ১০০ এমবিপিএসের চাইতেও বেশি ডেটা ট্রান্সফার স্পিড সরবরাহ করবে বলে জানা গেছে। স্পষ্টতই 4G-র তুলনায় এই সাংখ্যমান যে অনেকটাই বেশি, সেকথা বলাই বাহুল্য। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, এই মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস (IMC) ইভেন্টে Airtel 5G নেটওয়ার্ক টেস্টিংয়ে ৩০৬ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড এবং ২৫.৪ এমবিপিএস আপলোড স্পিড সরবরাহ করেছে। অন্যদিকে 4G-র ক্ষেত্রে, মাত্র ৫০.৫ এমবিপিএস ডাউনলোড এবং ১.৮৭ এমবিপিএস আপলোড স্পিড পাওয়া গেছে। ফলে 5G-র স্পিডের ধারেকাছে যে 4G কোনোমতেই ঘেঁষতে পারবে না, তা খুব স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে। যদিও এক্ষেত্রে বলে রাখি, বর্তমানে ভারতের নির্বাচিত কয়েকটি শহরে 5G বিটা ট্রায়াল চলছে। তাই এই মুহূর্তে এতটা বেশি স্পিড পাওয়া যাচ্ছে না বলে ওকলা (Ookla)-র এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে। তবে ধীরে ধীরে দেশবাসী যে অবশ্যই 'রকেটের' গতির 5G পরিষেবা পেতে সক্ষম হবেন, সে ব্যাপারে আপামর জনগণকে নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে Jio এবং Airtel।