ইনস্টায় ভিডিয়ো তৈরির জন্য iPhone প্রয়োজন, টাকা জোগাড় করতে দুধের শিশুকে বিক্রি করল মা-বাবা
অ্যাপল (Apple)-এর আইফোনগুলি সারা বিশ্বের স্মার্টফোন অনুরাগীদের কাছে শুধুমাত্র একটি ফোনই নয়, স্টাইল স্টেটমেন্টও বটে। ভারতের গ্রাহকদের কাছেও তা ব্যতিক্রম নয়। তবে আইফোন ব্যবহার করা অনেকের কাছে স্বপ্ন হলেও, এই ব্যয়বহুল ডিভাইসগুলি বহু মানুষেরই সাধ্যের বাইরে। কিন্তু এমনই বিলাসিতার হাতছানি মানুষকে ঠেলে দিতে পারে অপরাধের অন্ধকারে। একটি আইফোন কেনার জন্য মানুষ যে কত মরিয়া হতে পারে, তারই নজির সম্প্রতি দেখা গেল এই বাংলায়। এক দম্পতি তাদের ৮ মাস বয়সী বাচ্চা বিক্রি করে, সেই অর্থ দিয়ে একটি iPhone 14 কিনেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। শিশুটির মাকে পুলিশ আটক করেছে এবং বাবা এই মুহূর্তে পলাতক। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে যে, তাদের বাচ্চা বিক্রি করার অন্যতম কারণ ছিল একটি আইফোন কেনা, যাতে তারা ইনস্টাগ্রামে রিল তৈরি করতে পারেন।
ইনস্টাগ্রাম রিলের নেশায় ৮ মাসের সন্তানকে বিক্রি করে iPhone 14 কিনলেন দম্পতি
সন্তানকে বিক্রি করে আইফোন কেনার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ শিশুটির মাকে গ্রেফতার করেছে, তবে বাবা জয়দেব ঘোষের খোঁজে এখনও তল্লাশি চলছে। প্রতিবেশীরা আট মাস বয়সী শিশুটির বেশ কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ হওয়ার পরে ঘোষ দম্পতির আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন। তবে, শিশুটির পিতা মাতার মধ্যে কোনও উদ্বেগ বা উদ্বেগের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। তার ওপর তাদের হাতে একটি আইফোন অনেককেই অবাক করেছিল। আইফোন ১৪ একটি ব্যয়বহুল স্মার্টফোন যা আর্থিক অসুবিধার কারণে এই দম্পতির পক্ষে কেনা কঠিন ছিল। সেই ফোন কিভাবে তারা কিনলেন, তা নিয়ে প্রতিবেশীদের মনে প্রশ্ন জাগে।
প্রতিবেশীরা শিশুটির মায়ের মুখোমুখি হলে এবং শিশুটি কোথায় আছে জানতে চেয়ে জোর দিলে, তিনি তাদের সন্তানকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেছেন যে, ওই বিক্রির টাকা iPhone 14 কেনার জন্য ব্যবহার করেছেন। এমনকি সকলকে হতবাক করে ওই মহিলা এও স্বীকার করেছেন যে, তার স্বামী তাদের সাত বছর বয়সী মেয়েকেও বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলেন। পুলিশ এখন সেই মহিলাকে সনাক্ত করেছে যে শিশুটি কিনেছিল এবং দম্পতি ও ক্রেতার বিরুদ্ধে মানব পাচারের অপরাধমূলক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রশংসনীয় দিক হল প্রতিবেশীদের ভূমিকা। সতর্ক প্রতিবেশীরা দম্পতির দ্বারা সংঘটিত মানব পাচারের এই জঘন্য অপরাধমূলক কাজটি চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। যে ব্যক্তি ওই শিশুটিকে কিনেছে, তাকে ট্র্যাক করে গ্রেফতার করতেও পুলিশ যথেষ্ট তৎপর ছিল। শিশুটির পলাতক বাবা জয়দেব ঘোষকে দ্রুত হেফাজতে নেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।