কারও সাহায্য ছাড়াই নিজের হাতে ইলেকট্রিক গাড়ি বানিয়ে বাবাকে উপহার দিলেন ছেলে

Avatar

Updated on:

Son gifts self developed electric car to his father in katwa East bardhaman

জুগাড়ের কারণে ভারতীয়রা সমগ্র বিশ্বেই সুখ্যাত। নানাবিধ কারিকুরি দ্বারা কল্পনাতীত জিনিস তৈরি করার ক্ষেত্রে এদেশের নাগরিকরা একটু বেশিই পটু। আবার যানবাহনের ক্ষেত্রে এমন কেরামতির খবর সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। এমন চমৎকার দেখানতে পিছিয়ে নেই বাংলাও। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামের বাসিন্দা মনজুর মওলা কোন কারোর সাহায্য সাহায্য ছাড়াই বানিয়ে ফেলেছেন একটি ব্যাটারি চালিত চার চাকা গাড়ি। সেই মান্ধাতার আমলের উইলিস জিপের আদলে তৈরি এই পরিবেশবান্ধব গাড়িটি তিনি তার পিতা মহম্মদ আশরাফ মাওলা’কে উপহার দিয়েছেন।

পেশায় সর্বশিক্ষা মিশনে কর্মরত মনজুর ইলেকট্রিক জিপ বানিয়ে সকলকে তাজ্জব করে দিয়েছেন। অতি সাধ করে তিনি নিজের তৈরি গাড়িটির নাম রেখেছেন ‘কিং’। আসলে ৭২ বছর বয়সি বাবার যাতায়াতের সুবিধার জন্যই গাড়িটি তৈরি করেছেন মনজুর। তিনি জানান, রাজুয়া থেকে কাটোয়ার দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। প্রয়োজনের তাগিদে হামেশাই তাঁর বাবাকে কাটোয়া ছুটতে হয়। যাতায়াতের জন্য সাইকেল বা মোটরবাইক ব্যবহার করতেন তিনি।

এদিকে দিনদিন যে হারে পথ দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে, তাতে করে বাবাকে নিয়ে চিন্তার অন্ত ছিল না মনজুরের। সেই দুশ্চিন্তা থেকেই নিজের হাতে ব্যাটারি চালিত জিপ তৈরির কথা মাথায় আসে। ভাবনা মতই তা বাস্তবায়িত করে দেখান মনজুর। নিজে পেশাদার ইঞ্জিনিয়ার না হলেও, তার তৈরি গাড়িতে কোনরকম অপেশাদারিত্বের চিহ্ন নেই।

গাড়ি তৈরি করতে গিয়ে এসেছে নানান বাধাবিপত্তি। কিন্তু এই সব কিছুকে অনায়াসে অতিক্রম করে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন মনজুর। সেই ব্রিটিশ আমলের ভিন্টেজ গাড়ির নকশার আদলে বানিয়ে ফেলেছেন নিজের জিপ। স্থানীয় লেদ কারখানা থেকে বডি তৈরি করে এনেছেন। শক্তির উৎস হিসেবে এতে ব্যবহার করা হয়েছে টোটো গাড়ির উন্নত মানের ব্যাটারি। মোট চার আসন সংখ্যার গাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। যদিও এখনো পর্যন্ত রাস্তায় চালানোর জন্য আরটিও থেকে সরকারি অনুমোদন হাতে আসেনি। ছেলের তৈরি জিপ নিয়ে কাটোয়া যাবেন, এখন সেই স্বপ্ন চোখে নিয়ে দিন গুজরান করছেন মহম্মদ আশরাফ।

সঙ্গে থাকুন ➥