পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ, ভারতে ৪৭ লক্ষ মানুষ আর ব্যবহার করতে পারবে না WhatsApp

নিরাপত্তার খাতিরে মার্চ মাসে ৪৭ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করলো WhatsApp

মেটা-মালিকানাধীন ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম WhatsApp প্রতি মাসে ধারাবাহিকভাবে সেফটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সম্প্রতি তারা তাদের অফিসিয়াল ‘সিকিউরিটি অ্যাডভাইসরিস’ পেজে ২০২৩ সালের মার্চ মাসের জন্য ‘ইউজার সেফ্টি মান্থলি রিপোর্ট’ (User Safety Monthly Report) রিলিজ করেছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্চ মাসে ৪৭ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট ব্যান করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। এক্ষেত্রে, আইটি রুলস ২০২১ (ইন্টারমিডিয়ারি গাইডলাইনস অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) 4(1)(d) -এর অধীনে এই অ্যাকাউন্টগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং রিপোর্টটি ১লা মার্চ থেকে ৩১শে মার্চ ২০২৩ এর ভিত্তিতে বানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, WhatsApp ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৪৫ লক্ষ অ্যাকাউন্ট, জানুয়ারিতে ২৯ লক্ষ অ্যাকাউন্ট, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৩৬ লক্ষ অ্যাকাউন্ট এবং নভেম্বরে ৩৭ লক্ষ অ্যাকাউন্ট ব্যান করেছিল। অর্থাৎ, পূর্ববর্তী মাসগুলির তুলনায় মার্চ মাসে সর্বাধিক সংখ্যক অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জানিয়ে রাখি, উক্ত মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি তাদের নিজস্ব সিকিউরিটি সিস্টেমের মাধ্যমে অযাচিত আচরণের জন্য ‘রিপোর্ট’ প্রাপ্ত অ্যাকাউন্টগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়।

নিরাপত্তার খাতিরে মার্চ মাসে ৪৭ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করলো WhatsApp

হোয়াটসঅ্যাপের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘প্রিভেনশন অ্যান্ড ডিটেক্টিউন মেথড’ অনুসরণে অ্যাকাউন্টগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১লা মার্চ থেকে ৩১শে মার্চ ২০২৩ -এর মধ্যে মোট ৪,৭১৫,৯০৬টি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে তারা। যার মধ্যে প্রায় ১,৬৫৯,৩৮৫টি অ্যাকাউন্টকে কোনো প্রকারের ইউজার রিপোর্ট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপ স্বয়ং সক্রিয়ভাবে নিষিদ্ধ করেছে৷ পাশাপাশি ব্যান করা অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে “+৯১ কান্ট্রি কোড যুক্ত একটি ভারতীয় অ্যাকাউন্টও সনাক্ত করা হয়েছে” বলে উল্লেখ আছে রিপোর্টে।

রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, মেটা-মালিকানাধীন ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটি মার্চ মাসে ৪,৭২০টি কমপ্লেইন রিপোর্ট পেয়েছে। যার মধ্যে ৫৮৫টি অভিযোগের নিষ্পত্তি ঘটানো হয়েছে। অন্যদিকে, প্রাপ্ত মোট সংখ্যক রিপোর্ট বা অভিযোগের মধ্যে ৪,৩১৬টি ‘ব্যান আপিল’ সংক্রান্ত ছিল। এছাড়া, অন্যান্য অ্যাকাউন্টগুলিকে – অ্যাকাউন্ট সাপোর্ট, প্রোডাক্ট সাপোর্ট এবং সেফটি ক্যাটাগরির অধীনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপ তাদের মান্থলি রিপোর্টে বলেছে, “আমরা প্রাপ্ত সমস্ত অভিযোগের জবাব দিই। তবে কোনো অভিযোগকে যদি পূর্ববর্তী টিকিটের কপি বলে মনে হয় তবে সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।”

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, আইটি রুলের অধীনে ৫০ লক্ষেরও বেশি ব্যবহারকারী আছে এমন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিকে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রতি মাসে একটি কম্পিলিয়ান্স রিপোর্ট প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। যেখানে প্রাপ্ত অভিযোগের বিবরণ এবং গৃহীত পদক্ষেপগুলির উল্লেখ থাকবে।

মূলত বড় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে বর্তমানে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল এবং জাল তথ্য প্রচারের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার দরুন তৈরী হচ্ছে নানাবিধ সমস্যা। তাই এরকম কন্টেন্টকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দিতে এবং এই সকল খবর প্রচারকারী ব্যবহারকারীদের ‘ডি-প্ল্যাটফর্মিং’ করার উদ্দেশ্যেই নতুন আইটি রুল পাশ করা হয়েছে। একই সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বহু-প্রতীক্ষিত ‘গ্রিয়েভেন্স আপিল কমিটি’ (GAC) মেকানিজামস প্রক্রিয়াও চালু করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে দেয়।