মোবাইল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় তথা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কম্পোনেন্টের আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা করলো ভারত সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে স্ক্রু, সিম সকেট, ধাতব যান্ত্রিক উপাদান, ব্যাটারি কভার, ফ্রন্ট কভার, প্রাইমারি লেন্স, ব্যাক কভার, জিএসএম অ্যান্টেনা এবং পলিউরেথেন ফোম কেসের মতো উপাদানগুলি আমদানি করার জন্য ১৫% এর পরিবর্তে ১০% শুল্ক প্রদান করতে হবে টেক ব্র্যান্ডগুলিকে।
অধিকন্তু সদ্য সংশোধিত আমদানি শুল্ক নীতিতে পরিবাহী কাপড় (কন্ডাক্টিভ ক্লোথ), এলসিডি পরিবাহী ফোম, এলসিডি ফোম, বিটি ফোম, হিট ডিসিপেশন স্টিকার, ব্যাটারি কভার স্টিকার, প্রাইমারি লেন্সের প্রতিরক্ষামূলক ফিল্ম, এলসিডি এফপিসির জন্য মাইলার, ফিল্ম-ফ্রন্ট ফ্ল্যাশ এবং সাইড কী -এর মতো মোবাইল ফোন উৎপাদনে অপরিহার্য বিভিন্ন কম্পোনেন্টও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মূলত, ভারতের ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রির রপ্তানি ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, মোবাইল ফোন সেক্টরে স্থানীয়ভাবে উৎপাদনকার্য বাড়াতে এবং বিশ্বের দরবারে ভারতের একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সিএমআর (CMR) -এর ইন্ডাস্ট্রি ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের প্রধান প্রভু রাম (Prabhu Ram) এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন যে, “মোবাইল ফোন যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক কমানোর এই পদক্ষেপ, মেক-ইন-ইন্ডিয়া উদ্যোগকে দারুণভাবে প্রভাবিত করবে। সম্ভাবনা আছে এখন আরো অধিক সংখ্যক স্মার্টফোন ব্র্যান্ড এদেশে স্থানীয়ভাবে মোবাইল উৎপাদনে উৎসাহী হবে।”
তবে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও, তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইলের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন প্রভু রাম। কেননা এই মুহূর্তে শুধুমাত্র মোবাইল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কম্পোনেন্টগুলি এই নীতির অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রনিক ডিভাইসের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই বর্ধিত চাহিদা দ্বারা ভারতের ইলেকট্রনিক্স সেক্টরও সমানভাবে প্রভাবিত হতে চলেছে। যেকারণে ভারত সরকার এখন এদেশে একটা স্বনির্ভর ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করার উপর অধিক জোর দিচ্ছে। আমদানি শুল্ক সংক্রান্ত এই নয়া নীতি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে৷
প্রসঙ্গত রয়টার্স -এর একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে প্রতি বছর মোবাইল রপ্তানির সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন ২০২২-২০২৩ সালে ১১.১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৯২.৩৮৫ কোটি) মূল্যের মোবাইল চালান করা হয়েছে, যা কিনা ২০২১-২০২২ সালের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৩-২০২৪ সালে এই সংখ্যা ১৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১.৫ কোটি) ছুঁতে পারে।