Smartphone: চাহিদা কমলেও মেক ইন ইন্ডিয়া স্মার্টফোন তৈরিতে শীর্ষে Oppo, এরপর কারা আছে জেনে নিন

Avatar

Published on:

Make in India Smartphone Shipments Down

করোনা মহামারীর আগমনের দরুন বিগত কয়েক বছর ধরেই গোটা বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়; এবং পরিস্থিতি এতটাই কঠিন হয়ে গিয়েছে যে, এখনও পর্যন্ত তার রেশ কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। সম্প্রতি এক রিপোর্ট অনুযায়ী, অর্থনৈতিক মন্দা, গ্রাহকদের অপ্রতুল চাহিদা, এবং বাজারের অনিশ্চয়তার কারণে চলতি বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (Q3) ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্মার্টফোনের চালান (ইয়ার-ওভার-ইয়ার) ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালে এই প্রথম কোনো ত্রৈমাসিকে এরূপ পতন লক্ষ্য করা গেল। জনপ্রিয় টেক ব্র্যান্ড Oppo ২৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্মার্টফোন শিপমেন্টের তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে, এবং এরপর ক্রমান্বয়ে আছে Samsung ও Vivo।

ঠিক কী কারণে হ্রাস পেল স্মার্টফোনের চালান?

এখন প্রশ্ন হল, ঠিক কী কারণে স্মার্টফোনের শিপমেন্টে এইরকম পতন লক্ষ্য করা গেল? এই প্রসঙ্গে সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট প্রাচীর সিং (Prachir Singh) জানিয়েছেন, মূলত দুটি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রথম কারণটি হল, গ্রাহকদের অপ্রতুল চাহিদা; বিশেষ করে এন্ট্রি-লেভেল সেগমেন্টের স্মার্টফোনগুলি এর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তৃতীয় ত্রৈমাসিকের শুরুতে হাই চ্যানেল ইনভেন্টরিও (অর্থাৎ স্মার্টফোন সংস্থাগুলির রিটেইল স্টোরে প্রচুর পরিমাণে অবিক্রিত প্রোডাক্ট থেকে যাওয়া) এই সময়ে স্মার্টফোনের উৎপাদনকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

অন্যদিকে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ (Counterpoint Research)-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত ফোর্জ ইন্ডিয়া হোল্ডিংস (Bharat Forge India Holdings) স্মার্টফোনের চালানের ক্ষেত্রে সেরা ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং সার্ভিসেস বা ইএমএস (EMS) প্লেয়ারের তকমা পেয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় কোম্পানিগুলির মধ্যে, ডিক্সন (Dixon) সেরা স্মার্টফোন ইএমএস প্রোভাইডার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ভারত থেকে যে পরিমাণ স্মার্টফোন শিপমেন্ট হয়, তার মধ্যে ৬৩ শতাংশ ইন-হাউস নির্মাতাদের কাছ থেকে এবং ৩৭ শতাংশ থার্ড-পার্টি ইএমএস প্লেয়ারদের কাছ থেকে আসে। সেক্ষেত্রে উক্ত ত্রৈমাসিকে বিওয়াইডি (BYD) এবং লাভা (Lava) বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।

PLI স্কিমের দরুন ভারতে স্মার্টফোনের উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ভারতকে ডিজিটাল হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে জোরকদমে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর জন্য ইলেকট্রনিক আইটেম, বিশেষ করে মোবাইল বা স্মার্টফোনের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার উদ্দেশ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলিকে উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়া ও সাহায্য করার জন্য সরকার কর্তৃক বছরদুয়েক আগে চালু হয়েছে প্রোডাকশন লিঙ্কড ইন্সেন্টিভ বা পিএলআই (PLI) স্কিম। সেক্ষেত্রে এই স্কিম চালু হওয়ার দু’বছর পর এখন এর ব্যাপক প্রভাব দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য যে, পিএলআই স্কিমের সাহায্যে একদিকে যেমন দেশীয় ব্র্যান্ডগুলি নতুন উদ্যমে ব্যবসায় জোর দিয়েছে, তেমনি অন্যদিকে এর দৌলতে মোবাইল ফোনের উৎপাদনও পূর্বের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। রিসার্চ অ্যানালিস্ট প্রিয়া জোসেফ (Priya Joseph) জানিয়েছেন যে, বর্তমানে গোটা বিশ্বের অবস্থা প্রতিকূল হলেও ভারতের স্মার্টফোন বাজার কিন্তু বেশ স্থিতিস্থাপক অবস্থায় রয়েছে। আর আগামী দিনেও এই ক্ষেত্রে বিপুল সাফল্য চোখে পড়বে বলে আশা করা যেতে পারে। কারণ ইতিমধ্যেই বেদান্ত (Vedanta) এবং আইফোন (iPhone) সরবরাহকারী ফক্সকন (Foxconn) গুজরাটে একটি সেমিকন্ডাক্টার প্রকল্প স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আবার অন্যদিকে, টাটা গ্রুপ (Tata Group)-ও ভারতে iPhone তৈরির জন্য উইস্ট্রন কর্প (Wistron Corp)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে এদেশে স্মার্টফোন উৎপাদনের কাজ যে দুর্বার গতিতে চলবে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।

সঙ্গে থাকুন ➥