ব্লু টিকের জন্য প্রতি মাসে খরচ করতে হবে প্রায় ১৬০০ টাকা, ইলন মাস্কের হাত ধরে বদলে যাচ্ছে Twitter

Twitter Paid Verification : টুইটারের (Twitter) মালিকানা ইলন মাস্কের (Elon Musk) হাতে আসার পর থেকেই বড় ধরনের রদবদলের সম্মুখীন হয়েছে মাইক্রো ব্লগিং সাইটটি। এখন আবার শোনা যাচ্ছে যে, শীঘ্রই টুইটার ভ্যারিফিকেশন প্রক্রিয়ায় (Twitter verification process) বদল আনা হতে পারে। জানিয়ে রাখি, টুইটার তাদের ভ্যারিফাইড ইউজারদের প্রোফাইলের পাশে একটি ‘ব্লু টিক’ চিহ্ন দিয়ে থাকে। যার দরুন রেগুলার প্রোফাইল থেকে ভ্যারিফাইড প্রোফাইলগুলি আলাদা ভাবে চেনা সম্ভব হয় এই প্ল্যাটফর্মে। তবে এখন, টুইটারের সিইও (CEO)-র পদ হস্তান্তর হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী ব্লু টিক-ধারী ইউজারদের হয়তো অর্থ ব্যয় করতে হতে পারে। অন্তত কোম্পানির কিছু কর্মচারী এনমটাই দাবি করেছে।

প্রসঙ্গত, ইলন মাস্ক টুইটারের বহু উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করেছেন। আর বাদবাকি কর্মচারীদের টুইটার পেইড ভ্যারিফিকেশনের (Twitter Paid Verification) উপর যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং যারা সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন না তাদের কোম্পানি থেকে অপসারিত করা হতে পারে বলে নির্দেশও দিয়েছেন ইলন মাস্ক।

মাসিক ২০ ডলার পে করতে হবে, নইলে খোয়াতে হবে টুইটার ব্লু টিক

‘দ্য ভার্জ’ প্রকাশিত একটি লেটেস্ট রিপোর্ট অনুসারে, টুইটার ইউজারদের অ্যাপ ভ্যারিফাইড রাখার জন্য এখন থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১৯.৯৯ ডলার (ভারতীয় মূল্যে প্রায় ১,৬৪৭ টাকা) চার্জ করা হবে। যেখানে কিনা আগে টুইটার ব্লু সাবস্ক্রিপশন প্ল্যানের দাম ছিল মাসিক ৪.৯৯ ডলার (প্রায় ৪১১ টাকা)। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, ভ্যারিফাইড ইউজাররা যদি ৯০ দিনের মধ্যে টুইটার ব্লু সাবস্ক্রিপশনের জন্য উল্লেখিত পরিমাণ মূল্য পরিশোধ না করেন, তবে তাদের অ্যাকাউন্টের পাশে অবস্থিত ব্লু টিক সরিয়ে দেওয়া হবে, এমন শর্তাবলীও প্রযোজ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ দেখতে গেলে বছরে মোট ১৯,৭৬৪ টাকার মতো খসাতে হবে টুইটারের ব্লু টিক-হোল্ডার হওয়ার জন্য। যদিও ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের জন্যও এই একই নিয়ম বরাদ্দ করা হবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। যাইহোক এই দায়িত্বে যেসকল কর্মীরা নিযুক্ত আছেন, তারা যদি ৭ই নভেম্বরের মধ্যে লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হন তবে তাদের চাকরি থেকে বিতাড়িত করার হুমকিও দিয়েছেন ইলন মাস্ক। যদিও এই বিষয়ে আমরা টুইটারের মুখপাত্রের কাছ থেকে কোনো প্রকারের প্রতিক্রিয়া পাইনি। কিন্তু ইলন মাস্ক সম্প্রতি এক টুইটার ইউজারের পোস্টে রিপ্লাই দিয়ে ভ্যারিফিকেশন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন ঘটানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন..

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসে ভারতে ব্লু সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান চালু করেছিল টুইটার। মাসিক ২৬৯ টাকার চার্জ সহ আসা এই প্ল্যানের অধীনে ইউজাররা অ্যাড-ফ্রি কনটেন্ট দেখতে, টুইট এডিট করার, অ্যাকশন আন্ডু করার, অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড কালার পরিবর্তন করার অনুমতি পায়৷ এছাড়া বিভিন্ন ধরনের হোম কালার স্ক্রিন আইকনও দেওয়া হয়ে থাকে। আসলে টুইটার ব্লু সাবস্ক্রিপশন এবং পেইড ভ্যারিফিকেশন প্ল্যান দুটিকে টুইটার নিজেদের রেভেনিউ বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যেই নিয়ে এসেছে।

Elon Musk -এর অধীনে আসার পরই ভোলবদলের কাজ শুরু হয়ে গেলো Twitter কোম্পানিতে

ইলন মাস্ক, গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটার অধিগ্রহণ করেছেন। আর সংস্থা-প্রধান হওয়ার পর থেকেই তিনি আলোচ্য মাইক্রোব্লগিং সাইটটিকে উপার্জনের অন্যতম উৎস হিসাবে পুনর্গঠন করার পরিকল্পনা করছেন। এতদিন টুইটার তার বেশিরভাগ রেভেনিউ বিজ্ঞাপন থেকেই পেত, যেটিকে মাস্ক সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক প্ল্যানে রূপান্তর করতে চায়। আর এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল সিইও পরাগ আগরওয়াল, সিএফও নেড সেগাল এবং লিগ্যাল পলিসি ও ট্রাস্টের প্রধান বিজয় গাদ্দে সহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা। এছাড়া জানা গেছে ইলন মাস্ক ৭৫% টুইটার কর্মীদের বরখাস্ত করার পরিকল্পনা করেছেন। এক্ষেত্রে এই ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় সেই সকল কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যারা কোড বেসে খুব বেশি অবদান রাখেনি। সর্বোপরি, আমেরিকা ভিত্তিক এই ব্যবসায়ী টুইটারের মালিক হয়ে আসার পর থেকেই কোম্পানির কর্মীদের দিনরাত এমনকি সপ্তাহান্তেও কাজ করার খবর সামনে এসেছে।