দেশের সমস্ত অঞ্চলে দ্রুত করোনার ভ্যাকসিন পৌঁছাতে ড্রোন ব্যবহারের ভাবনা
করোনা ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সংক্রমণ রুখতে সকলের টিকা নেওয়া একান্ত বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে। কিন্তু দেশের এই বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ভ্যাকসিন পৌঁছানোও কার্যত দুষ্কর। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে এক দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে COVID-19-এর ভ্যাকসিন। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (IIT) সাথে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) হাতে হাত মিলিয়ে এমনই একটি সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে দেশে দাবানলের মতো COVID-19-এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায়, ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য টিকাকরণ ১ মে, ২০২১ থেকে সারা ভারতে শুরু হবে বলে কেন্দ্রের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে দেশে টিকাকরণের তৃতীয় পর্যায়ের অংশ হিসেবে এই ড্রোন মারফত ভ্যাকসিন সরবরাহের কথা ভাবা হচ্ছে। বেঙ্গালুরুর সিডিস্পেস রোবোটিক্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং ভারত বায়োটেকের সহযোগিতায় COVID-19-এর ভ্যাকসিন ডেলিভারি ড্রোনটি তৈরি করা হচ্ছে।
কোটি কোটি মানুষের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে নেওয়া এই সিদ্ধান্তটি অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক (MoCA) এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ অধিদপ্তর (DGCA) দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। MoCA এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এই গবেষণার জন্য কানপুরের ICMR এবং IIT-কে আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম (UAS) বিধি, ২০২১-এর বিধি ৭০-এর অধীনে এক বছরের জন্য শর্তসাপেক্ষ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
নিঃসন্দেহে বলা যায়, COVID-19-এর ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ড্রোনের ব্যবহার অবশ্যই দেশজুড়ে টিকাকরণের প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করবে। এর ফলে দেশের সর্বত্র, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের কাছে ভ্যাকসিনটি দ্রুত উপলব্ধ হবে। যদিও প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়িত করতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।
প্রসঙ্গত, এমন নয় যে, এই প্রথম MoCA ভারতে ড্রোন ব্যবহারের জন্য শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দিয়েছে। এর আগে MoCA, পশ্চিম মধ্য রেলওয়ে (WCR), কাটনি-কে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে রেল সম্পদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য শর্তসাপেক্ষে ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল।
এছাড়াও, GIS ভিত্তিক সম্পত্তির ডেটাবেস এবং বৈদ্যুতিন কর রেজিস্টার তৈরির জন্য দেরাদুনের নগর নিগম, হলদওয়ানি হরিদ্বার এবং রুদ্রপুরকে শর্তসাপেক্ষে ড্রোন ব্যবহারের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।