ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করলেই জেল বা জরিমানা, WhatsApp ইউজারদেরও করাতে হবে KYC?
ছদ্মবেশ ধারণ এখন সাধারণত গল্প-কথা বা সিনেমা-সিরিয়ালের বিষয়ের মধ্যে পড়লেও, বাস্তবে পরিচয় গোপন করে চলেন – এমন মানুষ অনেকেই আছেন। এই কাজের জন্য (পড়ুন পরিচিত বলয় থেকে দূরে থেকে ব্যক্তিগত কাজ করার জন্য) বেশিরভাগই ভুয়ো সিম কার্ড ব্যবহার করেন। কিন্তু আগামী দিনে ভুয়ো সিম কার্ড ব্যবহার করে কোনো কারণে নিজের আসল পরিচয় লুকিয়ে রাখা, বেশ মাথাব্যথার কারণ হতে পারে! ইকোনমিক টাইমস (ET)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত সরকার এবার এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে যার জেরে কারো কাছে অথেন্টিক সিম কার্ড না থাকলে তার জেল ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এমনকি যদি কেউ WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ), Signal (সিগন্যাল) বা Telegram (টেলিগ্রাম)-এর মত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিজের পরিচয় গোপন করে কারও সাথে চ্যাট করেন, তবে তার ক্ষেত্রেও একই আইন প্রযোজ্য হবে।
জারি হয়েছে নতুন আইন
ভুয়ো সিম কার্ড ব্যবহার করে বা সোশ্যাল মিডিয়ার ফাঁকফোকরকে কাজে লাগিয়ে পরিচয় গোপন করার বিষয়টি রুখতেই এই শাস্তির আইন জারি করেছে সরকার। কেন্দ্রের মতে, এই ধরনের আইনি বিধানের কারণে সাইবার অপরাধ হ্রাস পাবে। উল্লেখ্য, টেলিকম বিলের ৭ নম্বর ধারার উপ-ধারা ৪-এ এই নিয়মের কথা বলা হয়েছে; ওই ধারা অনুযায়ী, গ্রাহকদের সর্বদা তাদের আসল পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। মিথ্যা পরিচয় দেওয়া বা পরিচয় গোপন করার জন্য তাদের ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে, প্রয়োজনে হতে পারে কারাদন্ড বা দুটি শাস্তিই। এছাড়া খসড়া বিলে আরও বলা হয়েছে যে, এই ধরনের ঘটনায় পুলিশ কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে এবং আদালতের আদেশ ছাড়াই তদন্ত শুরু করতে পারে।
WhatsApp ব্যবহার করতে করাতে হবে KYC
এদিকে, টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও সম্প্রতি বলেছেন যে, সরকার অনলাইন আর্থিক জালিয়াতির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ-সিগন্যালের মত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইউজারদের কেওয়াইসি (KYC) সম্পন্ন করাতে হতে পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আসলে বৈষ্ণবের বক্তব্য, আগামী ৬-১০ মাসের মধ্যে এই টেলিকম বিল বাস্তবায়িত হবে। আর যে সমস্ত অ্যাপ যা কলিং বা যেকোনো ধরণের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলি সমস্তই নতুন টেলিকম বিলের আওতায় আসবে বলে এই নিয়ম লাগু হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, সরকার, ইউজারদের মেসেজ বা কল ডিক্রিপ্ট করবে না। অর্থাৎ এই নিয়মে শুধু ইউজারদের পরিচয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে, তাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে কোনো প্রভাব পড়বে না।