দিল্লী থেকে মীরাট রেল টানেলের জন্য চীনা সংস্থার সাথে ১১২৬ কোটি টাকার চুক্তি ভারত সরকারের

Published on:

চীন – নামটা শুনলেই এখন বেশির ভাগ মানুষের চোখে-মুখে বিরক্তির উদ্রেক দেখা যায়। একদিকে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে গোটা বিশ্ব চীনকে দুষছে, অন্যদিকে বিগত কয়েক মাসে ভারত এবং প্রতিবেশী দেশ চীনের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের বেশ অবনতি হয়েছে; যার ফলে বহু ভারতীয়, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ‘বয়কট চায়না’ স্লোগান তুলেছেন। কিন্তু চীনের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি কতটা যৌক্তিক, সেই নিয়েই ফের একবার প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আসলে এবার, ভারতের মেট্রো পরিষেবার বিকাশের কাজে হাত লাগাতে চলেছে একটি চীনা সংস্থা। রিপোর্ট বলছে, নয়া দিল্লী থেকে মীরাট পর্যন্ত ৫.৬ কিলোমিটার প্রসারিত ভূগর্ভস্থ রাস্তা নির্মাণের জন্য সাংহাই ভিত্তিক একটি সংস্থার সাথে চুক্তি করেছে মোদী সরকার।

জানিয়ে রাখি এই চুক্তিটি কোনো নতুন ঘটনা নয়। গত বছর জুনে এই চুক্তিটির কথা সামনে এসেছিল। তবে সম্প্রতি, ভারত সরকার এবিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছে। সেক্ষেত্রে মাটির নিচে সুরঙ্গ পথ বানানোর জন্য চুক্তিবাবদ সাংহাই টানেল ইঞ্জিনিয়ারিং কোং লিমিটেড (STEC) নামের সংস্থাটিকে এখনও পর্যন্ত ১,১২৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এই বিষয়ে দেশের প্রথম আঞ্চলিক র‌্যাপিড রেল ট্রানজিট সিস্টেম (RRTS) সম্পাদনকারী সংস্থা NCRTC (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওন ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন) জানিয়েছে, সরকার নির্ধারিত নিয়ম নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করেই চীন ভিত্তিক কোম্পানিটিকে এই প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রে, এটি (STEC) দিল্লীর নিউ অশোক নগর থেকে উত্তর প্রদেশের সাহিদাবাদ পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ টানেল নির্মাণ করবে।

বলা হচ্ছে, এই দিল্লি টু মীরাট ভায়া গাজিয়াবাদ করিডোরটি দেশের প্রথম আরআরটিএস করিডোর হিসেবে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে এক আধিকারিকের মত, এই নব নির্মায়মান রাস্তায় পাতাল রেল পরিবহণ শুরু হলে দিল্লি থেকে মীরাট যাওয়ার জন্য সড়কপথের তুলনায় প্রায় এক ঘণ্টা সময় কম লাগবে।

জানিয়ে রাখি, এই প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্ব পেতে পাঁচটি সংস্থা প্রযুক্তিগত বিড জমা দিয়েছিল, কিন্তু তার মধ্যে থেকে সাংহাই টানেল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড – যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এনসিআরটিসির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ দিল্লি-গাজিয়াবাদ-মীরাট করিডোরের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সিভিল ওয়ার্কের টেন্ডারগুলি সবুজ সংকেত পেয়েছে এবং প্রকল্পটি যথাসময়ে চালু করার জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। এই করিডোরটির জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ADB) ফান্ডিং করছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বরে, কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রক, আরআরটিএস ট্রেনের চেহারাটি প্রথমবার সবার সামনে আনেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, এটি উল্লিখিত করিডরে ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটারের শীর্ষ গতিতে চলবে এবং এই ট্রেনগুলি তে স্টেইনলেস স্টিলের আবরণ থাকবে। এছাড়া, এয়ারোডায়নামিক আরআরটিএস ট্রেনগুলি হালকা ওজনের এবং সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হবে বলে জানা গিয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥