Realme, Xiaomi কে পিছনে ফেলে ৭,০০০ টাকার রেঞ্জে সেরা ব্র্যান্ড এখন itel

Avatar

Published on:

করোনা অতিমারীর আবহে গত দেড় বছর ধরে মানুষ ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ও ‘ই-লার্নিং’ প্রথার শিকলে বাঁধা পড়ে আছেন। ফলে গৃহবন্দী দশায় অফিসের কাজ বা স্কুল-কলেজের ক্লাস করার জন্য প্রত্যেককেই এখন মোবাইল নামক ডিভাইসের প্রতি নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। তবে কোভিড-১৯ এর দরুন লকডাউনের কারণে অর্থনীতির স্তম্ভ টোলে যাওয়াতে বেশিরভাগ ভারতীয় এখন বেশি দামি স্মার্টফোন কিনতে চাইছেন না। ফলে ভারতের বাজারে বর্তমান সময়ে বাজেট-রেঞ্জের হ্যান্ডসেটগুলি বেশি বিক্রি হচ্ছে। এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে সম্প্রতি একটি সার্ভে করেছিল সাইবারমিডিয়া রিসার্চ (CMR) টিম। যার থেকে জানা যায়, এখন ৭,০০০ টাকা রেঞ্জের স্মার্টফোন ভারতীয়দের প্রথম পছন্দ।

৭,০০০ টাকার স্মার্টফোন সেগমেন্টের শীর্ষস্থানের অধিকারী itel

‘CMR Insights on the go’ সার্ভে অনুযায়ী, ২০২০ সালের প্রথম কোয়ার্টার থেকে ২০২১ সালের চলতি মাস পর্যন্ত অর্থাৎ এই পুরো অতিমারির সময়ে ভারতীয়রা প্রায় ৫২২ ঘন্টারও বেশি ই-লার্নিংয়ের জন্য এবং ৭৩৮ ঘন্টারও বেশি ইনফোটেইনমেন্টে (ইনফর্মাটিভ এন্টারটেইনমেন্ট) ব্যয় করেছেন। আর উক্ত দুটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য অধিকাংশ ক্রেতাই ৭,০০০ টাকার মধ্যে ‘বেস্ট-ইন-ক্লাস’ ফিচার এবং ‘ভ্যালু-ফর-মানি’ হ্যান্ডসেট খুঁজেছেন। সেক্ষেত্রে, ৭,০০০ টাকা সেগমেন্টে লঞ্চ হওয়া হ্যান্ডসেট গুলির মধ্যে itel ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন সর্বাধিক বিক্রীত হয়েছে বলে CMR দাবি করেছে।

CMR এর এই সার্ভেটি তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়েছিল, যথা – স্যাটিসফ্যাকশন (সন্তুষ্টি), এডভোকেসি (পক্ষসমর্থন) এবং ফিউচার কন্সিডিরেশন (ভবিষ্যতের বিবেচনা)। itel এই তিনটি বিভাগেই সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে realme, Xiaomi, Samsung এর মতো নামজাদা ব্র্যান্ডকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ক্রেতাদের মতানুযায়ী, itel -এর প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এবং দাম যথেষ্ট সন্তোষজনক। সেক্ষেত্রে, ব্র্যান্ড অ্যাডভোকেসির ভিত্তিতে, itel এর নেট প্রোমোটার স্কোর (NPS) সর্বোচ্চ অর্থাৎ ৬০%। তাদের পরে আছে, realme (৫৮%) এবং Xiaomi (৫৪%) সংস্থাদ্বয়।

ট্রান্সশান ইন্ডিয়ার (TRANSSION India) এর সিইও অরিজিৎ তালাপত্রর বিবৃতিতে, “আমরা জেনে খুশি যে, আইটেল ৭,০০০ টাকা সেগমেন্টে সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড হিসেবে উঠে এসেছে। ভোক্তারা ধারাবাহিকভাবে আইটেলের প্রতি দৃঢ় অনুরাগ দেখিয়েছে এবং বন্ধু- বান্ধব, পরিবারের মধ্যে আইটেলের স্মার্টফোন নেওয়ার সুপারিশ করেছেন, যা আমাদের আসল প্লাস পয়েন্ট।” তিনি আরো বলেন যে, “প্রোডাক্ট ইনোভেশন, ইন-ডেপ্থ কনজিউমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং, লোকালাইজ মার্কেট কানেক্ট ইন্টারভেনশন এবং প্রোগ্রামস – এগুলি হলো ভারতে আইটেলের সাফল্য পাওয়ার নেপথ্যে থাকা মূল চারটি স্তম্ভ।”

মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সম্পর্কে তালাপত্রের মত, “হালফিলে, ‘ভ্যালু-সিকিং’ ভোক্তাদের জন্য আইটেল উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন স্মার্টফোনের সাথে জিও সার্ভিস অফার করছে। ক্রেতারা যাতে অতিশয় সাশ্রয়ী দামে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যাক্সেস করতে পারেন তার জন্য আইটেল এই বছর itel A23 Pro এবং রিলোডেড itel A48 স্মার্টফোন লঞ্চ করেছিল। সাথে, ভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে অংশীদারিত্বেও একাধিক ডিভাইস নিয়ে আসা হয়েছে। যা গ্রাহকদের ‘ট্রু ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভিশন’ এর দিকে ত্বরান্বিত করবে।”

কনজিউমার স্যাটিসফ্যাকশন সেকশনে, আইটেল ব্র্যান্ড ৯৮% স্কোর করেছে। অন্যদিকে, রিয়েলমি এবং শাওমি যৌথ ভাবে ৯৬% রেটিং পেয়েছে। শহরভিত্তিক পরিসংখ্যান দেখলে, itel, বেঙ্গলুরু, চণ্ডীগড় এবং গৌহাটিতে ১০০% কনজিউমার স্যাটিসফ্যাকশন পেয়েছে। আবার জয়পুর, কলকাতা এবং দিল্লিতে রিয়েলমি এই বিভাগে ১০০% স্কোর করেছে। আর, লখনউ, ভুবনেশ্বর এবং ইন্দোর ভিত্তিক ভোক্তাদের ১০০% সাপোর্ট পেয়ে এগিয়ে আছে শাওমি।

একটি নতুন স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ‘ব্র্যান্ড কন্সিডিরেশন’ কিরূপ তাও জানান দিয়েছে এই সার্ভে। সেক্ষেত্রে, ৫৯% স্কোরের সাথে সবথেকে এগিয়ে আছে আইটেল এবং ৫০% স্কোরের সাথে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্যামসাং। শহরভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৮২% গৌহাটিবাসী এবং ৭৫% জয়পুরবাসী তাদের হ্যান্ডসেটকে আপগ্রেড করার জন্য আইটেলকে বেছে নিয়েছেন। একই ভাবে, ‘ব্র্যান্ড কন্সিডিরেশন’ এর ক্ষেত্রে স্যামসাং, দিল্লিতে ৮৩%, বেঙ্গালুরুতে ৭৮% এবং লাখনৌতে ৭০% পয়েন্ট পেয়েছে।

ব্র্যান্ড ইমেজারি ক্যাটাগরিতে, সহজলভ্যতা, প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এবং আফটার সেল সার্ভিসের নিরিখে স্যামসাং জয়ী হয়েছে। আবার, সাশ্রয়ী দামে ‘ট্রেন্ডি’ টেকনোলজি, স্লীক ডিজাইন এবং উন্নত কোয়ালিটি অফার করার দরুন ক্রেতাদের ভোট আইটেলের ঝুড়িতে পড়েছে। তদুপরি, ডিজাইনের বৈচিত্রতা, প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এবং ক্রয়ের পুনরাবৃত্তির নিরিখে কিন্তু রিয়েলমি সর্বোচ্চ স্কোর করেছে।

ইন্ডাস্ট্রি ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ (IIG), CMR, এর প্রধান প্রভু রামের মতে, “৭,০০০ টাকা স্মার্টফোন সেগমেন্টের ‘ভ্যালু-সিকিং’ ক্রেতাদের জন্য, আইটেল, ধারাবাহিকভাবে ‘বেস্ট ইন ক্লাস’ স্মার্টফোন নিয়ে আসার দিকে মনোনিবেশ করেছে, যা গ্রাহকদের ভারতের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সাহায্যে করবে।”

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥