সেলেবদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানার আমাদের বরাবরই একটা কৌতূহল থাকে। তাঁরা রোজ কী করেন, কী খান, বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাঁদের পছন্দ-অপছন্দের কথা জানতে আমাদের অনেকেরই ইচ্ছে করে। সাম্প্রতিক ডিজিটাল অগ্রগতির যুগে সেলিব্রিটিরা কোন কোন অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার করছেন বা তাঁরা কোন স্মার্টফোন মডেল ব্যবহার করেন, এসব জানতেই এখন মানুষ বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, এবং টেকনোলজি বলতেই যার কথা প্রথমই মনে আসে, তা হল Google। আর এই গুগলের রথের রশি যার হাতে রয়েছে, সেই সুন্দর পিচাই-এর টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা কী, বা তিনি কোন স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, বা অন্য আরও অজানা কথা যদি জানা যায় তবে তো সোনায় সোহাগা! সম্প্রতি BBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের এমনই অনেক কথা জানালেন গুগলের সিইও।
এই সাক্ষাৎকারে পিচাইয়ের জীবনের এমন অনেক কথা প্রকাশ্যে এসেছে যা জানতে বহু মানুষই চরম আগ্রহী। BBC-কে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে পিচাই জানান যে তিনি কতগুলি ফোন ব্যবহার করেন, কতবার তিনি তার পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত অভ্যাস পরিবর্তন করেন।
তার কথা অনুযায়ী, তিনি প্রায়শই তাঁর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করেন না। তিনি ব্যবহারকারীদের প্রায়শই তাদের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার পরিবর্তে “টু-ফ্যাক্টর প্রমাণীকরণ” (two-factor authentication) বেছে নেওয়ার কথা সুপারিশ করেন। কারণ প্রায়ই পরিবর্তন করলে পাসওয়ার্ডগুলি মনে রাখতে সমস্যা হয় এবং গুলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই সেক্ষেত্রে বারংবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার চাইতে two-factor authentication বেছে নেওয়াই সর্বোৎকৃষ্ট উপায়।
পিচাই আরও বলেন যে, তিনি একই সময়ে বিভিন্ন কারণে ২০ টিরও বেশি ফোন ব্যবহার করেন, এবং নতুন নতুন ফোন ক্রমাগত ব্যবহার এবং পরীক্ষা করে দেখতে তিনি চরমভাবে আগ্রহী তথা উৎসাহী। তিনি বলেন যে, তিনি তার সন্তানদের Google-এর মালিকানাধীন YouTube-এ ভিডিও ব্রাউজ করতে দেন, কারণ নতুন প্রজন্মের ক্রমবিবর্তিত প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও, Gmail, Google Chrome, Google Maps, Google Earth, Google Docs, Google Photos এবং Android OS তত্ত্বাবধানকারী পিচাই বলেছেন যে, বিশ্বজুড়ে ফ্রি এবং ওপেন ইন্টারনেট আক্রমণের মুখে রয়েছে। তাঁর মতে, “এই মুহূর্তে মুক্ত ও অবাধ ইন্টারনেটের ধারণাটি বিশ্বের অনেক দেশে আক্রান্ত হচ্ছে। কোন কথাটি ঠিক, কোন কথাটি প্রচার করতে দেওয়া যাবে তা নিয়ে এখন প্রতিটি দেশে বিতর্ক চলছে। এর ফলে মনে হয় বৃহত্তর ছবিটা থেকে আমরা সরে আসছি। অনেক দেশ তথ্যের অবাধ প্রবাহ বা জোগানকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে; অবারিত তথ্য আদান-প্রদানের পথে কঠিন দেওয়াল তুলছে। তাই গণতন্ত্র ও মূল্যবোধের ঐতিহ্যবাহী দেশগুলি যেন ইন্টারনেটের দুনিয়াকে এভাবে বিখন্ডিত করার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। আমার মনে হয়, মুক্ত ও অবাধ ইন্টারনেটের যে ভালো করার অপরিসীম ক্ষমতা রয়েছে এই বিষয়টিতে আমরা প্রাধান্যই দিচ্ছি না।”
সাক্ষাৎকারের সময়, পিচাইকে তার ভারতীয় শিকড় সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি একজন আমেরিকান নাগরিক তবে ভারতীয় সত্তা তার মধ্যে প্রবলভাবে বিদ্যমান। প্রসঙ্গত, গুগলের সিইও ১৯৭২ সালে তামিলনাড়ুর মাদুরাইতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জওহর নবোদয় বিদ্যালয় থেকে স্কুলের পাঠ শেষ করে তাঁর কাঙ্ক্ষিত আইআইটি খড়গপুরে ভর্তি হন এবং metallurgical engineering-এ B Tech অর্জন করেন। এর পরে, তিনি materials science and engineering-এ MS করতে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এবং তারপরে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্টন স্কুল থেকে MBA কমপ্লিট করেন।