প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পরিবহণ সমস্যা ইত্যাদি নানা কারণে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন জাতীয় প্রোডাক্টের শিপমেন্ট বা সাপ্লাই বাজারে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়। যেমন গতবছর করোনা অতিমারী এবং ভারত-চীনের সংঘাতের ফলে সৃষ্ট বিধিনিষেধের জেরে, স্মার্টফোনসহ একাধিক ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বাজারে আসে। আবার, মার্চের শেষে সুয়েজ খালে একটি জাহাজ ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকায়, স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে এটির কিছুটা প্রভাব পড়বে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি, এইসবের থেকেও বাজে কিছু ঘটেছে জনপ্রিয় স্মার্টফোন নির্মাতা Vivo-র সাথে। বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার জেরে বাতিল হয়েছে ব্র্যান্ডের সমস্ত মোবাইলের শিপমেন্ট।
আসলে, দিন কয়েক আগে হংকং বিমানবন্দরে শিপিংয়ের সময় হঠাৎই Vivo Y20 মডেলের একটি চালানে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনার জেরেই, তাদের বিমানের মাধ্যমে আকাশপথে যাতে Vivo-র কোনো মোবাইল ফোনেরই শিপিং না হয় – সেই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হংকং এয়ারলাইনস।
এই বিষয়ে একটি অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের দরুন হংকং এয়ার কার্গো (Cargo) ক্যারিয়ার, ইকোনমিক টাইমস (ET)-কে আফসোসের সাথে জানিয়েছে যে, তারা তাৎক্ষণিকভাবে বিমানে সমস্ত লজিস্টিক কোম্পানির প্রোডাক্টের পরিবহণ নিষিদ্ধ করেছে। একই সাথে ব্যান করা হয়েছে সমস্ত Vivo মোবাইলের শিপমেন্টও। উক্ত দুর্ঘটনায় কিভাবে ফোনগুলিতে আগুন লেগেছিল সেই কারণ নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত এই কোম্পানির স্মার্টফোনের রফতানির অনুমতি মিলবে না।
সেক্ষেত্রে, এই মুহূর্তে কেবলমাত্র একটি বিমান সংস্থাই Vivo-কে এই ধরণের অস্বস্তিতে ফেলেছে, যাতে সংস্থার ব্যবসায় তেমন প্রভাব নাও পড়তে পারে। তবে আগামী দিনে দেশের অন্যান্য এয়ারলাইনগুলিও যদি একই পথে হাঁটে, তাহলে এই মোবাইল ব্র্যান্ডটির যে যথেষ্ঠ মাথাব্যাথার কারণ দেখা দেবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না! বিশেষত যখন সংস্থাটি, বৈদেশিক বাজারে স্মার্টফোন ইম্পোর্টের পাশাপাশি, নিজের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যও ভারতের মত বাজারে প্রচুর ডলার ব্যয় করেছে। এই প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিই, Vivo, চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (IPL) ক্রিকেট টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সরও বটে! এমনকি সংস্থাটি এদেশে স্মার্টফোনের উৎপাদনও শুরু করেছে। অতএব, সংস্থার ওপর লাগু হওয়া এই সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা, ভারতে কোম্পানির কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে কিনা সেটাই এখন দেখার।
বলে রাখি, প্রায় চার বছর আগে ২০১৭ সালে টেক জায়ান্ট Samsung-কে তার Galaxy Note 7 স্মার্টফোনটির সমস্ত ইউনিট ফের তৈরি করতে হয়েছিল, যার ফলে সংস্থাটি কয়েক মিলিয়ন ডলার লোকসানের মুখে পড়েছিল। ওই সময়, সংস্থার বেশ কয়েকটি হ্যান্ডসেটে ব্যাটারি-জনিত সমস্যার কারণে বিস্ফোরণ ঘটার অভিযোগ ওঠে।