জানুয়ারিতে ১৮ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে WhatsApp, সমস্যায় পড়তে পারেন আপনিও?
একাধিকবার জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও অসৎ কার্যকলাপ করতে ইউজাররা পিছপা হচ্ছেন না, আর ফলস্বরূপ বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ইন্সট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ)-ও ক্রমেই কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিগত কয়েক মাসের মতো এবারেও ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং ক্ষতিকারক বা অবাঞ্ছিত তথা স্প্যাম মেসেজ প্রেরণের জন্য, অর্থাৎ সোজা কথায় প্ল্যাটফর্মে অনৈতিক আচরণের জন্য Facebook (এখন Meta)-এর মালিকানাধীন সংস্থাটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতে ১.৮ মিলিয়নেরও (১৮ লক্ষ) বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে WhatsApp-এর দায়ের করা অষ্টম মাসিক গ্রিভান্স কমপ্লায়েন্স রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি জানুয়ারি মাসে ৪৯৫টি অভিযোগ পেয়েছে, যার মধ্যে ২৮৫টি ছিল নিষেধাজ্ঞার আবেদন। এই অভিযোগগুলির উপর ভিত্তি করে ২৪টি অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ছিল ১৩৫টি অ্যাকাউন্ট সাপোর্ট সম্পর্কিত রিপোর্ট, অন্যান্য সাপোর্ট সম্পর্কিত ৩০টি রিপোর্ট, ৩৩টি প্রোডাক্ট সাপোর্ট সম্পর্কিত রিপোর্ট, এবং ১২টি সেফটি রিকোয়েস্ট। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্রের নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী, ৫০ লক্ষের বেশি গ্রাহক রয়েছেন এমন সোশ্যাল সাইটগুলিকে প্রতি মাসে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেইসঙ্গে জানাতে হবে, তাদের কাছে কত অভিযোগ জমা পড়ছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কতগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই এই রিপোর্ট প্রকাশ করা শুরু করেছে হোয়াটসঅ্যাপ।
অ্যাকাউন্ট ব্যানের প্রসঙ্গে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি জানিয়েছে যে, ইউজারদের যাবতীয় ক্ষতিকারক আচরণ রোধ করতে তারা নিজস্ব টুল এবং রিসোর্স ব্যবহার করে, এবং তার মাধ্যমে সনাক্ত করা অ্যাকাউন্টগুলিকেই তারা নিষিদ্ধ করে। কোনো অ্যাকাউন্টে রেজিস্ট্রেশনের সময়, বা মেসেজিং চলাকালীন, বা নেগেটিভ ফিডব্যাকের রেসপন্স দেওয়ার সময় এই টুলগুলি যাবতীয় ক্ষতিকর ক্রিয়াকলাপ চিহ্নিত করতে সক্ষম। সুতরাং, এই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মটিতে কোনোরকমের দুরাচরণ বা দুর্ব্যবহার যে সংস্থার তরফ থেকে বরদাস্ত করা হবে না, তা জলের মতো স্পষ্ট।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, প্ল্যাটফর্মে সমস্ত অবৈধ ক্রিয়াকলাপ রুখতে বিগত কয়েক মাস ধরেই হোয়াটসঅ্যাপ এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। সংস্থার মতে, ইউজারদের স্প্যাম-ফ্রি এবং অত্যন্ত সাবলীল ও নিরাপদ ব্যবহারিক এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করাই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটির মূল উদ্দেশ্য। তাই তা বজায় রাখতে সংস্থাটি এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর। ফলে কোনো ইউজার যদি প্ল্যাটফর্মটিতে কোনো অসৎ কার্যকলাপ করে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতেও তাদের কোনোরকম রেহাই দেওয়া হবে না, তৎক্ষণাৎ তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেওয়া হবে। ফলে আগামী দিনেও যে হোয়াটসঅ্যাপ এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।