ভারতীয় হিসেবে গর্ব, 4G ও 5G -র হাত ধরে টেলিকম যন্ত্রাংশ তৈরিতে বিশ্বকে টেক্কা দেবে ভারত
একরাশ প্রত্যাশা নিয়ে ২০২২ সালের ১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতে লঞ্চ করেছিলেন 5G পরিষেবা। সুদীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ওইদিন নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠতম ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস (IMC 2022) ইভেন্টের মাধ্যমে এদেশে পা রাখে এই দুরন্ত গতির নেটওয়ার্ক সার্ভিস। আর এর পর থেকেই এই বিদ্যুৎ গতির পঞ্চম প্রজন্মের নেট পরিষেবাকে ক্রমাগত একের পর এক শহরে পৌঁছে দিচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই টেলিকম কোম্পানি Reliance Jio এবং Airtel। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, ভারতকে আর্থিকভাবে ব্যাপক উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে 5G সার্ভিস। তাদের মতে, 5G পরিষেবার হাত ধরে ২০২৩ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে ভারত প্রায় ৩৬.৪ ট্রিলিয়ন বা ভারতীয় মুদ্রায় ৩৬.৪ লক্ষ কোটি টাকা লাভের মুখ দেখতে সক্ষম হবে। স্পষ্টতই এই বিদ্যুৎ গতির নেট সার্ভিসের দৌলতে আগামী দিনে ভারতের জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করার সম্ভাবনা প্রবল বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে এর পাশাপাশি সম্প্রতি এই প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে আরও একটি আশাজনক ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় যোগাযোগ, ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Shri Ashwini Vaishnaw)।
4G/5G স্ট্যাককে হাতিয়ার করে ভারত হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম প্রধান টেলিকম প্রযুক্তি রফতানিকারক
পিটিআই (PTI)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শনিবার ইকোনমিক টাইমস গ্লোবাল বিজনেস সামিট ২০২৩-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বৈষ্ণব বলেছেন যে, এদেশে এক যুগান্তকারী ডিজিটাল বিপ্লব আনতে টেলিকম সংস্থাগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তদুপরি, কোনো দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য সেখানে একটি শক্তিশালী টেলিকম সেক্টর থাকা একান্ত আবশ্যক। সেক্ষেত্রে ডিজিটাল ফিল্ডে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলির সঙ্গে পাল্লা দিতে বর্তমানে আমাদের দেশ পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই ভারত তার দেশীয় ৪জি/৫জি প্রযুক্তির স্ট্যাকের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছে। উল্লেখ্য যে, ভারতের খাতে নিজস্ব ৪জি স্ট্যাক আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল। তবে এদেশের ৫জি স্ট্যাকও এখন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। এর দৌলতে আগামী তিন বছরের মধ্যে ভারত বিশ্বের দরবারে একটি গুরুত্বপূর্ণ টেলিকম প্রযুক্তি রফতানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে, যা নিঃসন্দেহে এক দারুণ সুসংবাদ।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, প্রাথমিকভাবে এই ৫জি স্ট্যাকের মাধ্যমে একযোগে ১০ লাখ কল টেস্ট করা হয়েছিল। এরপরে ৫০ লাখ এবং সম্প্রতি এক কোটি কল এটির দ্বারা টেস্ট করা হয়েছে। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে, স্ট্যাকটি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। উল্লেখ্য যে, অন্তত ৯-১০ টি দেশ ভারতের তৈরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখতে চায় বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বর্তমানে দুটি ভারতীয় সংস্থা রয়েছে, যারা গোটা বিশ্বে টেলিকম গিয়ার রফতানি করছে। তবে বৈষ্ণবের কথায়, আগামী তিন বছরের মধ্যে আমরা ভারতকে বিশ্বের প্রধান টেলিকম প্রযুক্তি রফতানিকারক দেশ হিসেবে দেখতে চলেছি; আর মন্ত্রীর এই ভবিষ্যদ্বাণী ১০০ শতাংশ সঠিক হবে বলেই আশা করা যেতে পারে।
২০২৪ সালের মধ্যেই গোটা দেশে উপলব্ধ হতে পারে 5G পরিষেবা
উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের ১ অক্টোবর এদেশে 5G পরিষেবা চালু হয়েছিল। তবে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হল, এরপর মাত্র ১০০ দিনের মধ্যেই টেলিকম সংস্থাগুলি ২০০ টিরও বেশি শহরে এই পরিষেবাকে পৌঁছে দিয়েছে, যা নিঃসন্দেহে খুবই প্রশংসনীয়। এই প্রসঙ্গে বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে, টেলিকম কোম্পানিগুলির এই তৎপরতা এবং অহরহ পরিশ্রম গোটা বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এমনকি অনেক আন্তর্জাতিক ফোরামে এটিকে বিশ্বের কোনো দেশের সবচেয়ে দ্রুততম 5G সম্প্রসারণের ঘটনা বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, Jio এবং Airtel-এর দুর্বার গতির তৎপরতার দৌলতে ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষে ভারতের ২৩৮ টি শহরে 5G পরিষেবা উপলব্ধ হয়ে গিয়েছে। সেইসাথে আশা করা হচ্ছে যে, ২০২৪ সালের মধ্যেই হয়তো সকল দেশবাসী পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন।