ISRO-র গোপন মিশনে চিন্তা বাড়ছে চীন ও পাকিস্তানের, মহাকাশ থেকে চলবে নজরদারি

Update: 2024-10-14 06:21 GMT

গত বছর ISRO-র চন্দ্রযান অভিযানে সফলতা পেয়েছিল। চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল ভারত। এছাড়াও, গত বছর ISRO-র আদিত্য L-1 উৎক্ষেপণ ভারতকে বিশেষ খ্যাতি এনে দিয়েছিল। এবছর ইসরো চলতি বছরের শেষে মিশন গগনযান এবং ২০২৭ সালে শুক্রযান উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই মুহূর্তে ইসরোর তত্ত্বাবধানে ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে তাদের প্রথম মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতেও কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি তারা এই মুহূর্তে এমন একটি গোপন মিশন নিয়ে কাজ করছে, যা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে চীন ও পাকিস্তানে।

ISRO-র গোপন পরিকল্পনা

ইসরো আগামী ৫ বছরে ৫২টি স্পাই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে। আর এই স্যাটেলাইটগুলির উদ্দেশ্য হলো মহাকাশ থেকে এলএসি এবং এলওসি অর্থাৎ চীন ও পাকিস্তানের সীমান্তে সন্দেহজনক কার্যকলাপের উপর নজর রাখা। মনে করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নজরদারি ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।

রিপোর্ট অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ৭ অক্টোবর মহাকাশ ভিত্তিক নজরদারি কর্মসূচির তৃতীয় ধাপের অনুমোদন দিয়েছে, যার অধীনে এই পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন করবে ইসরো।

স্যাটেলাইটগুলির বিশেষত্ব

এই স্যাটেলাইটগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে। আর এগুলিতে সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার, থার্মাল ক্যামেরা, ইনফ্রারেড ক্যামেরা এবং দৃশ্যমান ক্যামেরা দেওয়া হবে। এই স্যাটেলাইটগুলি থেকে পৃথিবীতে স্পষ্ট সংকেত, মেসেজ এবং ছবি পাঠানো সহজ হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২৯ সাল নাগাদ ইসরো মহাকাশে যে ৫২টি স্পাই স্যাটেলাইট স্থাপন করতে চলেছে তার আনুমানিক খরচ প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। আর এই ৫২টি স্যাটেলাইটের মধ্যে ২১টি স্যাটেলাইট তৈরি করবে ইসরো এবং ৩১টি স্যাটেলাইট তৈরি করবে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা৷

কি ভাবে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করবে এই স্যাটেলাইটগুলি

ইসরো এই ৫২টি স্পাই স্যাটেলাইটকে মহাকাশের দুটি ভিন্ন জায়গায় স্থাপন করবে। যার মধ্যে কিছু স্যাটালাইট থাকবে নিম্ন আর্থ অরবিট অর্থাৎ পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১৬০ কিলোমিটার থেকে ২,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। আর বাকি স্যাটেলাইট স্থাপন করা হবে জিও স্টেশনারি অরবিটে, যেটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৩৫,৭৮৬ কিলোমিটার অর্থাৎ প্রায় ৩৬,০০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত।

পৃথিবীর উপরের কক্ষপথে স্থাপিত এই গুপ্তচর উপগ্রহ যদি চীন ও পাকিস্তানের এলাকায় কোনো সন্দেহজনক ঘটনা দেখতে পায়, তাহলে তারা প্রথমে এই মেসেজটি পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থিত স্পাই স্যাটেলাইটে পাঠাবে এবং সন্দেহজনক এলাকা সঠিকভাবে তদন্ত করতে বলবে। তারপর নিচের কক্ষপথে স্থাপিত স্যাটেলাইট গুলি সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সেখানকার সংকেত, মেসেজ ও ছবি সহ যাবতীয় তথ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে পাঠাবে।

যদি ইসরো এই গুপ্তচর উপগ্রহ স্থাপন করতে পারে তাহলে খুব সহজেই ভারত ১,৯৯৯ সালে কার্গিলে পাকিস্তানের অনুপ্রবেশ এবং ২,০২০ সালে চীনা সেনাদের সাথে গালওয়ান সংঘর্ষের মতো ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারবে। কেননা, সন্দেহজনক তথ্য পাওয়া মাত্রই ভারতীয় সেনাবাহিনী তৎপর হয়ে উঠবে এবং চীন ও পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

Tags:    

Similar News