Samsung, Vivo-দের রমরমায় পাঁচ বছর পর শীর্ষস্থান হাতছাড়া Xiaomi-র, একধাক্কায় ফোন বিক্রি কমল
বিগত কয়েক বছরে নানা বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কারণে স্মার্টফোন মার্কেটকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, যার প্রভাব বিক্রিবাটার ওপর পড়ছে। ভারতের স্মার্টফোন বাজারও এর ব্যতিক্রম নয়। আর এখন একটি গবেষণা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২২ সালে ভারতে স্মার্টফোনের শিপমেন্ট ৬% কমে ১৫১.৬ মিলিয়ন ইউনিট হয়েছে। সরবরাহের সমস্যা এবং গ্লোবাল মাইক্রোইকোনমির প্রতিকূলতার কারণে চাহিদা হ্রাসের জন্য এই পতন ঘটেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে এই প্রথম ভারতীয় স্মার্টফোনের বাজারে পতন দেখা গেছে, শিপমেন্ট ২৭ শতাংশ কমে ৩২.৪ মিলিয়ন ইউনিটে পৌঁছেছে।
ভারতে স্মার্টফোন শিপমেন্টের ক্ষেত্রে এই প্রথম চতুর্থ ত্রৈমাসিকে হ্রাস, শীর্ষস্থান হারালো Xiaomi
ক্যানালিস-এর রিপোর্টে অনুযায়ী, ২০২২ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে, স্যামসাং (Samsung) ৬.৭ মিলিয়ন ইউনিট স্মার্টফোন প্রেরণ করেছে এবং ২১% মার্কেট শেয়ার দখল করেছে। জানিয়ে রাখি, দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিটি ২০১৭-এর তৃতীয় ত্রৈমাসিকের পর এই প্রথম কোনও কোয়ার্টারে শীর্ষস্থান অধিকার করলো। ভিভো (Vivo) তাদের স্মার্টফোনের ৬.৪ মিলিয়ন ইউনিট প্রধানত অফলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে প্রেরণ করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে, টানা পাঁচ বছর বা ২০টি ত্রৈমাসিকের জন্য তালিকার শীর্ষে থাকা শাওমি (Xiaomi) ৫.৫ মিলিয়ন ইউনিট শিপমেন্টের সাথে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে।
তবে, শাওমি এখনও সারা বছরের হিসেবে প্রথম স্থানেই রয়েছে, আর ওপ্পো (Oppo) এবং রিয়েলমি (Realme) যথাক্রমে ৫.৪ মিলিয়ন এবং ২.৭ মিলিয়ন ইউনিট শিপমেন্টের সাথে চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানটি বজায় রেখেছে। ক্যানালিসের বিশ্লেষক সানিয়াম চৌরাসিয়া, এই শিপমেন্টের হ্রাসের জন্য স্থানীয় ক্রেতাদের টাকা জমানোর অভ্যাস এবং সেইসাথে ক্রয়ের বিলম্বের কারণ ক্রেতাদের কাছে ইতিমধ্যেই অতিমারি চলাকালীন কেনা লেটেস্ট প্রযুক্তি থাকাকে দায়ী করেছেন। এর ফলে স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে সমস্যায়।
এছাড়াও, চৌরাসিয়া স্মার্টফোন সরবরাহকারীদের জন্য চতুর্থ ত্রৈমাসিকে দুর্বল ই-কমার্স বিক্রয়ের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যেগুলি প্রচুর পণ্য ইনভেন্টরির সাথে প্রাথমিকভাবে অনলাইন চ্যানেলগুলিতে ফোকাস করে। অন্যদিকে, ভিভো এবং ওপ্পো-এর মতো নির্মাতারা যারা তৃতীয় এবং চতুর্থ-স্তরের শহরগুলিতে অফলাইন চ্যানেলগুলিতে ফোকাস করে, তারা আগের বছরের তুলনায় সরবরাহ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, শিপমেন্ট কমে যাওয়া সত্ত্বেও, সানিয়াম চৌরাসিয়া ভারতের দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী। তিনি বলেছেন যে, ২০২৪ সালে ভারতের অর্থনীতি কামব্যাক করতে পারে। সরকার সেই বছর সাধারণ নির্বাচন করবে এবং এর ফলে গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ক্যানালিস আশা করে যে, ২০২৩ সালে অর্থাৎ এ বছর ভারতীয় স্মার্টফোনের বাজারে সামান্য হলেও উত্থান দেখা যাবে। কারন দেশজুড়ে ফাইভ-জি পরিষেবার প্রসার এবং এই নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে এমন ফোনের চাহিদা বৃদ্ধির আশা।