ইউটিউব ভিডিও লাইক করার পার্ট টাইম জব করছেন? এই ব্যক্তির মতো সর্বস্বান্ত হবেন আপনি
কোভিড১৯-এর পর ওয়ার্ক ফ্রম হোম (Work From Home) একটি সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। যেখানে বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই নানান কাজ করা যায়। তবে এর ফায়দা তুলতেও উঠে পড়ে লেগেছে জালিয়াতরা। গত কয়েক মাসের মধ্যেই তারা কয়েক হাজারেরও বেশি মানুষকে ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করেছে। এর মধ্যে কিছু ঘটনা পুলিশের মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে, আবার কিছু ঘটনা হয়তো প্রকাশ পায়নি। সম্প্রতি আমেদাবাদে ওয়ার্ক ফ্রম হোম স্ক্যামের ফাঁদে পড়ে চল্লিশ লাখ টাকা হারিয়েছেন এক ব্যক্তি।
আবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, দেব্যাং চৌহান নামের এক ৩ডি ডিজাইনার সহজে অর্থ উপার্জনের ফাঁদে পড়ে ৪০ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন। ২১ এপ্রিল, ওই ব্যক্তি তার হোয়াটসঅ্যাপে একটি অজানা নম্বর থেকে পার্ট টাইম চাকরি সম্পর্কিত একটি মেসেজ পান। তারপর সেই সম্পর্কে আরও জানার জন্য, মেসেজে দেওয়া নম্বরে কল করলে তাকে কিছু ইউটিউব ভিডিও লাইক এবং শেয়ার করার একটি কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়। আর এই কাজের জন্য তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা অফার করাও হয়।
অভিযোগকারী ওই ব্যক্তি জানান যে, তাকে প্রতি ঘন্টায় তিনটি ভিডিও লাইক করতে বলা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করতে নির্দেশ দেওয়া হয়, আর জানানো হয় এর জন্য ভিডিও প্রতি তাকে ৫০ টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হবে। এই ভাবে তিনি প্রথম ১৫০ টাকা উপার্জন করেন এবং এরপর তাকে ১৬৬ জনের একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে জয়েন করানো হয়।
তিনি আরও জানান, কাজ শুরু করার আগে তাকে ১৫০০ টাকা জমা দিতে বলা হয়েছিল। আর কাজটি শেষ করার পর ৪০০ টাকা পারিশ্রমিকের সাথে তার টাকাটি ফেরত দেওয়া হয়। অর্থাৎ তিনি তখন মোট ১৯০০ টাকা ফেরত পান। পরের বার কাজের জন্য তার কাছে ২০৫০ টাকা নেওয়া হলেও কাজ শেষে তিনি কোনো টাকা ফেরত পাননি।
পরিবর্তে তাকে অন্য টাস্ক অফার করে উচ্চ আয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এরপর জাহানবি সিং, মোনা, রোজানা ও লুসি নামের কয়েকজন অপরিচিত মহিলা ফোন করে এই কাজগুলি করার জন্য তাকে উৎসাহিত করেন। এমনকি কোম্পানির একটি ওয়েবসাইটে ভিক্টিমের রেজিস্ট্রেশন এবং নিয়মিত সমস্ত পেমেন্ট-এর আপডেটও দেওয়া হয়। এর ফলে কাজটিকে বৈধ বলে বিশ্বাস করে আরো অর্থ উপার্জনের আশায় ভিক্টিম কাজ করতে রাজি হন এবং আরও একাধিক টেলিগ্রাম গ্রুপের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন। কাজগুলি পাওয়ার জন্য তিনি প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করেন। তবে তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা ফেরত আসেনি। তিনি টাকা তোলার চেষ্টা করলে প্রতারকেরা তার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয় এবং তাকে জানানো হয় তিনি কোনো থাম্বস ডাউন অপশনে ক্লিক করেছেন যার ফলে তার পেমেন্ট ব্লক হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় ট্যাক্স জমা দেওয়ার জন্য প্রতারকরা নাকি তাকে ব্ল্যাকমেলও করে এবং ট্যাক্স হিসেবে তিনি ওই ব্যক্তিকে ১১ লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়। এরপর দেব্যাং চৌহান বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন এবং তারপরই তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।