Smart Phone: আলাদা আলাদা নামে একই ফিচারের ফোন বেচছে স্মার্টফোন কোম্পানিরা, কীভাবে ঠকছেন দেখুন
ভারতীয় স্মার্টফোন মার্কেট যথেষ্ট প্রতিযোগিতা পূর্ণ। বিশেষ করে মিডরেঞ্জ সেগমেন্টে এই প্রতিযোগিতা দিন দিন আরো গুরুতর রূপ ধারণ করছে। এমন সময় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি তাদের সেল বজায় রাখারও যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। আর এর জন্য অনেকে আবার শটগান স্ট্র্যাটেজিও ব্যবহার করছে। অর্থাৎ, তারা কিছুদিন অন্তর অন্তর নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ করে ক্রেতাদের আকর্ষিত করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও, কিছু কিছু ব্র্যান্ড আবার একই ফিচার এবং হার্ডওয়্যার বিশিষ্ট স্মার্টফোন বিক্রি করছে অন্য সিরিজ বা ব্র্যান্ডের নামে। তবে, এই কৌশলগুলি কতটা ঠিক, আর ভবিষ্যতে ভারতীয় Smartphone বাজারে এর কেমন প্রভাব পড়তে পারে সে সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রতিবেদনে।
স্মার্টফোন রি-ব্র্যান্ডিংয়ের কৌশলটি একেবারেই নতুন নয়। আর বাজারকে চলমান রাখার জন্য এই পদক্ষেপ অনেকের কাছেই যথাযথ বলে মনে হতে পারে। তবে, যখন একই ফিচার বিশিষ্ট কোনো বিশেষ ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন অন্য কোনো ব্র্যান্ডের কাছে সস্তায় পাওয়া যায়, তখন স্বাভাবিক ভাবেই ক্রেতাদের মনে এই মডেলগুলি সম্পর্কে সন্দেহ জাগে। এছাড়াও, ক্রেতাদের মনে ব্র্যান্ডের মান, উদ্ভাবন, বিপণন এবং ব্র্যান্ডের আনুষাঙ্গিক বিষয় সম্পর্কেও বিভিন্ন প্রশ্ন জন্ম নেয়।
আরও পড়ুন : 256 জিবি স্টোরেজের চমৎকার স্মার্টফোন আনছে Vivo, সঙ্গে থাকবে 12 জিবি র্যাম
উদাহরণস্বরূপ, Vivo এবং IQOO এই দুই ব্র্যান্ডের বেশিরভাগ মডেলে দাম ছাড়া কোনো পার্থক্য নেই। জানিয়ে রাখি, Vivo-এর একটি সাব ব্র্যান্ড হলো IQOO, আর নীচে ছবিতে দেওয়া দুটি স্মার্টফোন এক সপ্তাহের ব্যবধানে তারা লঞ্চ করেছিল। যাতে একই ডিজাইন, একই চিপসেট, একই র্যাম, স্টোরেজ, ডিসপ্লে এবং একই রকম ক্যামেরা স্পেস ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু পার্থক্য রাখা হয়েছে দুটির দামে।
উদাহরণস্বরূপ আরেকটি ছবি দেখে নেওয়া যাক, যেখানে আগের মতোই দুটি সিস্টার কোম্পানি ডিজাইন এবং ফিচার একই রেখে ভিন্ন দুটি সেট লঞ্চ করেছে। আর এখানে দুটি ট্যাবের মধ্যে দামের ব্যবধান রেখেছে মাত্র 2,000 টাকা।
এছাড়াও, চলতি বছরের শুরুর দিকে আমরা অন্য একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডকে ভারতীয় বাজারে এমন একটি স্মার্টফোন সিরিজ লঞ্চ করতে দেখেছি, যার সব কটিতেই একই ধরনের ডিজাইন এবং ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে। শুধুমাত্র বিশেষ কিছু স্পেসিফিকেশন এবং দাম ছাড়া বাকি সবকিছুই এই ডিভাইসগুলিতে একই রাখা হয়েছিল।
সংস্থাগুলি কেন এরকম করে?
সংস্থাগুলি কেন এরকম করে এর সঠিক কোনো উত্তর না থাকলেও, মনে করা হচ্ছে যে, যখন কোনো ব্র্যান্ড একের পর এক স্মার্টফোন লঞ্চ করে, তখন সংস্থাটি খবরের শিরোনামে থাকে। এছাড়াও, ব্যবহারকারীদের কাছে সেই কোম্পানির ওই নির্দিষ্ট লাইনআপ থেকে বেছে নেওয়ারও একাধিক অপশন থাকে।
আরও পড়ুন : Jio PhoneCall AI: ভয়েস ট্রান্সলেট সহ টেক্সটে রুপান্তর, কীভাবে জিও ফোনকল এআই ব্যবহার করবেন
তবে, যে ব্র্যান্ডগুলি আমাদের কাছে সিস্টার ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত, সেগুলির মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে থাকে। এরমধ্যে একটি ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন অফলাইনে বিক্রি করা হয়ে থাকে, আরেকটি অনলাইনে একচেটিয়া ভাবে বিক্রি করা হয়। যার ফলে সংস্থাগুলি অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্রেতাদেরই নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়।
এছাড়াও, অত্যধিক দামি স্মার্টফোনগুলি ব্যবহারকারীরা ফিজিক্যাল স্টোর থেকে কেনাই পছন্দ করে থাকে। তাই, মূল ব্র্যান্ডের ডিভাইসগুলি সাধারণত অফলাইন স্টোরে এবং সাব-ব্র্যান্ড ডিভাইসগুলি অনলাইন স্টোরে উপলব্ধ হয়।
তবে আপাতদৃষ্টিতে স্মার্টফোন ক্লোনিংকে চতুর বিপণন কৌশল বলে মনে হলেও শেষ পর্যন্ত এটি ভোক্তা এবং বাজারের উপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। যার ফলে ক্রেতাদের ব্র্যান্ডের উপর আস্থা এবং আনুগত্য ক্ষুন্ন হয়। তবে, ক্লোনিং-এর ফলে স্মার্টফোনগুলিতে কেবল ছোটখাটো পরিবর্তন বাদে বাকি সবকিছুই যেহেতু একই রকমের থাকে, তাই স্মার্টফোন কেনার সময় তাদের কাছে একাধিক অপশনও থাকে। যার ফলে তারা ভেবেচিন্তে নিজের বাজেট অনুযায়ী একটি স্মার্টফোন কিনতে পারেন।