Valentine's Day: সে আপনাকে মনে মনে ভালোবাসে? জানিয়ে দেবে এই ক্যামেরা
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইন্স ডে (Valentines Day)। প্রেমের মরসুমে আজ শুধুই ভালোবাসা ছড়ানোর দিন। যদিও অনুরাগ কিংবা প্রেমের বহিঃপ্রকাশের আলাদা করে কোনো দিন হয় না, কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতায় এই একটা দিনই ভালবাসার জন্য বরাদ্দ। তাই বছরের অন্যান্য দিনগুলির তুলনায় আজকের দিনটাকে একটু স্পেশাল করে তুলতে কমবেশি সকলেই বিশেষ আয়োজনের বন্দোবস্ত করেছেন। আবার অনেকেই হয়তো প্রিয় মানুষটিকে মনের কথা এখনও বলে উঠতে পারেননি, কিন্তু আজকের দিনেই তা বলে ফেলার প্ল্যান করছেন। তবে এর মাঝে রয়েছে একটি সমস্যা! আসলে তারা এখনও ঠিক নিশ্চিত হতে পারছেন না যে, অপর প্রান্তের মানুষটির মনেও আদৌ বিশেষ কোনো অনুভূতি রয়েছে কি না। সেক্ষেত্রে আপনিও যদি বর্তমানে এরকম কোনো দ্বিধাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে থাকেন, তাহলে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি অবশ্যই একবার পড়ে নিন। কারণ এখন কেউ আপনাকে ভালোবাসে কি না, তা প্রযুক্তির সাহায্যে জেনে ফেলা যাবে! আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিকই বলছি; চলতি সময়ে মার্কেটে এমন একটি টেকনোলজি উপলব্ধ রয়েছে, যার সহায়তায় আপনি কাউকে ভালবাসেন কি না, তা অতি অনায়াসেই জেনে ফেলা সম্ভব।
আপনি প্রেমে পড়েছেন কি না, তা জানিয়ে দেবে থার্মাল ক্যামেরা!
বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি সময়ে থার্মাল ক্যামেরার সাহায্যে আপনার সঙ্গী বা আপনি প্রেমে পড়েছেন কি না, তা খুব সহজেই শনাক্ত করা যাবে। ইউনিভার্সিটি অব গ্র্যান্ডার গবেষকরা দাবি করেছেন যে, কোনো ব্যক্তি প্রেমে পড়েছেন কি না, তা থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরার সাহায্যে অতি অনায়াসেই জেনে ফেলা যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, হাতেনাতে বিষয়টির পরীক্ষালব্ধ ফলাফল পাওয়ার জন্য বিজ্ঞানীরা ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবকের সাথে কাজ করেছিলেন, যাদের বয়স ২৪ থেকে ৪৭ বছরের মধ্যে ছিল। এই সমস্ত স্বেচ্ছাসেবকরা গত কয়েক সপ্তাহে একটি নতুন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে এই গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সংগ্রহ করেছিলেন, এবং সেখান থেকেই জানা গেছে যে, থার্মাল ডেটা ইউজারদের আবেগ শনাক্ত করতে সহায়ক।
থার্মাল ক্যামেরা টেকনোলজি কীভাবে কাজ করে?
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, আলোচ্য বিষয়টির পরীক্ষালব্ধ ফলাফল হাতেনাতে পাওয়ার জন্য সকল সেচ্ছাসেবকদেরকে একটি থার্মোগ্রাফিক (হিট-ইমেজিং) ক্যামেরার সাহায্যে স্ক্যান করার পরে তাদেরকে কম্পিউটার স্ক্রিনে বেশ কিছু ছবি দেখানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে অর্ধেক সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবককে তাদের রোমান্টিক সঙ্গীর ছবি দেখানো হয়েছিল এবং বাকিদের সামনে রাখা হয়েছিল তাদের বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের ছবি। ছবি দেখানোর পর স্বেচ্ছাসেবকদের দেহের তাপীয় অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কিত ডেটা সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীরা দুই দলের থার্মাল ডেটার তুল্যমূল্য বিচার করেছিলেন। সেক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, রোমান্টিক সঙ্গীর ছবি দেখার সময় স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরের তাপমাত্রা একধাক্কায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে।
কী কারণে ঘটলো শরীরের তাপমাত্রার পরিবর্তন?
এখন প্রশ্ন হল, ঠিক কী কারণে এরকম ঘটনা ঘটলো? এর জবাবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, যখনই কেউ তার ভালোবাসার মানুষের ছবি দেখতে পায়, তখন তার অভ্যন্তরীণ আবেগের ওপর ভিত্তি করে শরীরে বেশ কিছু তাৎক্ষণিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এর ফলে গাল, হাত, বুক এবং মুখের চারপাশের তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পায়, যা থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরার সাহায্যে শনাক্ত করা সম্ভব। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, সাধারণ ক্যামেরার সঙ্গে এই ক্যামেরার আকাশপাতাল ফারাক রয়েছে। অর্থাৎ, দৈনন্দিন জীবনে কিন্তু চাইলেই এই ধরনের ক্যামেরাকে যখন খুশি কাজে লাগানো যাবে না, এটি কেবলমাত্র গবেষণাগারেই বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করে থাকেন।
প্রেমে পড়া অনেকটা মদের নেশায় আসক্ত হওয়ার মতো
গবেষকদের মতে, প্রেমে পড়লে মানুষের মনে মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্ত হওয়ার মতো অনুভূতি জাগে। এমনিতে প্রিয় মানুষকে আচমকা সামনে দেখলেই হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, কিংবা নার্ভাস হয়ে যাওয়া বা হঠাৎ করে ঘেমে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলি আকছার ঘটেই থাকে; তবে এর যৌক্তিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন যে, প্রেমে পড়লে মস্তিষ্ক থেকে বিভিন্ন রাসায়নিক নিঃসারিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে ডোপামিন, অক্সিটোসিন, অ্যাড্রেনালিন এবং ভ্যাসপ্রেসিন। এর ফলে মানবদেহে বিভিন্ন রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অর্থাৎ সহজে বললে, ভালোবাসা শুধু আবেগের সঙ্গেই নয়, শরীর এবং মনের সাথেও সম্পর্কিত, যে কারণে প্রেমে পড়লে গোটা মানবশরীরে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে এতদিন পর্যন্ত এই সমস্ত কথা তো হামেশাই বিভিন্ন জায়গায় শোনা যেতো, কিন্তু এখন থার্মাল ক্যামেরা গোটা বিষয়টি হাতেনাতে প্রমাণ করে দেখিয়ে দিল।