গতির বলি জনপ্রিয় ইউটিউবার, 300 কিমি স্পিডে বাইক রেস করতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু
১৪২ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে সড়ক দুর্ঘটনা পূর্বের তুলনায় কিছুটা কমলেও আজও তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ। অবশ্য সড়ক দুর্ঘটনার পিছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালকের ভুল খুঁজে পাওয়া যায়। এমনই এক মুহূর্তের ভুলে গতির বলি হল নামকরা ভারতীয় ইউটিউবার অগস্ত চৌহান। গত ৩রা মার্চ যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে তীব্র গতিতে বাইক চালানোর সময়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। আলিগড় এর ডিআইজি, আনন্দ কুলকার্নি দাবি করেন এই ইউটিউবার তার Kawasaki Ninja ZX-10R নিয়ে ৩০০ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগ তোলার চেষ্টা করার সময়ই ঘটে যায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত বুধবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ বাইক নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এই ব্যক্তি। প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা গিয়েছে, আগ্রা থেকে দিল্লি অভিমুখে যাওয়ার সময় এই এক্সপ্রেসওয়ের ৪৭ কিমি মাইলস্টোনের সামনেই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। প্রচন্ড গতিতে বাইক চালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের মাঝে থাকা ডিভাইডারে ধাক্কা মারে তার বাইক। খবর পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স সেই স্থানে পৌঁছালেও দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
প্রথমে মৃতদেহ ও তার বাইকটি পুলিশ তার নিজের হেফাজতে নিলেও পরবর্তী সময়ে গ্রেটার নয়ডাতে অবস্থিত কৈলাস হাসপাতালে এই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার সময়ে প্রচন্ড জোরে ডিভাইডারে ধাক্কা লাগার কারণেই তার হেলমেটের অংশ ভেঙে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। যদিও নতুন কোন তথ্যসূত্র পাওয়ার আশায় পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
অগস্ত কয়েক বছর ধরেই একটি ইউটিউব চ্যানেল চালিয়ে আসছেন। এর আগেও বেশ কিছু বার বাইক নিয়ে এমন বিপদজনক কেরামতি করার জন্য পুলিশের খাতায় তার নাম উঠেছে। চলতি বছরের শুরুতেই দেরাদুনের রাস্তায় এমন কাজের জন্যই ভারতীয় পেনাল কোড এবং মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট এর অন্তর্গত বেশ কিছু ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাছাড়াও সূত্রের খবর অনুযায়ী মোটরসাইকেল নিয়ে সাধারণ রাস্তায় বিপদজনক স্টান্ট প্রদর্শনের জন্য যে ১২ জন ব্লগারকে চিহ্নিত করা হয়েছিল তাদের মধ্যে অগস্তও ছিলেন একজন।
পুলিশদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে এই দুর্ঘটনার আগেই করা একটি ভিডিওর মাধ্যমে এই ইউটিউবার ঘন্টা প্রতি ৩০০ কিমি গতিতে এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে বাইক চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে এই দিন দুর্ঘটনার সময় তিনি একা বাইক চালাচ্ছিলেন নাকি তার সঙ্গে আরও অনেকে ছিল সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। যদিও সেই এলাকার কয়েকজনের দাবি এই বাইকটি নির্ধারিত গতির তুলনায় অনেক বেশি গতি নিয়ে ছুটে চলেছিল এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে। এই দলের মধ্যে ছিল মোট পাঁচজন যার মধ্যে তিনজন আগেই ইউ টার্ন নিয়ে ফিরে যায়।
প্রসঙ্গত, যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে সহ এমন বেশ কিছু রাস্তায় অনেক সময় প্রচন্ড গতিতে গাড়ি চালানোর নেশায় নিজেদের জীবন সংকট ডেকে আনেন অনেকে। গত বছরই পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়েতে এমনই উচ্চগতির জন্য একটি BMW সরাসরি গিয়ে ধাক্কা মারে ট্রাকের সঙ্গে। গাড়ির মধ্যে থাকা চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। এক্ষেত্রেও দুর্ঘটনার পূর্বে গাড়িটির গতিবেগ ছিল ২৩০ কিমি/ঘণ্টা। ভেতরের এই চার যাত্রীর মধ্যে একজনের করা ভিডিও অনুযায়ী তারা ৩০০ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগ অর্জন করার চেষ্টায় সম্পূর্ণভাবেই মত্ত ছিল।