ভারতে প্রতি বছর পথ দুর্ঘটনায় বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। আর গাড়ি দুর্ঘটনায় যাত্রীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ পর্যাপ্ত সংখ্যায় এয়ারব্যাগের অনুপস্থিতি। যা নিয়ে গত বছর কড়া মনোভাব দেখিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছিল যে, ২০২৩-এর ১ অক্টোবর থেকে বিক্রি হওয়া সমস্ত গাড়িতে কমপক্ষে ছয়টি এয়ারব্যাগ আবশ্যক। কিন্তু গাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতাদের উপর চাপ আসবে বলে কেন্দ্রের এই নির্দেশে দ্বিমত প্রকাশ করেছিল মারুতি সুজুকি (Maruti Suzuki)-র মতো আরও একাধিক নির্মাতা। অবশেষে ছয়টি এয়ারব্যাগ বাধ্যতামূলক করার অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়ে কার্যত ডিগবাজি খেল কেন্দ্র। গতকাল কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী নিজে এ কথা বলেছেন।
দেশের প্যাসেঞ্জার ভেহিকেলে ছয়টি এয়ারব্যাগ আর বাধ্যতামূলক নয়
বুধবার একটি অটোমেটিক কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের ইভেন্ট থেকে গডকড়ী বলেন, “আমরা ভারত নিউ কার অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম বা বিএনক্যাপ (BNCAP) চালু করেছি। সেখানে ফাইভ স্টার সেফটি রেটিং পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ছ’টি এয়ারব্যাগ আবশ্যক। ফলে সুরক্ষা সচেতন ক্রেতাদের জন্য নির্মাতাদের ছ’টি করে এয়ারব্যাগ রাখতেই হবে।” তাই এটি বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করছেন তিনি। ফলে অতিরিক্ত এয়ারব্যাগ আবশ্যক না হওয়ার কারণে উৎসবের মরসুমে গাড়ির দাম বাড়ার সম্ভাবনা কমে গেল।
প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বরে এক বিবৃতি প্রকাশ করে গডকড়ী বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে ভারতের সমস্ত প্যাসেঞ্জার ভেহিকেলে ছয়টি এয়ারব্যাগ বাধ্যতামূলক করা হবে। একটি গাড়ি সংস্থার কর্তা জানান, “পুজোর আগে ছয়টি এয়ারব্যাগ বাধ্যতামূলক না করার সিদ্ধান্ত উত্তম বিষয়। অতিরিক্ত চারটি নতুন এয়ারব্যাগ যুক্ত হলে গাড়ির দাম কমপক্ষে ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা বেড়ে যেত।”
তিনি যোগ করেন, বিগত চার বছরে ক্রমাগত কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি এবং নতুন মাপকাঠি লাগু হওয়ার কারণে ছোট গাড়ির দাম ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে। ফলে নতুন গাড়ি অনেকের ক্ষেত্রেই হাতের নাগালে বাইরে চলে গিয়েছে।” তাই ক্রেতাদের ওপর বাড়তি বোঝা চাপাতে নারাজ কেন্দ্র।
এদিকে ভারতেও রেটিং দেখে গাড়িতে সুরক্ষার মান যাচাই করার উদ্দেশ্যে ১ অক্টোবর থেকে নয়া নিয়ম আনছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই ‘ভারত নিউ কার অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রামের’ বা বিএনসিএপি খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। যারা এদেশে বিক্রিত এবং আমদানিকৃত গাড়ির ক্র্যাশ টেস্টের উপর ভিত্তি করে ‘স্টার রেটিং’ দেবে।