Ola বা Bajaj কেউই এমন সুবিধা দিচ্ছে না, Hero Vida V1 কিনতে আপনারও ইচ্ছা করবে যে কারণে
২০২২ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে যানবাহনের সম্ভার প্রত্যহ বেড়েই চলেছে। সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে ইলেকট্রিক টু-হুইলারের। প্রায় প্রতি মাসে কোনো না কোনা নতুন বা স্টার্টআপ সংস্থা হাজির হচ্ছে তাদের নয়া মডেলের ডালি সাজিয়ে। তেমনই ক'দিন আগে দেশের বৃহত্তম স্কুটার ও মোটরসাইকেলের বৃহত্তম নির্মাতা হিরো মোটোকর্প (Hero MotoCorp) তাদের প্রথম ইলেকট্রিক স্কুটার লঞ্চ করেছে। ভিডা (Vida) সাব-ব্র্যান্ডের আওতায় আনা হয়েছে V1 নামক স্কুটার। যার দুটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে – Vida V1 Plus ও Vida V1 Pro। বাজারে অন্য সংস্থাগুলির মধ্যে কেউউ দিচ্ছে না, এমন কিছু সুবিধা রয়েছে হিরোর বৈদ্যুতিক স্কুটারে। ক্রেতারা কোন কারণগুলির জন্য এটি পছন্দ করছেন, আসুন সেগুলি জেনে নেওয়া যাক।
একাধিক চার্জিং অপশন
যেখানে ভারতের বাজারে উপলব্ধ বেশিরভাগ ইলেকট্রিক স্কুটারে সিঙ্গেল চার্জিং বিকল্প উপলব্ধ, সেখানে Vida V1 তিন ধরনের চার্জিং অপশন অফার করে। প্রথমটি হলো একটি বেসিক চার্জার যেটি সিটের নিচে রাখার যায়। আবার গ্রাহকরা পোর্টেবল চার্জারের মাধ্যমে এর ব্যাটারি চার্জ করাতে পারবেন। এছাড়া হিরোর বিনিয়োগ থাকা Ather-এর সাড়ে পাঁচশোর বেশি চার্জ গ্রিড থেকেও Vida V1 চার্জ দেওয়া যাবে।
রিমুভেবল ব্যাটারি
Vida V1 স্কুটারটির সবচেয়ে আকর্ষণের বিষয় হল, এতে রয়েছে একটি রিমুভেবল ব্যাটারি। অর্থাৎ বডি থেকে খুলে পছন্দমতো জায়গায় ব্যাটারিটি চার্জে বসানো যাবে। অর্থাৎ যাদের নিজস্ব পার্কিং স্পট নেই তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধার এই ফিচার। ব্যাটারিটির ওজন ১১.৫ কেজি। তবে স্কুটার থেকে ব্যাটারি দুটি না খুলে চার্জে দিতে গেলে গ্রাহকদের আলাদা ভাবে হোম চার্জার কানেক্টর কিনতে হবে। আবার কেউ চাইলে একটি ব্যাটারি সমেতও স্কুটারটি চালাতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে গতিবেগ কমে ৬৫ কিমি/ঘন্টা দাঁড়াবে।
রেঞ্জ
Hero Vida V1 Pro ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে একটি বৃহৎ ৩.৯৪ কিলোওয়াট আওয়ার ব্যাটারি। যেটি একে ১৬৪ কিমি রেঞ্জ পেতে সঙ্গত দেবে। অন্যদিকে তুলনামূলক ছোট (৩.৪৪ কিলোওয়াট আওয়ার) ব্যাটারি থাকার কারণে Vida V1 Plus-এর রেঞ্জ ১৪৩ কিমি।
স্টাইলিং
সদ্য লঞ্চ হওয়া Vida V1-এর আধুনিক ডিজাইন বহু মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো স্টাইলের দিক থেকে এটিকে ইলেকট্রিক স্কুটার বলে মনেই হয় না। একটি প্রথাগত জ্বালানির স্কুটারের ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এতে। Vida V1-এ আছে অল এলইডি লাইটিং, এবং BMW-র থেকে অনুপ্রাণিত এলইডি ডিআরএল। এছাড়া রয়েছে ফ্লোটিং অ্যাপ্রন, ডায়মন্ড কাট অ্যালয় হুইল, Bajaj Chetak-এর ন্যায় ফাইবারের বডি প্যানেল, যা স্কুটারটিকে আরও আকর্ষণীয় এবং স্পোর্টি লুক দিয়েছে।
ফিচার্স
হিরোর ইলেকট্রিক স্কুটার Vida V1-এ রয়েছে একগুচ্ছ ফিচার। যার মধ্যে উভয় মডেলে সাধারণ ফিচারগুলি হল নাইট মোড যুক্ত একটি বৃহৎ টিএফটি টাচস্ক্রিন। ডিসপ্লেটির টাচ ফাংশনালিটি চমৎকার। এবং UI-এর কার্যকারিতাও বেশ সহজসাপেক্ষ। এছাড়া ফিচারের তালিকায় উপস্থিত পার্কিং অ্যাসিস্ট, ক্রুজ কন্ট্রোল, চারটে রাইডিং মোড, S.O.S বাটন এবং জিও ফেনসিং। আবার সিটের তলায় ২৬ লিটারের স্টোরেজ উপলব্ধ, যেখানে একটি হেলমেট খুব সহজেই এঁটে যাবে।
বিশ্বাসযোগ্যতা
বর্তমান দিনে কিছু অপ্রীতিকর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জন্য ইলেকট্রিক স্কুটারের প্রতি বহু মানুষের মন থেকে ‘বিশ্বাস’ শব্দটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু এবারে তার উলটপূরাণ ঘটিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ইতিহাস রচনা করতে মাঠে নেমেছে হিরো মোটোকর্প। Vida V1 স্কুটারটি এদেশে বাইব্যাক পলিসি সহ বিক্রি করছে সংস্থা। অর্থাৎ ব্যবহারের পর সেটি মনপসন্দ না হলে ১৮ মাসের মধ্যে স্কুটারটি ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। যার বিনিময়ে স্কুটারের প্রায় ৭০% দাম ক্রেতাদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে হিরো মোটোকর্প।
আবার স্কুটারটি কেনার আগে গ্রাহকরা তিন দিন টেস্ট রাইড করে দেখার সুযোগ পাবেন। এছাড়া স্কুটারটিতে রয়েছে রোড সাইড রিপেয়ার পরিষেবা। অর্থাৎ রাস্তায় ই-স্কুটার বিকল হয়ে গেলে সংস্থার প্রযুক্তিবিদরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেটি মেরামত করে দেবেন। যা ভারতীয়দের কাছে একটি ইলেকট্রিক স্কুটারে এ জাতীয় পরিষেবা এই প্রথম বলা যায়।