পশ্চিমবঙ্গবাসী কে জোর ধাক্কা Airtel এর, সিম চালু রাখতে রিচার্জ করতে হবে ১৫৪ টাকা

গত বছরের শেষের দিকে শুরুটা হয়েছিল মাত্র দুটি সার্কেল দিয়ে, কিন্তু তারপর থেকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এবার ভারতের ২২ টি টেলিকম সার্কেলের মধ্যে ১৮ টি-তেই এন্ট্রি-লেভেল ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বাড়ালো এদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিকম অপারেটর Bharti Airtel। প্রাথমিকভাবে, ২০২২ সালের নভেম্বরে শুধুমাত্র হরিয়ানা এবং ওড়িশায় ন্যূনতম প্ল্যানের দাম একলাফে ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি, যার ফলে এই দুই রাজ্যেই Airtel-এর সবচেয়ে সস্তা মাসিক রিচার্জ প্ল্যানের দাম ৯৯ টাকা থেকে বেড়ে একধাক্কায় হয়েছিল ১৫৫ টাকা।

এরপর গত সপ্তাহে আরও সাতটি সার্কেলে এন্ট্রি-লেভেল ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বাড়ায় কোম্পানিটি, যার মধ্যে রয়েছে – বিহার, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং উত্তর প্রদেশ-পশ্চিম। আবার সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুযায়ী, হালফিলে আরও নয়টি টেলিকম সার্কেলে ন্যূনতম রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়ালো সংস্থাটি, এবং এই তালিকায় রয়েছে – দিল্লি, মুম্বই, তামিলনাড়ু, চেন্নাই, উত্তরপ্রদেশ-পূর্ব, পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর এবং আসাম। ফলে সবমিলিয়ে বলা যায় যে, এবার থেকে প্রায় গোটা দেশের এয়ারটেল ব্যবহারকারীদেরকে ন্যূনতম রিচার্জের জন্য ৯৯ টাকার পরিবর্তে ১৫৫ টাকা খসাতে হবে, যা গ্রাহকদের জন্য নিঃসন্দেহে এক নিদারুণ দুঃসংবাদ।

Bharti Airtel-এর ১৫৫ টাকার প্রিপেইড প্ল্যান

বর্তমানে এয়ারটেলের ১৫৫ টাকার প্রিপেইড প্ল্যানের ভ্যালিডিটি ২৪ দিন। এই প্ল্যানে আনলিমিটেড লোকাল, এসটিডি ও রোমিং কল সহ মোট ১ জিবি মোবাইল ডেটা পাওয়া যাবে। সেইসাথে মোট ৩০০ টি এসএমএস প্রেরণের সুবিধাও উপলব্ধ রয়েছে। তবে নির্ধারিত ডেটা লিমিট শেষ হয়ে গেলে প্রতি এমবি ডেটা ব্যবহারের জন্য ইউজারদেরকে ৫০ পয়সা করে চার্জ দিতে হবে। উপরন্তু, এক্সট্রা বেনিফিট হিসেবে এই প্ল্যানে মিলবে ফ্রি Hello Tunes এবং Wynk Music-এর ফ্রি সাবস্ক্রিপশনের সুবিধা।

কেন রিচার্জ প্ল্যানের দাম বৃদ্ধি করা Airtel-এর জন্য আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে?

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে গোটা দেশে ৫জি (5G) রোলআউটের জন্য দুর্বার গতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এয়ারটেল। এমত পরিস্থিতিতে ইউজারদেরকে যথাযথ পরিষেবা দিতে গেলে ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বাড়ানো খুবই জরুরি বলে দাবি করেছে সংস্থাটি, নইলে তারা বিপুল সংখ্যক গ্রাহকহানির মুখোমুখি হতে পারে। কেননা বিশেষজ্ঞদের মতে, কম সক্রিয় গ্রাহক বেসের অর্থ প্রতি মাসে এআরপিইউ (ARPU অর্থাৎ ব্যবহারকারী প্রতি গড় আয়)-এর দুর্বল বৃদ্ধি। তাই মুনাফা এবং রাজস্ব বাড়ানোর জন্য ট্যারিফ প্ল্যানের দাম বৃদ্ধি করা টেলিকম কোম্পানিটির জন্য যে একান্ত আবশ্যক, তা স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে।

এছাড়া, বর্তমানে বহু গ্রাহকই একাধিক সিমের ব্যবহার ছেড়ে দিচ্ছেন, যার ফলে সকল টেলিকম সংস্থাগুলির ইউজারবেস বেশ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তদুপরি, সারা দেশে সাবলীল এবং নিরবচ্ছিন্ন 5G নেটওয়ার্ক পরিষেবা প্রদান করতে গেলে ভবিষ্যতে আরও অধিক সংখ্যক 5G টাওয়ারের প্রয়োজন হবে। এর জন্য আগামী ৪-৫ বছরে প্রায় তিন লক্ষ কোটি টাকার দরকার পড়বে বলে অনুমান করছে Airtel। সেক্ষেত্রে ট্যারিফ প্ল্যানের দাম না বাড়ালে কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউজারদেরকে যথাযথ পরিষেবা প্রদান করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে তারা।