বেড়েই চলেছে পেট্রলের দাম, কর্মীদের কথা ভেবে সবাইকে নতুন সাইকেল উপহার দিল এই সংস্থা
বর্তমানে পরিবেশ দূষণ সকলের জন্যই একটি অন্যতম উদ্বেগের কারণ। প্রত্যহ যে হারে দেশে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বিপদসীমার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। যা পরিবেশবিদদের ভাবাচ্ছে। দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ একত্র ভাবে উদ্যোগী না হলে এই দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে চলা অশোধিত তেলের দাম ভারতে পেট্রল-ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে উৎসেচকের কাজ করছে। একদিকে বেড়ে চলা দূষণের মাত্রা এবং অন্যদিকে পেট্রল-ডিজেলের দরে উত্তাপের কারণে মানালির কোঠারি পেট্রোকেমিক্যালস (Kothari Petrochemicals) তাদের সমস্ত কর্মীদের বাইসাইকেল উপহার দিল।
এই উদ্যোগে সুস্থ শরীর এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইল রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুতকারী সংস্থাটি। কোঠারি পেট্রোকেমিক্যালসে কর্মরত ১৪২ জন কর্মীদের মধ্যে সবাইকে হারকিউলিস (Hercules) সাইকেল উপহার দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার (হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড অ্যাডমিন) ভি মুরুগেশ্বরণ (V Murugeswaran) বলেন, “ইতিমধ্যেই ১০০টি বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। এবং পরবর্তী ব্যাচ পৌঁছানোর জন্য অপেক্ষায় রয়েছি।” তিনি বলেন জাতীয় সুরক্ষা দিবস পালনের দিন এই সাইকেলগুলি বিতরণ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত' বিগত ক'বছর ধরেই কোঠারি পেট্রোকেমিক্যালস পরিবেশবান্ধব পরিবহণের জন্য কর্মীদের সচেতন করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই মর্মে গত বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের দিন কর্মীদের পরিবেশের প্রতি সজাগ করতে একটি ‘সাইকেল র্যালি’র আয়োজন করেছিল তারা। মুরুগেশ্বরণ আরও বলেন, “আমাদের হাতেগোনা কয়েকজন কর্মচারী বাইসাইকেলে করে কাজে আসতো। যা দেখে আমরা প্রত্যেককে একটি বাইসাইকেল উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।” বর্তমানে সংস্থার কর্মীদের একটা বড়ো অংশ কারখানার ধারে কাছেই বসবাস করেন। যাঁদের মধ্যে অনেকে নিজেদের বাহন অথবা সংস্থার গাড়িতে করে যাতায়াত করতেন।
নতুন বাইসাইকেলগুলি পেয়ে অনেক কর্মীই সেটিতে সওয়ার হয়ে কাজে আসবেন বলে জানিয়েছেন। যাদের মধ্যে একজন হলেন সুরেশ পচ্যপ্পন (Suresh Pachyappan), যিনি সংস্থাটির কারখানার উৎপাদন বিভাগের একজন কর্মী। সাইকেলটি উপহার পাওয়ার পর থেকে তিনি এটি করেই কাজে আসা শুরু করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি মাধভরমে থাকি। যার দূরত্ব কারখানা থেকে ৪.৫ কিলোমিটার। বাইকে আসার তুলনায় সাইকেলে চালিয়ে আসতে দ্বিগুণ সময় লাগে। কিন্তু এর ফলে আমি অনেক উপকার পেয়েছি। ইতিমধ্যেই আমি অনেকটা জ্বালানির খরচ সাশ্রয় করতে পেরেছি।”
এই প্রসঙ্গে মুরুগেশ্বরণ বলেন, “কর্মীদের সপ্তাহে একদিন সাইকেলে করে আসতে বলার জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরে সেটি বাড়ানো হতে পারে। তবে কর্মীদের জন্য নির্ধারিত গাড়ির ব্যবস্থা বন্ধ করা হবে না, কারণ উপলব্ধি নিজে থেকে আসা উচিত।” তাঁর কথায়, যদি আরো বেশি সংখ্যক কর্মী সাইকেলে করে কাজে আসেন, তবে উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে আমরা রাস্তার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বলতে পারব। এমনকি একটি ভিন্ন রাস্তা নির্মাণের কথাও বলা হতে পারে।