সমগ্র বিশ্বে পরিবেশ দূষণ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠায় স্বভাবতই চিন্তিত পরিবেশবিদরা। দূষণের মাত্রাকে কিছুটা বাগে আনতে বিধান দেওয়া হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশবান্ধব যানবাহনের সংখ্যা যতটা সম্ভব বাড়ানো। যার মধ্যে ব্যাটারি চালিত গাড়ির সমাদর সর্বাধিক। ছোট-বড় প্রায় সকল সংস্থাই বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকেই ঝুঁকছে। এহেন পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর শোনা গেল ইতালির একদল বিশেষজ্ঞের মুখে। তারা বৈদ্যুতিক যানবাহনকে ততটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। রয়টার্সকে ইটালির অটোমোটিভ লবি সে কথাই জানিয়েছে।
ইটালির অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান এবং অটোমোটিভ লবি’র প্রধান পাওলো স্কুডিয়েরি বলেন, কার্বন কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য ব্যাটারিচালিত গাড়ি একমাত্র সমাধান নয়।” তাঁর কথায়, বায়োফুয়েল, সিন্থেটিক অয়েল এবং হাইড্রোজেনকেও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ইতালির একাধিক সংস্থা হাইড্রোজেন চালিত যানবাহন তৈরি করতে ইতিমধ্যেই বড়সড় বিনিয়োগ করেছে বলে জানা তিনি। এই একই কথা শোনা গিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর (Nitin Gadkari) মুখেও।
স্কুডিয়েরি বলেন, একটি জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়িতে উল্লিখিত পরিবেশবান্ধব জ্বালানি চালিত গাড়িতে সহজেই রূপান্তরিত করা যায়। যেখানে বৈদ্যুতিক গাড়িতে পরিণত করতে একটি ইলেকট্রিক কিটের দাম অনেক বেশি। স্কুডিয়েরি যোগ করেন, বৈদ্যুতিক যানবাহনের রমরমা আগামী দিনে ইতালিতে ৭৩,০০০ চাকরি সংকুচিত করতে পারে। যার ক্ষতি ইলেকট্রিক মোবিলিটিতে তৈরি হওয়া ৬,০০০ কর্মসংস্থান দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। দেশে ২,২০০ গাড়ির কারখানার মধ্যে ৪৫০টি অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে চলেছে। কারণ তারা গাড়ি উৎপাদনে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য এখনও প্রস্তুত হয়ে উঠতে পারেনি।
এদিকে ইউরোপিয়ান কমিশন (EC) ২০৩৫-এর মধ্যে যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ১০০% কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। এটি গত বছর ঘোষিত জলবায়ু পরিবর্তনের নীতির একটি অংশ। যে কারণে ইউরোপের ২৭টি দেশে জীবাশ্ম জ্বালানির গাড়ি বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তখন ব্যবসা ধরে রাখতে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তির গাড়ি তৈরি ব্যতীত, নির্মাতাদের কাছে আর কোনো উপায় থাকবে না। সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন যাতে না হতে হয়, তাই আগাম সতর্ক বার্তা দিয়েছেন স্কুডিয়েরি।