লকডাউনে বেড়েছে যোগাভ্যাস বা ধ্যান, কমেছে ঘুমের পরিমাণ

Avatar

Published on:

মার্চ মাস থেকেই করোনা মহামারির জন্য আমাদের গৃহবন্দি জীবন শুরু হয়েছে। বন্দিদশার একঘেয়েমি কাটানোর জন্য অনেকেই অনেক রকম কাজকর্মের মধ্য দিয়ে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছিল। কেউ বানাচ্ছিল ডালগোনা কফি, তো কেউ আবার ঘুমিয়েই পার করেছিল সময়। কিন্তু এর মধ্যেই কেউ কেউ আবার শারীরিক ফিটনেস নিয়ে সচেতন হয়ে উঠেছিল। সম্প্রতি Fitbit-এর প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, লকডাউনের সময় বহুসংখ্যক ইউজার ফিটনেস রুটিন মেনে জীবন যাপন করার চেষ্টা করেছে।

Fitbit বিভিন্ন স্মার্টওয়াচ, স্মার্ট ট্র্যাকার ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ইউজারদের ফিটনেস-সংক্রান্ত তথ্য জানানোর চেষ্টা করে। আপনি রোজ কত পা হাঁটছেন, কতক্ষণ জেগে থাকছেন, কখন ঘুমাচ্ছেন- এই সমস্ত স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয় নথিভুক্ত করে তারা। ফিটবিট রিসার্চ টিমের ২০১৯ ও ২০২০ এই সমস্ত তথ্য তুলনা করে দেখা গেছে যে প্যানডেমিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়ে অনেক প্রভাব ফেলেছে।

স্ট্রেস কমানোর কার্যকলাপ বৃদ্ধি

সব মিলিয়ে কোভিড ১৯ অতিমারীর সময় ভারত, অস্ট্রেলিয়া, চিন, হংকং, জাপান, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন এবং সিঙ্গাপুর-সহ এশিয়া প্যাসিফিকের দেশগুলি ধ্যান এবং অন্যান্য যোগাভ্যাসের মধ্য দিয়ে স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করেছে। শুধু যোগাভ্যাস বা ধ্যান নয়, আরও বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেস কমানোর কার্যকলাপে তারা যুক্ত হয়েছিল। বিশেষত ভারতীয় ইউজারদের মধ্যে ধ্যান করার পরিমাণ ২৩৮১% বেড়ে গেছে। যোগাভ্যাস বেড়েছে ২৪১%।

সক্রিয়তার পরিমাণ

এই রিপোর্ট অনুযায়ী, লকডাউনে সক্রিয়তার দিক দিয়ে অর্থাৎ হাঁটাহাঁটি এবং সক্রিয় থাকার সময় প্যানডেমিক এর আগের পরিমাণের চেয়ে কম ছিল। শুধু হংকংয়ের ক্ষেত্রেই এই পরিমাণটা একটু বেশি। হংকং এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হাঁটাহাঁটি করছে। আবার ফিলিপিনসের ইউজারদের সক্রিয়তার হার সবচেয়ে কম। অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড সক্রিয় মিনিটের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। সার্বিক সক্রিয়তার পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে তারা এগিয়ে না থাকলেও, স্বেচ্ছায় সক্রিয়তার দিক দিয়ে অর্থাৎ এক্সারসাইজ ইত্যাদির বিচারে তারা এগিয়ে আছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

ঘুমের পরিমাণ

বেশিরভাগ দেশেই লকডাউনের পর ঘুমের পরিমাণ কমেছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে গড় ঘুমের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৭ ঘন্টা ৩৭ মিনিট। আগের চেয়ে এটি গড়ে ৩৯ মিনিট বেশি। লকডাউনে ঘুমের দিক দিয়ে ফিলিপিনস সবচেয়ে বেশি উন্নতি সাধন করতে পেরেছে। লকডাউনে তাদের ঘুমের পরিমাণ ৩০ মিনিট করে বেড়েছে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর এর পরিমাণ ২৫ মিনিট বেশি থেকেছে। ঘুমের পরিমাণের দিক দিয়ে ভারত এই সমস্ত দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে কম হলেও প্যানডেমিকের পর থেকে ঘুমের পরিমাণ গড়ে ১৮ মিনিট করে বেড়েছে।

রেস্টিং হার্ট রেট (RHR)

আঞ্চলিক ভাবে রেস্টিং হার্ট রেট (RHR)-এর গড় হার লকডাউনের ফলে বেশ ভালো হয়েছে। লকডাউন ওঠার পরেও এই হার প্রায় একই থেকেছে। ২০১৯-এর তুলনায় প্রত্যেকটি দেশের ক্ষেত্রে উন্নতি দেখা গেছে। সব মিলিয়ে এই পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ২০২০ সালে সবাই একটু স্থিতিশীল জীবন বেছে নিলেও অনেক ইউজার বিভিন্ন স্ট্রেস কমানোর কার্যকলাপে যুক্ত হয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥