ভারতে আসছে স্যাটেলাইট-নির্ভর Starlink পরিষেবা, গতিতে পাল্লা দেবে ওয়্যারযুক্ত ব্রডব্যান্ডের সাথে

Avatar

Published on:

সবকিছু ঠিকঠাক চললে আর কিছুদিনের মধ্যেই ভারতে আসবে স্যাটেলাইট-নির্ভর স্টারলিঙ্ক ব্রডব্যান্ড পরিষেবা (Starlink Broadband Services)। অন্য কেউ নয়, স্পেস-এক্স (Space-X) সংস্থার কর্ণধার এলন মাস্ক স্বয়ং এই বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। একজন টুইটার ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে তার বক্তব্য, এই মুহূর্তে স্টারলিঙ্ক পরিষেবা বিভিন্ন দেশের অনুমতি বা ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করছে। একবার ছাড়পত্র এসে গেলেই তারা পুরোদমে স্যাটেলাইট-নির্ভর ব্রডব্যান্ড পরিষেবা সরবরাহ করবেন বলে বিত্তবান ব্যবসায়ী মাস্ক জানিয়ে দিয়েছেন।

Twitter ব্যবহারকারীর প্রশ্নের জবাব দিলেন মাস্ক

সদ্য ট্রায়োনসেট (Tryonset) নামে এক জনৈক টুইটার ব্যবহারকারী নিজস্ব টুইটে এলন মাস্কের কাছে সরাসরি স্টারলিঙ্ক ব্রডব্যান্ড পরিষেবার ব্যাপারে জানতে চান। কত দিনের মধ্যে এই পরিষেবা ভারতে আসবে সেটাই তিনি স্পেস-এক্স সিইও’র (CEO) মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিলেন। এক্ষেত্রে মাস্ক তাকে নিরাশ করেননি, বরং নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অনুমতির জন্য অপেক্ষার কথা বলে পরিষেবা সম্পর্কে যথাযথ তথ্য প্রদান করেছেন।

নিজের বক্তব্যে স্পেস-এক্স সিইও মাস্ক সংস্থার সভাপতি গোয়াইন শটওয়েলের কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। গত জুন মাসে শটওয়েল জানিয়েছিলেন যে স্পেস-এক্স প্রেরিত ১৮০০ টি কৃত্রিম উপগ্রহ তাদের নিজস্ব অরবিটে পৌঁছে গেলেই তারা বিশ্বজুড়ে Starlink পরিষেবা সরবরাহ করতে পারবেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই এই পরিষেবা চালুর কথা শোনা গিয়েছিল। যদিও পরিষেবা চালুর জন্য সংস্থাটি আপাতত বিভিন্ন দেশের ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলে মাস্ক স্বীকার করে নিয়েছেন।

ভারতের ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশনস (Department of Telecommunications) বা ডট (DoT) কর্তৃপক্ষের দাবী, দেশে স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর ক্ষেত্রে তাদের কোন বিরুদ্ধ বক্তব্য নেই। কিন্তু ভারতীয় উপভোক্তাদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার আগে স্পেস-এক্স সংস্থাকে দেশের আইন-কানুন মেনে উপযুক্ত ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

উন্নত পরিষেবা গড়ে তোলার জন্য পৃথিবীর নিকটবর্তী কক্ষপথে ৪২,০০০ কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর ভাবনা

আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ বিশ্বের ১৪ টি দেশে Starlink বিটা পরিষেবা চালু রয়েছে। একে আরো পোক্ত করতে আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে স্পেস-এক্স পৃথিবীর নিকটবর্তী কক্ষপথে (Lower Earth Orbit বা LEO) আরো ৪২,০০০ কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে আগ্রহী। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে স্টারলিঙ্ক বিটা ব্যবহারকারীরা ৫০ থেকে ১৫০ এমবিপিএস (Mbps) গতিতে পরিষেবা উপভোগের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া সংস্থার দাবী অনুযায়ী বিটা প্রোগ্রামের ল্যাটেন্সি ২০-৪০ এমএসের (ms) মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।

গত মে মাসে ইলোন মাস্ক জানিয়েছিলেন যে স্যাটেলাইট-নির্ভর ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহের জন্য তার সংস্থা প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশী প্রি-অর্ডার লাভ করেছে! পরিষেবা ব্যবহারে আগ্রহীদের নতুন স্টারলিঙ্ক সংযোগ লাভের জন্য ফেরতযোগ্য অর্থ হিসেবে ৯৯ ডলার গচ্ছিত রাখতে হবে বলে সেসময় শোনা যায়। এক্ষেত্রে উৎসাহীরা স্টারলিঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি প্রয়োজনীয় তথ্য (যেমন, তাদের এলাকায় পরিষেবা উপলব্ধ রয়েছে কি না) সংগ্রহ করতে পারবেন।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরিষেবা রোল-আউটের পরে স্টারলিঙ্ক ব্যবহারকারীরা সেকেন্ডে ২০৯.১৭ মেগাবাইট গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বপ্ন দেখতে পারেন! এই গতি কোনভাবেই ওয়্যারযুক্ত ব্রডব্যান্ড সংযোগের তুলনায় কম হবেনা বলেও একাধিক রিপোর্টে প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি উকলা’র (Ookla) গতি পরীক্ষাতেও বিষয়টির সত্যতা প্রমাণিত হয়ে গেছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥