মানুষের ব্যক্তিগত চ্যাটে নজরদারি চালাতে চায় কেন্দ্র, বিস্ফোরক অভিযোগ WhatsApp প্রধানের

Avatar

Published on:

চলতি বছরের শুরু থেকেই নতুন প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে WhatsApp-এর সংঘাত টেক দুনিয়ার খবরের শিরোনামে রয়েছে। ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (Ministry of Electronics and Information Technology বা MeitY), WhatsApp-কে তাদের নতুন প্রাইভেসি পলিসি প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত নতুন মিডিয়া রেগুলেশনসকে (IT Rules) কেন্দ্র করে ফেসবুক মালিকানাধীন ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি ভারত সরকারের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ দায়ের করে। কারণ সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত নতুন নিয়মে হোয়াটসঅ্যাপকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তাদের মেসেজিং অ্যাপের দ্বারা পাঠানো মেসেজগুলির অরিজিনেটর অর্থাৎ সর্বপ্রথম কে এই মেসেজটি পাঠিয়েছে (“first originator of information”) তার উৎস সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে। নতুন আইনে এও বলা হয়েছে যে, WhatsApp-কে তার ব্যবহারকারীদের বিশদ সরকারের কাছে প্রকাশ করতে হবে, যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।

এর জবাবে সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, মেসেজিং অ্যাপে চ্যাট ট্রেস করার অর্থ হল, প্রত্যেকের WhatsApp-এ সেন্ড করা প্রতিটি মেসেজের ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট রাখতে বলার সমান। এটি করলে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বলে আর কিছু থাকবে না। কারণ যেহেতু মেসেজগুলি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্ট করা হয়, তাই আইন অনুসরণ করতে সংস্থাটিকে রিসিভারের পাশাপাশি অরিজিনেটরের জন্যও এনক্রিপশন ব্রেক করতে হবে। ফলে জনসাধারণের গোপনীয়তার অধিকার বিঘ্নিত হবে। এবার এই এনক্রিপশনকে কেন্দ্র করেই এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটির প্রধান।

WhatsApp-এর প্রধান, উইল ক্যাথকার্ট এনক্রিপশনকে দুর্বল অর্থাৎ লঘু করার সরকারি দাবিকে অরওয়েলিয়ান (অরওয়েলিয়ান একটি পরিস্থিতি, ধারণা বা সামাজিক অবস্থা বর্ণনাকারী একটি বিশেষণ যা জর্জ অরওয়েল একটি মুক্ত সমাজের কল্যাণের জন্য ধ্বংসাত্মক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন) বলে অভিহিত করেছেন যা নজরদারির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে ঝুঁকিপূর্ণ করবে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ভারতের পর যে দেশে তার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি সেই ব্রাজিলের কাছ থেকেও একই ধরনের চাহিদার সম্মুখীন হয়েছে WhatsApp। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যও হোয়াটসঅ্যাপকে তার এনক্রিপশন দুর্বল করার জন্য চাপ দিয়েছে। সরকারের দাবিকে কটাক্ষ করে ক্যাথকার্ট The Guardian-কে একথা জানিয়েছেন, “এই প্রস্তাব যেন প্রত্যেকের ঘরে সরকারের পক্ষ থেকে একটি করে ক্যামেরা স্থাপন করার নির্দেশ যাতে সরকার প্রয়োজনমতো তদন্তের স্বার্থে সেটি দেখতে পারে।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি WhatsApp স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সকল নিয়মাবলী মেনে নিলেও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন (Personal Data Protection Law বা PDP) কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত সংস্থাটি নতুন প্রাইভেসি পলিসি প্রত্যাহার বা সংশোধন করবে না। WhatsApp বর্তমানে আগামী ১৫ সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাজ্য এবং জার্মানিতে একটি বিজ্ঞাপন প্রচারণায় কাজ করছে যেখানে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের দৈনন্দিন সুবিধা তুলে ধরা হয়েছে। এর সাথে সাথে মানুষের ব্যক্তিগত বার্তা যে সবসময় ব্যক্তিগতই থাকা উচিত তার উপরেও জোর দিয়েছেন ক্যাথকার্ট।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥