কখনও হ্যাং হবে না মোবাইল ফোন, লেটেস্ট প্রসেসরের সাথে এসেছে এই 5টি সেরা Smartphone
গত মাসের শেষের দিকে ভারতের বাজারে পা রেখেছিল Xiaomi 13 Pro। আলোচ্য ফ্ল্যাগশিপ ফোনটি একাধিক অ্যাডভান্স ফিচারের সাথে এসেছে। সর্বোপরি এতে Qualcomm Snapdragon 8 Gen 2 প্রসেসর থাকায়, ল্যাগিং বা হ্যাং ইস্যু কোনটারই সম্মুখীন হবে না ইউজাররা। আর এই কারণে বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকটি টেক ব্র্যান্ড তাদের লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ মডেলগুলিকে বহুজাতিক সেমিকন্ডাক্টর ব্র্যান্ড Qualcomm বিকশিত এই লেটেস্ট চিপসেটের সাথে নিয়ে আসছে। উদাহরণস্বরূপ - Samsung Galaxy S23 Ultra, Samsung Galaxy S23, iQOO 11, OnePlus 11 স্মার্টফোনের কথা উল্লেখ করা যায়। এই প্রত্যেকটি ডিভাইস সর্বোত্তম ও পূর্বসূরিদের তুলনায় স্মুথ পারফরম্যান্স অফার করে। এক্ষেত্রে আপনিও যদি নিজের জন্য একটি এমনই কাস্টমাইজড Snapdragon 8 Gen 2 প্রসেসর চালিত প্রিমিয়াম হ্যান্ডসেট কিনতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে আমাদের এই প্রতিবেদন থেকে উল্লেখিত স্মার্টফোনগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
Qualcomm Snapdragon 8 Gen 2 চিপসেট সহ আসা ৫টি সেরা স্মার্টফোনের তালিকা
Samsung Galaxy S23 Ultra : স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ আল্ট্রা ফোনে ৬.৮-ইঞ্চির এজ কোয়াড এইচডি প্লাস ডায়নামিক AMOLED ২এক্স ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে, যা ১ থেকে ১২০ হার্টজ পর্যন্ত রিফ্রেশ রেট অফার করবে। ফাস্ট পারফরম্যান্সের জন্য এতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ প্রসেসরের কাস্টম ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফোনে ১২ জিবি পর্যন্ত র্যাম ও ১ টিবি পর্যন্ত স্টোরেজ বর্তমান। তদুপরি ফটো ও ভিডিওগ্রাফির জন্য এস-সিরিজের এই ‘আল্ট্রা’ মডেলে কোয়াড রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে। এই ক্যামেরাগুলি হল - ২০০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর, ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স, ১০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো সেন্সর ও ১০ মেগাপিক্সেল শুটার। এদিকে সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য থাকছে ১২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। পাওয়ার ব্যাকআপের ক্ষেত্রে ডিভাইসে ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং এবং ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি ২.০ সমর্থিত ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি আছে। IP68 রেটিং প্রাপ্ত স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ আল্ট্রা এস-পেন স্টাইলাস, নক্স সিকিউরিটি ও নক্স ভল্টি সাপোর্ট করে।
Samsung Galaxy S23 : স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ ফোনে আছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিক্টাস ২ প্রোটেকশন সহ ৬.১-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস ডায়নামিক AMOLED ২এক্স ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লে - ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে। যদিও এই রিফ্রেশ রেট ৪৮ হার্টজ পর্যন্ত কমানো যাবে। আবার গেম মোডে ডিভাইসের টাচ স্যাম্পলিং রেট থাকবে ২৪০ হার্টজ। উন্নত পারফরম্যান্সের জন্য ফোনে কোয়ালকমের লেটেস্ট স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ প্রসেসর সমন্বিত থাকছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক ওয়ানইউআই ৫.১ (OnUI 5.1) কাস্টম স্কিন দ্বারা চালিত। ফটোগ্রাফির জন্য এস-সিরিজের স্ট্যান্ডার্ড মডেলে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এগুলি হল – এফ/১.৮ অ্যাপারচার সহ ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল সেন্সর, ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স এবং ৩এক্স অপটিক্যাল জুম সহ ১০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো ক্যামেরা। আর ডিভাইসের সামনে থাকছে ৮০-ডিগ্রি ফিল্ড-অফ-ভিউ সহ ১২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য মিলবে ৩,৯০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি, যা ২৫ ওয়াট ওয়্যার্ড ও ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট করে।
Xiaomi 13 Pro : শাওমি ১৩ প্রো স্মার্টফোনে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিক্টাস প্রটেকশন সহ ৬.৭৩-ইঞ্চির WQHD+ (৩,২০০× ১,৪৪০ পিক্সেল) ই৬ অ্যামোলেড এলটিপিও ডিসপ্লে রয়েছে। এই ডিসপ্লে – ১২০ হার্টজ অ্যাডাপ্টিভ রিফ্রেশ রেট, ১,৯০০ নিট পিক ব্রাইটনেস, ১,২০০ নিটের স্ট্যান্ডার্ড ব্রাইটনেস, ২০:৯ এসপেক্ট রেশিও, এইচডিআর১০+, পি৩ কালার গ্যামেট, ৩৬০-ডিগ্রি অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর এবং ডলবি ভিশন সাপোর্ট করে। ডিভাইসটি ৪ ন্যানোমিটার প্রসেসিং নোড ভিত্তিক কোয়ালকমের লেটেস্ট স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ প্রসেসরের সাথে এসেছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক এমআইইউআই ১৪ (MIUI 14) কাস্টম ইউজার ইন্টারফেসে রান করে। আলোচ্য ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বিদ্যমান। এগুলি হল – ৫০ মেগাপিক্সেল সনি আইএমএক্স৯৮৯ প্রাইমারি সেন্সর, ৫০ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স এবং ৫০ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট টেলিফটো শুটার। এদিকে সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য ৩২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা আছে। শাওমি ১৩ প্রো স্মার্টফোনে ৪,৮২০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ১২০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং, ৫০ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং এবং ১০ ওয়াট রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি সাপোর্ট করে।
iQOO 11 : আইকো ১১ স্মার্টফোনে রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিক্টাস দ্বারা সুরক্ষিত ৬.৭৮-ইঞ্চির ২কে (৩২০০x১৪৪০ পিক্সেল) Samsung E6 AMOLED ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লের ডিজাইন পাঞ্চ-হোল (কেন্দ্রীভূত) স্টাইলের এবং এটি ১০-বিট কালার, ৫১৭ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি, ১৪৪ হার্টজ রিফ্রেশ রেট (LTPO 4), এবং ৩০০ হার্টজ টাচ স্যাম্পলিং রেট (১২০০ হার্টজ ইনস্ট্যান্ট) সমর্থন করে। মাল্টিটাস্কিং ও ফাস্ট পারফরম্যান্সের জন্য ডিভাইসটি কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ প্রসেসর সহ এসেছে। আবার অপারেটিং সিস্টেম হিসাবে অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক ফানটাচ ওএস ১৩ (Funtouch OS 13) কাস্টম ইউজার ইন্টারফেস প্রিলোডেড থাকছে। আলোচ্য ফোনের ব্যাক প্যানেলে ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে৷ এগুলি হল - OIS-এনাবল ৫০ মেগাপিক্সেল Samsung GN5 প্রাইমারি সেন্সর, ৮ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স এবং ২এক্স জুম সহ ১৩ মেগাপিক্সেল টেলিফটো শুটার৷ আর ডিভাইসের সামনে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি স্ন্যাপার দেখা যাবে। আইকো ১১ স্মার্টফোনে ১২০ ওয়াট ফাস্ট ওয়্যারড চার্জিং প্রযুক্তি সমর্থিত ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি আছে।
OnePlus 11 : ডুয়াল-সিমের (ন্যানো) ওয়ানপ্লাস ১১ ৫জি স্মার্টফোনে রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিক্টাস প্রোটেকশন সহ ৬.৭-ইঞ্চির কোয়াড এইচডি প্লাস (৩২১৬x১৪৪০ পিক্সেল) ১০ বিট এলটিপিও ৩.০ Samsung E4 AMOLED ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লের ডিজাইন পাঞ্চ-হোল (কেন্দ্রীভূত) স্টাইলের এবং এটি ৫২৫ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি, ১২০ হার্টজ পর্যন্ত রিফ্রেশ রেট, ১০০০ হার্টজ পর্যন্ত টাচ স্যাম্পলিং রেট ও ডলবি ভিশন প্রযুক্তি সাপোর্ট করে। উৎকর্ষমানের পারফরম্যান্স সরবরাহের জন্য এতে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাড্রেনো ৭৪০ জিপিইউ এবং লেটেস্ট কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ প্রসেসর। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক অক্সিজেনওএস ১৩ (OxygenOS 13) কাস্টম স্কিন দ্বারা চালিত। ফটো ও ভিডিওগ্রাফির জন্য এই ৫জি ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ উপস্থিত। এগুলি হল – OIS-এনাবল ৫০ মেগাপিক্সেল Sony IMX890 প্রাইমারি সেন্সর, ১১৫-ডিগ্রি ফিল্ড-অফ-ভিউ যুক্ত আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স ও অটোফোকাস সমর্থিত ৪৮ মেগাপিক্সেল Sony IMX581 সেকেন্ডারি সেন্সর, এবং ২এক্স টেলিফোটো লেন্স যুক্ত ৩২ মেগাপিক্সেল Sony IMX709 RGBW টারশিয়ারি সেন্সর। আবার ডিভাইসের সামনে ১৬ মেগাপিক্সেলের Sony IMX471 ফ্রন্ট ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য মিলবে ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি, যা ১০০ ওয়াট সুপারভোক ফাস্ট ওয়্যারড চার্জিং সাপোর্ট করে। আর সিকিউরিটির জন্য এতে পাওয়া যাবে ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।