10 হাজার টাকা ডিসকাউন্টে সেরার Google Pixel 7 and Pixel 6a, কোথায় এমন লোভনীয় অফার জানুন
চলতি সময়ে তরুণ ক্রেতাদের মধ্যে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন স্মার্টফোনের চাহিদা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, ভিডিও এডিটর বা মোবাইল গেমার – এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পেশার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে এখন একটি হাই-পারফরম্যান্স এবং ভালো প্রসেসর ও ক্যামেরাযুক্ত হ্যান্ডসেট থাকা একান্ত আবশ্যক। সেক্ষেত্রে আপনি যদি ইদানীংকালে খানিকটা সস্তায় কোনো নামজাদা ব্র্যান্ডের উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন তথা ধামাকাদার স্মার্টফোন কিনতে আগ্রহী হন, তাহলে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি অবশ্যই একবার খুব ভালো করে মন দিয়ে পড়ে নিন। আসলে বর্তমানে জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট Flipkart-এ Pixel 7 এবং Pixel 6a ফোন দুটি বাম্পার ডিসকাউন্টে বিক্রির জন্য উপলব্ধ রয়েছে।
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, যদিও এই মুহূর্তে ফ্লিপকার্টে কোনো সেল চলছে না, কিন্তু তা সত্ত্বেও উপরিউক্ত ৫জি (5G) ডিভাইসগুলিতে বর্তমানে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাচ্ছে। একথা আমাদের সকলেরই জানা যে, চলতি সময়ে পিক্সেল ৬এ এবং পিক্সেল ৭ মার্কেটের সেরা ক্যামেরা ফোন হিসেবে ইউজারমহলে বেশ সুপরিচিত। এছাড়াও, ডিভাইস দুটিতে আরও অজস্র কার্যকর ফিচার মজুত রয়েছে। ফলে গুগল (Google)-এর কোনো প্রিমিয়াম স্মার্টফোনকে অত্যন্ত সস্তায় কেনার জন্য যারা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন, তাদের জন্য এটা নিঃসন্দেহে একটা সুবর্ণ সুযোগ। চলুন চলতি সময়ে আলোচ্য ডিভাইস দুটির ফ্লিপকার্টে দাম এবং সেইসাথে তাদের ফিচার এবং স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
অত্যন্ত সস্তায় Flipkart থেকে কিনে নিন Pixel 7 এবং Pixel 6a
পিক্সেল ৬এ ফোনের ৬ জিবি + ১২৮ জিবি স্টোরেজ মডেলটি বর্তমানে ফ্লিপকার্টে ২৯,৯৯৯ টাকায় তালিকাভুক্ত রয়েছে। উল্লেখ্য যে, যদিও ডিভাইসটিকে গত বছর ৪০,০০০ টাকারও বেশি দামে লঞ্চ করা হয়েছিল, তবে এখন ফ্লিপকার্টের দৌলতে ইউজাররা ৩০,০০০ টাকারও কম খরচে হ্যান্ডসেটটিকে পকেটস্থ করার সুযোগ পাবেন। আবার, পিএনবি ক্রেডিট কার্ড মারফত পেমেন্টের ক্ষেত্রে ১০% ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট (১,০০০ টাকা পর্যন্ত) পেতে সক্ষম হবেন গ্রাহকরা। তদুপরি, পুরোনো কোনো ফোন এক্সচেঞ্জ করে উক্ত হ্যান্ডসেটটি কেনার ক্ষেত্রে ২১,০০০ টাকা পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ বোনাসও মিলবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যে ফোনটি এক্সচেঞ্জ করা হচ্ছে তার বর্তমান অবস্থা তথা গুণমানের ওপরেই সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে এক্সচেঞ্জ অফারের পরিমাণ।
অন্যদিকে, বর্তমানে গুগল পিক্সেল ৭-এর ৮ জিবি র্যাম এবং ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টটির দাম ফ্লিপকার্টে ৫৯,৯৯৯ টাকা। যদিও হালফিলে ডিভাইসটিতে কোনো অগ্রিম ছাড়ের সুবিধা উপলব্ধ নেই, তবে অ্যাক্সিস ব্যাংক, আমেরিকান এক্সপ্রেস, এসবিআই, এইচডিএফসি এবং আইসিআইসিআই ব্যাংকের ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড মারফত নন-ইএমআই ট্রানজ্যাকশনের ক্ষেত্রে ৭,০০০ টাকা অতিরিক্ত ছাড় পেতে সক্ষম হবেন ক্রেতারা। আবার, পুরোনো কোনো ফোন এক্সচেঞ্জ করে এই ডিভাইসটি কিনলে ২১,০০০ টাকা পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ ডিসকাউন্টও পাওয়া যাবে। ফলে সবকটি অফারকে একজোট করলে হালফিলে মূল দামের তুলনায় অনেকটাই কমে উক্ত স্মার্টফোনটিকে পকেটস্থ করতে পারবেন ইউজাররা।
Pixel 6a: ২০২৩ সালে এই ফোনটি কেনা কি যথার্থই যুক্তিযুক্ত?
নিঃসন্দেহে পিক্সেল ৬এ একটি ভালো স্মার্টফোন এবং বর্তমানে ফ্লিপকার্টে এত কম দামে এটি পাওয়া যাচ্ছে যে, ইউজারদের এই সুযোগ হাতছাড়া করা একেবারেই উচিত হবে না। তবে সব জিনিসের মতোই ভালোর পাশাপাশি ফোনটির কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। এখন আসুন, হ্যান্ডসেটটির ফিচার এবং স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে একটু বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
আগেই বলেছি যে, মূলত ক্যামেরার জন্য পিক্সেল ৬এ ফোনটি ইউজারমহলে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। ফটো ও ভিডিওগ্রাফির জন্য এই ৫জি ফোনে ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – এফ/১.৭ অ্যাপারচার সহ ১২.২ মেগাপিক্সেল সনি আইএমএক্স৩৬৩ (Sony IMX363) প্রাইমারি সেন্সর এবং এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স। আবার, সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য হ্যান্ডসেটটিতে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। একাধিক ব্যবহারকারীদের তরফ থেকে পাওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, এই ফোনের মাধ্যমে পোর্ট্রেট শট খুব ভালোভাবে ক্লিক করা যায়। তদুপরি, ফোনটির ক্যামেরায় গুগলের ম্যাজিক ইরেজার টুল (Magic Eraser tool) বিদ্যমান থাকায় এটির মাধ্যমে কোনো ফটো ক্লিক করার পরে ফ্রেমে মজুত থাকা অপ্রয়োজনীয় উপাদান বা বস্তুগুলিকে অতি অনায়াসে সরিয়ে ফেলতে পারবেন গ্রাহকরা। ফলে দুর্দান্ত ছবি তোলার ক্ষেত্রে এই টুলটি ইউজারদেরকে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। স্পষ্টতই, ৩০,০০০ টাকার কমদামি কোনো ফোনে এত ভালো ক্যামেরা কোয়ালিটি পেলে ব্যবহারকারীরা যে নিঃসন্দেহে লাভবান হবেন, সেকথা বলাই বাহুল্য।
এবার পিক্সেল ৬এ ফোনের অন্যান্য ফিচারের কথায় আসা যাক। এতে আছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৩ প্রোটেকশন সহ ৬.১৪ ইঞ্চি ফুল এইচডি প্লাস (২৪০০ x ১০৮০ পিক্সেল) ওএলইডি পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে, যা ৬০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট ও ২০:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও অফার করে। ইউজারদেরকে হাই-এন্ড কন্টেন্ট ভিউয়িং এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করার জন্য হ্যান্ডসেটটিতে এইচডিআর১০+ (HDR10+) সাপোর্ট দিয়েছে গুগল। ফাস্ট পারফরম্যান্সের জন্য অ্যান্ড্রয়েড ১২ (Android 12) ওএস দ্বারা চালিত এই ডিভাইসে অক্টা-কোর গুগল টেনসর (Tensor) প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া, যুতসই ব্যান্ড সাপোর্ট থাকায় ফোনটির মাধ্যমে দুরন্ত গতির ৫জি পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে পারবেন ইউজাররা।
তবে আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, পিক্সেল ৬এ-তে রয়েছে ৪,৪১০ এমএএইচ ব্যাটারি। ফলে সারাদিন ধরে একনাগাড়ে ডিভাইসটি ব্যবহার করা চালিয়ে গেলে ইউজারদেরকে একাধিকবার চার্জ দিতে হতে পারে। উল্লেখ্য যে, ফোনটির রিটেইল বক্সে কোনো চার্জার দেয় না গুগল। তাই ইউজারদেরকে আলাদা করে এটি কিনে নিতে হবে। তদুপরি, ফোনটি কেবলমাত্র ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। সেক্ষেত্রে আপনার দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের জন্য উপরিউক্ত ফিচারগুলি যদি যথেষ্ট হয়, তাহলে আপনি অবশ্যই এই ফোনটি কেনার কথা ভেবে দেখতে পারেন।
Pixel 7: ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে কেন এই ফোনটি কেনা উচিত?
পারফরম্যান্সের দিক থেকে পিক্সেল ৭ ফোনটিও ইউজারদেরকে একেবারেই হতাশ করবে না। এই স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ৬.৩২ ইঞ্চি ফুল এইচডি প্লাস ওএলইডি (OLED) ডিসপ্লে, যা ৯০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, ১,৪০০ নিটস পিক ব্রাইটনেস এবং এইচডিআর (HDR) টেকনোলজি সাপোর্ট করে। উন্নত পারফরম্যান্সের জন্য ডিভাইসটি সংস্থার নিজস্ব টেনসর জি২ চিপসেট সহ এসেছে। উল্লেখ্য যে, যদিও এই চিপসেটটি মার্কেটে উপলব্ধ প্রসেসরগুলির মধ্যে সবচেয়ে সেরা নয়; তবে সংস্থার দাবি অনুযায়ী, যে সকল স্মার্টফোনে স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ এসওসি রয়েছে, তাদের তুলনায় গুগলের এই হ্যান্ডসেটটি ইউজারদেরকে অনেক উন্নত মানের ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা প্রদান করতে সক্ষম। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ (Android 13) অপারেটিং সিস্টেমে রান করে। এছাড়াও, এই ডিভাইসটিতে বেশ কয়েকটি এক্সক্লুসিভ ফিচার বিদ্যমান, যার মধ্যে রয়েছে ম্যাজিক ইরেজার, অ্যাস্ট্রোফোটোগ্রাফি, গুগল রেকর্ডার স্পিকার লেবেল এবং আরও অনেক কিছু।
আগেই বলেছি যে, গুগলের এই ফোনটিতেও দুর্দান্ত ক্যামেরা মজুত রয়েছে। পিক্সেল ৭ ফোনের রিয়ার প্যানেলে ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ বিদ্যমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন (OIS) সহ ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর এবং ১১৪-ডিগ্রি ফিল্ড-অফ-ভিউ (FoV) সহ ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স। আবার, সেলফির জন্য ডিভাইসটির সামনে এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ একটি ১০.৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা বর্তমান। ফলে এই ক্যামেরাটিকে কাজে লাগিয়ে অতি অনায়াসে দুর্দান্ত ছবি তুলতে পারবেন ইউজাররা।
আইপি৬৮ (IP68) রেটিংপ্রাপ্ত হওয়ায় পিক্সেল ৭ সম্পূর্ণভাবে ধুলো ও জল প্রতিরোধী। পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য স্মার্টফোনটিতে ৪,২৭০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে, যা মাত্র ২০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। ফলে বেশি ব্যবহার করা হলে ডিভাইসটিকে দিনে একাধিকবার চার্জ দিতে হতে পারে। জানিয়ে রাখি, ফোনটিতে কোনো হেডফোন জ্যাক নেই। আবার, এর রিটেইল বক্সে কোনো চার্জার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে ফোনটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এটি কিউআই (Qi) সার্টিফায়েড ওয়্যারলেস ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। এখন এই ফিচারগুলি যদি আপনার জন্য যথেষ্ট হয়, তাহলে চলতি সময়ে আপনি নির্দ্বিধায় এই ফোনটি কেনার কথা ভেবে দেখতে পারেন।