দাম প্রায় সমান, OnePlus Nord 3 ও iQOO Neo 7 Pro-র মধ্যে কোনটা কিনলে আপনার লাভ?
OnePlus Nord 3 5G লঞ্চ হয়েছে ক'দিন আগেই। এই ফোনে ১২০ হার্টজ হাই রিফ্রেশ রেটযুক্ত ডিসপ্লে, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা, এবং ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি সহ এসেছে। দেখতে গেলে ফোনটির ঠিক ১ দিন আগেই অর্থাৎ ৪ঠা জুলাই ভারতে এসেছে iQOO Neo 7 Pro। দু'টি ফোনেই প্রায় একই ধরনের ফিচার লক্ষ্য করা যায়। OnePlus এবং iQOO ব্র্যান্ডিংয়ের ফোন দুটি দামের দিক থেকেও প্রায় এক। পার্থক্য মাত্র ১,০০০ টাকা। এমতবস্থায় কোন ফোন কিনলে লাভ হবে তা নিয়ে ধন্ধে পড়ে গিয়েছেন অনেকেই। তাই আপনার কাজ সহজ করার জন্য এই প্রতিবেদনে OnePlus Nord 3 এবং iQOO Neo 7 Pro স্মার্টফোনের মধ্যে তুলনা তুলে ধরা হল।
OnePlus Nord 3 vs iQOO Neo 7 Pro: ডিসপ্লে
ওয়ানপ্লাস নর্ড ৩ ৫জি স্মার্টফোনে ৬.৭৩-ইঞ্চির 1.5K অ্যামোলেড ডিসপ্লে প্যানেল আছে, যা ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, ১০-বিট কালার, এইচডিআর১০+ ও ১,৪৫০ নিট পিক ব্রাইটনেস সাপোর্ট করে। অন্যদিকে, আইকো নিও ৭ প্রো স্মার্টফোনে রয়েছে ৬.৭৮-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস ই৫ অ্যামোলেড ফ্ল্যাট ডিসপ্লে রয়েছে। যা ১২০ হার্টজ হাই রিফ্রেশ রেট, ১,৫০০ নিট পিক ব্রাইটনেস ও এইচডিআর১০+ প্রযুক্তি সাপোর্ট করে। আবার গেমিং সহ অন্যান্য অ্যাক্টিভিটির জন্য ডিসপ্লে অপ্টিমাইজেশন করতে একটি ডেডিকেটেড চিপও থাকছে এতে। সিকিউরিটির জন্য স্ক্রিনের ভিতরেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার মিলবে।
OnePlus Nord 3 vs iQOO Neo 7 Pro: প্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, র্যাম, স্টোরেজ
মাল্টিটাস্কিং ও উন্নত পারফরম্যান্স প্রদানের জন্য OnePlus Nord 3 5G স্মার্টফোনে মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৯০০০ প্রসেসর আছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক অক্সিজেনওএস ১৩.১ (OxygenOS 13.1) কাস্টম স্কিনে রান করে। এতে ১৬ জিবি পর্যন্ত র্যাম এবং সর্বোচ্চ ২৫৬ জিবি স্টোরেজ মিলবে।
আইকো নিও ৭ প্রো স্মার্টফোনে অ্যাড্রেনো ৭৩০ জিপিইউ এবং কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ প্লাস জেন ১ প্রসেসর সমন্বিত আছে। গেমিং চিপ থাকার কারণে স্মুথ গেমপ্লে এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করবে। এই ফোন অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক ফানটাচওএস ১৩ কাস্টম ওএস দ্বারা চালিত। ফোনটি ১২ জিবি LPDDR5 র্যাম এবং সর্বাধিক ২৫৬ জিবি UFS 3.1 মেমরি অপশনে মিলবে।
OnePlus Nord 3 vs iQOO Neo 7 Pro: ক্যামেরা সেটআপ
ফটো ও ভিডিওগ্রাফির জন্য ওয়ানপ্লাস নর্ড ৩ ৫জি ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – OIS সহ ৫০ মেগাপিক্সেল Sony IMX890 প্রাইমারি সেন্সর, ৮ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স এবং ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো সেন্সর। পিছনের ক্যামেরা 4K ভিডিও রেকর্ড করতে সমর্থ। আর সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা।
ক্যামেরা বিভাগের কথা বললে, আইকো নিও ৭ প্রো স্মার্টফোনেও ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এগুলি হল – অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন (OIS) সহ ৫০ মেগাপিক্সেল Samsung ISOCELL GN5 প্রাইমারি সেন্সর, ৮ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স এবং ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো ক্যামেরা। আর হ্যান্ডসেটের সামনে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে।
OnePlus Nord 3 vs iQOO Neo 7 Pro: ব্যাটারি, চার্জিং টেকনোলজি, কানেক্টিভিটি অপশন
কানেক্টিভিটির জন্য ওয়ানপ্লাস নর্ড ৩ ৫জি স্মার্টফোনে – ওয়াই-ফাই ৮০২.১১ এ/বি/জি/এন/এসি/৬, ব্লুটুথ ৫.২, জিপিএস, গ্লোনাস, গ্যালিলিও, বিডিএস এবং ইউএসবি টাইপ-সি ২.০ পোর্ট অন্তর্ভুক্ত থাকছে। আবার পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য এতে ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে, যা ৮০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে।
আইকো নিও ৭ প্রো স্মার্টফোনের কানেক্টিভিটি বিকল্পের মধ্যে সামিল রয়েছে - ৫জি, ওয়াই-ফাই ৬, ব্লুটুথ ৫.২, ডুয়াল-সিম স্লট এবং জিপিএস বিকল্প অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য এই ডিভাইসে ১২০ ওয়াট ফ্ল্যাশচার্জ ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি সমর্থিত ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির বড় ব্যাটারি আছে। সংস্থার দাবি, এই চার্জিং প্রযুক্তির সাহায্যে মাত্র ৮ মিনিটে ব্যাটারিকে ৫০% চার্জ করা সম্ভব।
OnePlus Nord 3 vs iQOO Neo 7 Pro: দাম
ওয়ানপ্লাস নর্ড ৩ ৫জি স্মার্টফোনকে মোট দুটি স্টোরেজ কনফিগারেশনের সাথে নিয়ে আসা হয়েছে। যার মধ্যে ৮ জিবি + ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম থাকছে ৩৩,৯৯৯ টাকা এবং উচ্চতর ১৬ জিবি + ২৫৬ জিবি স্টোরেজ অপশন কেনা যাবে ৩৭,৯৯৯ টাকার বিনিময়ে। এটিকে – টেম্পেস্ট গ্রে এবং মিস্টি গ্রিন কালার বিকল্পে পাওয়া যাবে।
ভারতে আইকো নিও ৭ প্রো স্মার্টফোনের ৮ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস মডেলের দাম রাখা হয়েছে ৩৪,৯৯৯ টাকা। আর উচ্চতর ১২ জিবি র্যাম + ২৫৬ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টকে পাওয়া যাবে ৩৭,৯৯৯ টাকায়। এটি মোট দুটি কালার ভ্যারিয়েন্টের সাথে পাওয়া যাবে। যার মধ্যে প্রথমটি হল ডার্ক স্টর্ম মডেল, যার রিয়ার শেলে এজি (AG) গ্লাসের স্তর রয়েছে। আর দ্বিতীয়টি হল ফিয়ারলেস ফ্লেম ভ্যারিয়েন্ট, যাতে ফেক লেদার ব্যাক বিদ্যমান।