Vivo T2 5G নাকি Vivo V1 5G, ভিভোর দুই বাজেট ৫জি ফোনের মধ্যে কে এগিয়ে
গতকাল অর্থাৎ ১১ই এপ্রিল ভারতের বাজারে পা রাখে Vivo T2 5G। এটি গত বছর ৯ই ফেব্রুয়ারি এদেশে আত্মপ্রকাশ করা Vivo T1 5G স্মার্টফোনের উত্তরসূরি হিসাবে এসেছে। পূর্বসূরি এবং উত্তরসূরি উভয়ই হাই-বাজেট রেঞ্জের অধীনে লঞ্চ হলেও, এগুলির প্রারম্ভিক মূল্যের মধ্যে প্রায় ৩,০০০ টাকার ফারাক লক্ষণীয়। পাশাপাশি ফিচারের দিক থেকেও পার্থক্য নজরে পড়বে। যেমন, নয়া Vivo T2 5G ফোনে - ৯০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটের ৬.৩৮-ইঞ্চির AMOLED ডিসপ্লে, অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক কাস্টম স্কিন, ৬৪ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ এবং ৪,৫০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি পাওয়া যাবে। অন্যদিকে Vivo T1 5G ফোনে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটের ৬.৫৮-ইঞ্চির IPS LCD টাচ-স্ক্রিন, অ্যান্ড্রয়েড ১২ ভিত্তিক কাস্টম ইউআই, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা ইউনিট এবং ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি বিদ্যমান রয়েছে। অতএব কিছু বিভাগে পূর্বসূরি এগিয়ে, তো কিছুতে উত্তরসূরি। তাই নতুন Vivo T2 5G কেনা উচিত হবে, নাকি ৩,০০০ টাকা সাশ্রয় করে Vivo T1 5G মডেলটি পকেটস্থ করা অধিক বুদ্ধিমানের কাজ তা এখন বিচার্য বিষয়। আসুন দুটি ফোনের মধ্যে পার্থক্য দেখে নেওয়া যাক।
Vivo T2 5G vs Vivo T1 5G : ডিসপ্লে, সেন্সর
ভিভো টি২ ৫জি স্মার্টফোন ৬.৩৮-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস (২৪০০×১০৮০ পিক্সেল) AMOLED ডিসপ্লে সহ এসেছে। এই ডিসপ্লের ডিজাইন ওয়াটারড্রপ নচ স্টাইলের এবং এটি ৯০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট এবং ১,৩০০ নিট পিক ব্রাইটনেস সমর্থন করে। এদিকে নিরাপত্তার জন্য এতে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর পাওয়া যাবে।
ভিভো টি১ ৫জি ফোনে রয়েছে ৬.৫৮-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস IPS LCD ওয়াটারড্রপ নচ ডিসপ্লে প্যানেল। এই ডিসপ্লের রিফ্রেশ রেট ১২০ হার্টজ এবং টাচ স্যাম্পলিং রেট ২৪০ হার্টজ। তদুপরি সিকিউরিটি ফিচার হিসাবে এতে সাইড-মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার এবং এআই (AI) ফেস আনলক ফিচার উপলব্ধ।
Vivo T2 5G vs Vivo T1 5G : প্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, র্যাম, স্টোরেজ
উন্নত পারফরম্যান্সের জন্য ভিভো টি২ ৫জি স্মার্টফোনে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬৯৫ প্রসেসর এবং অ্যাড্রেন ৬১৯ জিপিইউ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক ফানটাচ ওএস ১৩ (Funtouch OS 13) কাস্টম স্কিনে রান করে। আবার স্টোরেজ হিসাবে উক্ত ডিভাইসে ৮ জিবি পর্যন্ত র্যাম এবং ১২৮ জিবি মেমরি মিলবে। আর ফোনটি ৩ জিবি পর্যন্ত এক্সটেন্ডেড র্যাম ফিচার সাপোর্ট করে বলে জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে ভিভো টি১ ৫জি স্মার্টফোনে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬৯৫ প্রসেসর রয়েছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১২ ভিত্তিক ফানটাচ ওএস ১২ (Funtouch OS 12) কাস্টম স্কিনে রান করে। স্টোরেজ হিসাবে ডিভাইসে সর্বাধিক ৮ জিবি র্যাম এবং ১২৮ জিবি মেমরি মিলবে।
Vivo T2 5G vs Vivo T1 5G : ক্যামেরা সেটআপ
ভিভো টি২ ৫জি ফোনটির ব্যাক প্যানেলে ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ বিদ্যমান রয়েছে। এই ক্যামেরাগুলি হল – OIS ও EIS প্রযুক্ত সহ ৬৪ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর এবং ২ মেগাপিক্সেল বোকেহ সেকেন্ডারি সেন্সর। আবার সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের সুবিধার্থে ডিভাইসে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি স্ন্যাপার উপস্থিত।
ফটোগ্রাফি জন্য ভিভো টি১ ৫জি ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা সেন্সর, ২ মেগাপিক্সেলে ম্যাক্রো লেন্স এবং ২ মেগাপিক্সেলের ডেপথ শুটার। অন্যদিকে সেলফি এবং ভিডিও কলিংয়ের জন্য এতে ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে।
Vivo T2 5G vs Vivo T1 5G : ব্যাটারি, কানেক্টিভিটি অপশন
কানেক্টিভিটি বিকল্প হিসাবে ভিভোর এই নয়া ৫জি-এনাবল হ্যান্ডসেটে সামিল রয়েছে – ৫জি, ডুয়াল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ৫.১, জিপিএস, হাইব্রিড সিম স্লট এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট। আর পাওয়ার ব্যাকআপের ক্ষেত্রে এই হ্যান্ডসেটে ৪,৫০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি আছে, যা ৪৪ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি সমর্থন করে।
কানেক্টিভিটির জন্য ভিভো টি১ ৫জি স্মার্টফোনে পাওয়া যাবে - ৩.৫ মিমি হেডফোন জ্যাক এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট। আবার পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য উক্ত হ্যান্ডসেটে দেওয়া হয়েছে ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি।
Vivo T2 5G vs Vivo T1 5G : পরিমাপ
ভিভো টি২ ৫জি স্মার্টফোনের পরিমাপ ১৫৮.৯১x৭৩.৫৩x৭.৮০ মিমি এবং ওজন ১৭২ গ্রাম।
ভিভো টি১ ৫জি স্মার্টফোন ৮.২৫ মিমি পুরু এবং ওজনে প্রায় ১৮৭ গ্রাম।
Vivo T2 5G vs Vivo T1 5G : দাম
ভারতে, ভিভো টি২ ৫জি স্মার্টফোনের প্রারম্ভিক মূল্যে ১৮,৯৯৯ টাকা রাখা হয়েছে। এই দাম ফোনটি ৬ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের। আবার ৮ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত উচ্চতর বিকল্পের দাম থাকছে ১৯,৯৯৯ টাকা। এটিকে – ভেলোসিটি ওয়েভ এবং নাইট্রো ব্লেজ কালার অপশনের সাথে পাওয়া যাবে।
ভিভো টি১ ৫জি স্মার্টফোনকে তিনটি স্টোরেজ কনফিগারেশনের সাথে ভারতে এসেছে। এগুলি হল - ৪ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ, ৬ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ, এবং ৮ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ। আলোচ্য ভ্যারিয়েন্টগুলির দাম যথাক্রমে - ১৫,৯৯০ টাকা, ১৬,৯০০ টাকা এবং ১৯,৯৯০ টাকা রাখা হয়েছে। এটি তিনটি কালার বিকল্পে উপলব্ধ, যথা - স্টারলাইট ব্ল্যাক, রেইনবো ফ্যান্টাস এবং সিল্কি হোয়াইট।