জীবন দায়ী Apple Watch-ই এখন ভারতে সাইবার আক্রমণের ঠেক! ইউজারদের সতর্কতা সরকারের
নানাবিধ আধুনিক ডিভাইস ঘেরা এই সময়েও একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে জিয়নকাঠির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে ব্যবহারকারীদের প্রাণ বাঁচাতে Apple Watch (অ্যাপল ওয়াচ)-এর জুড়ি মেলা ভার! কারণ, প্রযুক্তিগত সাধারণ সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি Apple Watch-এর একাধিক কার্যকর হেল্থ ট্র্যাকিং ফিচার (যেমন – ECG ট্র্যাকার, ফল ডিটেকশন ফিচার, এমার্জেন্সি কল ফিচার ইত্যাদি) ইউজারের জীবন রক্ষায় ত্রাতারূপে কাজ করেছে, এমন ঘটনার কথা প্রায়শই খবরের শিরোনামে থাকে। শুধু তাই নয়, বহু জটিল রোগের আগাম সতর্কতা প্রদান করতেও Apple-এর এই স্মার্ট গ্যাজেটটি অত্যন্ত সিদ্ধহস্ত। তাই বর্তমানে বিশ্বের প্রচুর মানুষ স্মার্টওয়াচটি ব্যবহার করেন। আবার এর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে অনেকে মনে করেন যে, Apple Watch হাতে থাকলে সাময়িকভাবে ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না। সেক্ষেত্রে বলি, জীবন রক্ষাকারী ডিভাইস হিসেবে খ্যাতি পেলেও হালফিলে এই স্মার্টওয়াচটি ব্যবহার করলে কিন্তু সাইবার হানার মুখোমুখি হতে পারেন ইউজাররা! আজ্ঞে হ্যাঁ, শুনে খুব অবাক লাগলেও সম্প্রতি এক রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ্যে এসেছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম বা সিইআরটি-ইন (CERT-IN) একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেশের সমস্ত অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহারকারীদের জন্য এক জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। এই সতর্কতার প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, অ্যাপলের এই গ্যাজেটটিতে এমন কিছু সিকিউরিটি ভালনারেবিলিটি বা নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির সন্ধান মিলেছে, যার সুবাদে সাইবার হানার মুখোমুখি হতে পারেন ব্যবহারকারীরা। সংস্থার তরফে আরো জানানো হয়েছে যে, ওয়াচওএস ৮.৭-এর পূর্ববর্তী ভার্সনগুলির দ্বারা চালিত অ্যাপল ওয়াচগুলিতেই মূলত এই ত্রুটির অস্তিত্ব মিলেছে। তাই যারা ওয়াচওএস ৮.৬ বা তার আগের ভার্সনের মডেল ব্যবহার করছেন, তাদের এই মুহূর্তে সাবধান হওয়া এবং সেইসাথে নিজেদের ঘড়িগুলিকে ওয়াচওএস ৮.৭ ভার্সনে আপডেট করে নেওয়া একান্ত আবশ্যক।
কী ধরণের সাইবার আক্রমণে পড়তে পারেন Apple Watch ইউজাররা
সিইআরটি-ইনের তরফে জারি করা ভালনারেবিলিটি নোটে বলা হয়েছে যে, অ্যাপল-এভিডি (AppleAVD) কম্পোনেন্টের বাফার ওভারফ্লো ও অ্যাপল-মোবাইল-ফাইল-ইন্টিগ্রিটি (AppleMobileFileIntegrity) কম্পোনেন্টে একটি অনুমোদনের সমস্যা (authorisation issue) হওয়ার কারণে অ্যাপল ওয়াচে এই ত্রুটিগুলি তৈরি হয়েছে। আর সমস্যার বিষয় হল, এই দুর্বলতাগুলিকে কাজে লাগিয়ে সাইবার আক্রমণকারীরা দূর থেকেই শুধুমাত্র একটি বিশেষ কোডের সাহায্যে ইউজারদেরকে টার্গেট করতে পারে। আসলে অ্যাপল ওয়াচে মজুত থাকা ত্রুটিগুলি হ্যাকারদের নির্বিচারে কোড কার্যকর করতে এবং টার্গেটেড সিস্টেমের যাবতীয় সীমাবদ্ধতাকে বাইপাস করতে সহায়তা করে। তাই পুরোনো ভার্সনের মডেল ব্যবহার করলে যেকোনো মুহূর্তেই ইউজাররা সাইবার অপরাধীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যেতে পারেন; সেক্ষেত্রে এর ফলটা যে কী হবে, সেকথা নিশ্চয়ই আর আলাদা করে বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
এখন প্রশ্ন হল, এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তির উপায় কী? সেক্ষেত্রে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ব্যবহারকারীদের জন্য Apple ইতিমধ্যেই এই সমস্ত নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির সমস্যাগুলিকে সমাধান করার জন্য একটি সফ্টওয়্যার আপডেট রোলআউট করেছে। সোজা কথায় বললে, লেটেস্ট ওয়াচওএস ৮.৭ ভার্সনে নিজেদের ডিভাইসগুলিকে আপডেট করে নিলেই ব্যবহারকারীদের মুশকিল আসান হয়ে যাবে (যেমনটা শুরুতেই বলেছি)। তাই সাইবার আক্রমণকারীদের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে চাইলে ইউজারদেরকে Apple Watch-এর লেটেস্ট সফ্টওয়্যার আপডেটটি ডাউনলোড করে সেটিকে ইনস্টল করতে হবে।