10 লাখ টাকা বেতনের চাকরি পাওয়ার মেসেজ এলে সাবধান! এক্ষুণি ডিলিট না করলে খালি হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
SMS Scam: আপনি হয়তো খুব মনোযোগ সহকারে কোনো একটি কাজ করছেন, কিন্তু তার মধ্যেই হঠাৎ আপনার ফোনে চলে এল একটি এসএমএস, যেখানে বলা রয়েছে যে - আপনি ১০ লাখ টাকার (বার্ষিক) একটি চাকরি পেয়ে গিয়েছেন! সাধারণভাবে মেসেজটি দেখে আমজনতার আনন্দিত তথা উত্তেজিত হয়ে যাওয়াটাই খুব স্বাভাবিক। ফলে সেই চাকরিটি পাওয়ার জন্য মেসেজে যা যা করার কথা বলা থাকবে, সকলেই অবিলম্বে তা করে ফেলতে বাধ্য। মূলত করোনা মহামারীর আবির্ভাবের পর থেকেই দেশে বেকারত্বের সমস্যাটা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, এমত পরিস্থিতিতে এরকম কোনো মেসেজ এলে তার রিপ্লাই দেওয়াটা যে কারোর পক্ষেই খুবই স্বাভাবিক। আর সেই কারণেই এই পদ্ধতিটিকে হাতিয়ার করে চলতি সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে সাইবার জালিয়াতির ফাঁদে ফেলছে দুর্বৃত্তরা।
ইদানীংকালে চাকরি দেওয়ার নাম করে মানুষকে ভুয়ো এসএমএস পাঠিয়ে সেই মেসেজে থাকা একটি লিঙ্কে ক্লিক করতে বলা হচ্ছে ইউজারদের, এবং সেই লিঙ্কে ক্লিক করে ফেলা মাত্রই চোখের নিমেষে অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের এসএমএস সম্পর্কে ইউজারদের সতর্ক থাকা একান্ত আবশ্যক। একবার ভুলবশত কোনো লিঙ্কে ক্লিক করে ফেললেই অ্যাকাউন্ট হয়ে যাবে গড়ের মাঠ এবং এক চুটকিতেই কার্যত সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে পারেন আপনি। কিন্তু ঠিক কীভাবে ঘটছে এরকম ঘটনা? আসুন জেনে নিই।
ভুয়ো এসএমএস পাঠিয়ে চাকরির নামে প্রতারণা করছে হ্যাকাররা
ইদানীংকালে মোটা টাকার চাকরি দেওয়ার দাবি করে ইউজারদেরকে ভুয়ো এসএমএস পাঠাচ্ছে হ্যাকাররা, এবং চাকরিটি পাওয়ার জন্য তাদেরকে মেসেজে উল্লিখিত একটি লিঙ্কে ক্লিক করে নিজেদের ব্যক্তিগত ডিটেইলস এন্টার করতে বলা হচ্ছে। তবে আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটা খুব সহজ বলে মনে হলেও আদতে এই লিঙ্কটিতে ক্লিক করা মাত্রই ব্যবহারকারীদেরকে একটি ফিশিং ওয়েবসাইটে রিডাইরেক্ট করা হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, ভুয়ো ওয়েবসাইটটিকে একঝলক দেখে কোনোমতেই নকল বলে মনে না হওয়ায় ইউজারদের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ থাকছে না। ফলে চাকরি পাওয়ার আশায় সেই ভুয়ো ওয়েবসাইটটিতে ব্যবহারকারীরা সকল ব্যক্তিগত ডিটেইলস এন্টার করে ফেলা মাত্রই সেগুলি গিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে হ্যাকারদের কাছে, এবং সেই তথ্যগুলিকে হাতিয়ার করেই স্ক্যামাররা সহজসরল সাধারণ মানুষদের কষ্টার্জিত টাকা তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই এই ধরনের কোনো মেসেজ যদি আপনার ফোনে আসে, তাহলে অবিলম্বে সেগুলিকে ডিলিট করে দিন; এবং সর্বোপরি অজানা সোর্স থেকে পাওয়া কোনো মেসেজে থাকা লিঙ্কে খবরদার কখনও ক্লিক করবেন না।
চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কখনোই কোনো কোম্পানির সাথে অজানা লিঙ্কে ক্লিক করতে বলবে না
সাধারণভাবে যে-কোনো সংস্থায় কোনো চাকরির জন্য আবেদন করলে আবেদনকারীকে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি ধাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। প্রথমত, ইউজারকে নিজস্ব সিভি সহ যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র অ্যাটাচ করে অনলাইন বা অফলাইনে চাকরির জন্য কোম্পানির কাছে আবেদন পাঠাতে হয়। তারপরে সেই সংস্থার কাছে জমা পড়া একাধিক আবেদনপত্রের মধ্যে থেকে সংশ্লিষ্ট ইউজারের অ্যাপ্লিকেশনটি নির্বাচিত হলে এইচআর ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে তাকে কল করা হয় এবং একটি ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়।
এরপর অফলাইন কিংবা অনলাইন মারফত নেওয়া ইন্টারভিউয়ের পর যদি কোম্পানিটি ওই প্রার্থীকে যোগ্য বলে বিবেচিত করে, তাহলে সবশেষে তাকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কল কিংবা মেইল মারফত কাজের অফার দেওয়া হয়। এরপর অফিসে গিয়ে কিংবা অনলাইনে প্রার্থীকে নিজের সকল ডকুমেন্টস জমা দিতে হয় এবং নির্দিষ্ট তারিখ থেকে কাজে যোগদান করতে হয়। সাধারণভাবে এই পদ্ধতিতেই বেশিরভাগ মানুষ চাকরি পেয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে কখনোই কোনো কোম্পানি ইউজারদেরকে চাকরি দেওয়ার জন্য যেচে এসএমএস পাঠিয়ে কোনো লিঙ্কে ক্লিক করতে বা আগাম মোটা টাকা জমা দেওয়ার কথা কোনোমতেই বলবে না। তাই এই ধরনের কথা যদি কেউ আপনাদেরকে বলে থাকে, তাহলে অবশ্যই আগেভাগে সাবধান হয়ে যান।