WhatsApp আনছে নয়া কম্প্যানিয়ন মোড, OTP ছাড়াই হবে নতুন ডিভাইসে লগ-ইন
WhatsApp বর্তমানে 'কম্প্যানিয়ন মোড' (Companion mode) নামের একটি নতুন ফিচারের উপর কাজ করছে। ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিং প্ল্যার্টফর্মটির ফিচার ট্র্যাকার সাইট, WaBetaInfo সম্প্রতি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপের ২.২২.১১.১০ (2.22.11.10) অ্যান্ড্রয়েড বিটা ভার্সনে এই নতুন ফিচারটি লক্ষ্য করেছে। ফিচারটি, প্রাইমারি ডিভাইস ব্যাতিত আরেকটি সেকেন্ডারি ফোন থেকে সহজে হোয়াটসঅ্যাপে লগ-ইন করার সুবিধা প্রদান করতে পারে ব্যবহারকারীদের। একইসাথে ওয়েবসাইটটি তাদের রিপোর্টে বলেছে যে, আলোচ্য কম্প্যানিয়ন মোড প্রকৃতপক্ষে, কিছু সময় পূর্বে মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটির সাথে যুক্ত হওয়া মাল্টি-ডিভাইস (Multi-device) ফিচারেরই একটি এক্সটেনশন। যদিও কার্যকারিতার নিরিখে বিদ্যমান মাল্টি-ডিভাইস ফিচার এবং বিকাশাধীন কম্প্যানিয়ন মোড সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে বলেই মনে হচ্ছে।
হোয়াটসঅ্যাপ কম্প্যানিয়ন মোড কি? (What is WhatsApp Companion mode?)
WaBetaInfo তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছিল। যেখানে হোয়াটসঅ্যাপ শীঘ্রই কম্প্যানিয়ন মোড নামের একটি নতুন ফিচার চালু করতে পারে বলে দেখানো হয়েছে। কার্যকারিতার নিরিখে, এই ফিচার ব্যবহারকারীদের তাদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টকে অন্য স্মার্টফোনের সাথে লিঙ্ক করার অনুমতি দেবে, এমনটা অনুমান করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের ফিচার ডেভলপমেন্ট ট্র্যাকিং ব্লগটি দাবি করেছে যে, কম্প্যানিয়ন মোড বিদ্যমান মাল্টি-ডিভাইস ফিচারের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু একটু খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে এই দাবি সঠিক নয়। কারণ, স্ক্রিনশটে দেখা গেছে যে, ব্যবহারকারী একসাথে দুটি ফোনে এই মেসেজিং অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন না। যেহেতু, একটি ফোনে সফলভাবে লগ-ইন করার পরে, হোয়াটসঅ্যাপ স্বয়ং ব্যবহারকারীকে প্রাথমিক ডিভাইস থেকে লগ-আউট করে দেবে। অতএব, কম্প্যানিয়ন মোড কোনোভাবেই মাল্টি-ডিভাইস ফিচারের এক্সটেনশন হতে পারে না।
কম্প্যানিয়ন মোড কেন মাল্টি-ডিভাইস ফিচারের থেকে আলাদা?
সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, নতুন কোনো ডিভাইসে লগ-ইন করার পর, প্রাথমিক ডিভাইস থেকে হোয়াটসঅ্যাপ সমস্ত ডেটা সরিয়ে ফেলবে। এক্ষেত্রে, যারা গুগল ড্রাইভ (Google Drive) বা আইক্লাউডের (iCloud) মতো থার্ড-পার্টি স্টোরেজ প্ল্যাটফর্মে হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট এবং মিডিয়ার ব্যাকআপ রাখবেন, তারা অন্য যেকোনো ফোনে পূর্ববর্তী যাবতীয় চ্যাট অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হবেন। সুতরাং, আলোচ্য কম্প্যানিয়ন মোড মাল্টি-ডিভাইস ফিচারের থেকে কেন আলাদা আশা করি সহজে বোঝা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পূর্ববর্তী একাধিক রিপোর্টে দাবি হয়েছিল যে, হোয়াটসঅ্যাপ তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ভিন্ন ফোনে চ্যাট অ্যাক্সেস করা প্রক্রিয়াকে আরো সহজসাধ্য করার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে, WaBetaInfo কিছু সময় পূর্বে, ফোন নম্বর এন্টার এবং তারপরে OTP নম্বরের জন্য অপেক্ষা করে অন্য ফোনের মাধ্যমে লগ-ইন করার সময়সাধ্য প্রক্রিয়াকে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ কিছুটা পরিবর্তন করেছে বলে জানিয়েছিল। সেক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে যেকোনো সেকেন্ডারি ডিভাইসে লগ-ইন করার জন্য QR কোড স্ক্যান করার সুবিধা প্রদান করা হয় ব্যবহারকারীদের।
মাল্টি-ডিভাইস ফিচারের সুবিধা কী? (What is a multi-device feature?)
হোয়াটসঅ্যাপ, কিছু সময় পূর্বে 'মাল্টি-ডিভাইস' (multi-device) বা ‘মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট’ (multi-device support) নামের একটি বিশেষ ফিচার যুক্ত করেছিল তাদের প্ল্যাটফর্মে। এই ফিচারের অধীনে ব্যবহারকারীরা একই সময়ে চারটি ভিন্ন ডিভাইস থেকে মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে আসা চ্যাটগুলি অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হবেন। ফলে, আলাদা করে আর প্রাইমারি ডিভাইস বা স্মার্টফোনকে সারাক্ষন কাছাকাছি রাখতে হবে না। এক্ষেত্রে মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটির বিবৃতি অনুসারে, চারটি ভিন্ন ডিভাইস থেকে একই সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট লিংক করার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করে QR কোড স্ক্যান করতে হবে। যদিও, এই চারটি ডিভাইস কিন্তু চারটি ভিন্ন স্মার্টফোন হলে চলবে না। একটি মোবাইল বাদে বাকি তিনটি শুধুমাত্র ওয়েব ভার্সন সমর্থিত ডিভাইস (উদা : ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ট্যাবলেট ইত্যাদি) হতে হবে। নতুবা, ফিচারটি কাজ করবে না। যাইহোক, এই ফিচারের কার্যকারিতা সত্যি অনস্বীকার্য। কেননা, ফোনের ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়ার পরও আপনারা ল্যাপটপ বা অন্য ডিভাইস ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারবেন।