Nokia X20 এর রিটেল বক্সে থাকবে না চার্জার! কারণ জানালো‌ সংস্থা

স্মার্টফোন বাজারে বেশির ভাগ ব্র্যান্ডই Apple iPhone-এর কোনো নতুন ফিচার আত্মস্থ করার চেষ্টা করে। কোনো কোনো সময় এই ব্র্যান্ডগুলিকে, প্রিমিয়াম ডিভাইস নির্মাতা সংস্থাটির দেখানো পথেও হাঁটতে দেখা যায়। যেমন গতবছর লেটেস্ট আইফোন সিরিজ চালু করার সময় Apple সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা নতুন আইফোনের সাথে চার্জারসহ প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক প্রোডাক্টগুলি সরবরাহ করবে না; ক্রেতাদের আলাদা করে এই জিনিসগুলি কিনতে হবে। প্রাথমিকভাবে মার্কিনি সংস্থাটির এই পদক্ষেপ বেশ সমালোচিত হলেও, পরবর্তী সময়ে Samsung, Xiaomi-র মত জনপ্রিয় ব্র্যান্ডও তাদের ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস লঞ্চের দরুন একই সিদ্ধান্ত নেয়। সেক্ষেত্রে এবার, চার্জার অ্যাডাপ্টার সরবরাহ না করার এই চর্চিত ট্রেন্ডের সাথে ফোন দুনিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাম Nokia-ও জড়াতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, নতুন Nokia X20 স্মার্টফোনের রিটেল বক্সের সাথে মিলবে না চার্জার। অন্যদিকে এই সিদ্ধান্তের পেছনে, বাকি সংস্থাগুলির মতই পরিবেশের দোহাই দিয়েছে Nokia-ও।

Nokia মোবাইল নির্মাতা HMD Global জানিয়েছে যে, তারা পরিবেশের ওপর প্রভাব হ্রাস করার জন্যই Nokia X20 নামক সদ্য লঞ্চ হওয়া ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনটির থেকে ‘প্লাস্টিক’ ওয়াল চার্জার’ সরিয়ে দিয়েছে – যেমনটা এর আগে বলেছিল Apple বা Samsung। সেক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষণের এই যুক্তিটি সঙ্গত হলেও, অনেকেরই মনে হতে পারে তাহলে কি চার্জার ছাড়া ফোন বিক্রির বিষয়টি স্বাভাবিক রীতিতে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে বা ফোনের সাথে আলাদা করে চার্জার কেনা কি অবশ্যম্ভাবী?

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, এখন প্রত্যেকেরই বাড়িতে অতিরিক্ত চার্জার বা পাওয়ার ব্রিক থাকে যা চাইলেই যেকোনো ফোনের জন্য পুনরায় ব্যবহার করা যায়। এর জন্য শুধু প্রয়োজনীয় বা নির্দিষ্ট ধরণের চার্জিং কেবলের ব্যবস্থা করতে হয়। সেক্ষেত্রে বেশির ভাগ স্মার্টফোন কোম্পানিই চার্জিং অ্যাডাপ্টার সরবরাহ না করলেও, ফোনের সাথে চার্জিং কেবল দেয়; ফলে আলাদা করে ডেটা কেবল জোগাড় করার ঝক্কিও পোহাতে হয়না। সুতরাং নতুন চার্জার যে কিনতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

কিন্তু Nokia X20-র মত স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে মুশকিল হল যে, ক্রেতাকে ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি সম্পন্ন কোনো অ্যাডাপ্টার/পাওয়ার ব্রিক, ইউএসবি-পিডি বা কোয়ালকম চার্জের মাধ্যম খোঁজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিষয়টি সহজ নাও হতে পারে, কারণ HMD এর আগে কখনও ফাস্ট চার্জিংয়ের দিকে মনোযোগ দেয়নি। ফলত, বেশিরভাগ নোকিয়া ফোনেই ফাস্ট-চার্জিং অ্যাডাপ্টার নেই। আবার Nokia 8.3 5G-এর মত প্রিমিয়াম স্মার্টফোনে এই সুবিধা থাকলেও, অনেকের কাছেই এই ফোনটি নেই। তাই ফোনের সাথে প্রয়োজনীয় চার্জার না থাকলে গ্রাহকের পকেটে টান পড়বেই। কারণ হয় ক্রেতাকে নতুন চার্জার কিনতে হবে, নতুবা পুরনো কম পাওয়ারের চার্জার ব্যবহার করতে হবে। আবার নতুন এই জাতীয় কোনো ফোন কিনলেও ফের একই ঝামেলার মুখে পড়তে হবে। কিন্তু Nokia X20-র ক্রেতাদের এমন অভিজ্ঞতা নাও হতে পারে।

আসলে অন্য সবার মত একই রীতি অনুসরণ করলেও আলাদা কিছু করার কথা ভেবেছে Nokia। জানিয়ে রাখি, সংস্থার X20 অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি তিন বছরের আপগ্রেড সমর্থন করবে, যার মানে এটি বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ফোনের চেয়ে বেশি দিন স্থায়ী হবে; এতে ইউজারের নতুন ফোনে স্যুইচ করার আগ্রহও কমবে। তাছাড়া Nokia X20 ফোনটিতে ১০০ শতাংশ কম্পোস্টেবল কেস থাকবে, যার ফলে এটি প্রকৃতি বা পরিবেশের ওপর ন্যূনতম প্রভাব ফেলবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন