ওয়ারেন্টি থাকলেও মেলেনি মেরামতি, Samsung-এর চিঠি এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্মার্টফোন ফ্রেমে বাঁধালেন ইউজার

ওয়ারেন্টির অধীনে থাকা সত্ত্বেও একটি ক্ষতিগ্রস্ত ফোল্ডেবল স্মার্টফোন সারাই করতে অস্বীকার করল Samsung (স্যামসাং)! হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই এক খবর সামনে এসেছে। তবে এর থেকেও বড়ো খবরটি হল, এই ঘটনাটিকে চিরদিনের জন্য স্মরণে রাখতে Samsung-এর তরফ থেকে পাওয়া প্রত্যাখ্যানের চিঠি (মেইল) এবং ক্ষতিগ্রস্ত ফোন – দুটিকে একসাথে ফ্রেম করে রাখলেন ডিভাইসটির মালিক! পরপর দুটো চমকদার খবরে নিশ্চয়ই আপনার একটা বড়োসড়ো ঝটকা লাগলো, তাহলে চলুন ব্যাপারটা একটু খুলেই বলি।

জুহানি লেহটিমাকি (Juhani Lehtimäki) নামক ওই ব্যক্তির ব্লগপোস্ট অনুযায়ী, তিনি বিখ্যাত টেক ইউটিউবার মার্কুইস ব্রাউনলি (Marques Brownlee)-র একটি ভিডিও দেখার পরে নতুন স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ৩ (Samsung Galaxy Z Flip3) ফোল্ডেবল স্মার্টফোনটি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। প্রাথমিকভাবে, নজরকাড়া ডিজাইন এবং একগুচ্ছ কার্যকর ফিচারের জন্য তিনি ডিভাইসটিকে নিয়ে ভীষণরকমভাবে সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু মাস তিনেক বাদে ফোনটি দুর্ভাগ্যবশত একটি দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং সেটিতে জোর আঘাত লাগে।

এরপর একদিন তিনি তার পকেট থেকে ফোনটি বের করে লক্ষ্য করেন যে, হিঞ্জের উপরে ডিসপ্লের মাঝখানের অংশটি কালো হয়ে গেছে। উপরন্তু, ডিসপ্লের উপরের অর্ধেক অংশে কোনো টাচ কাজ করছে না। কিন্তু পড়ে কালো অংশটির পরিমাণও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং আস্তে আস্তে ডিসপ্লেটিও কাজ করা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। ফোনটির প্রতি ভীষণরকম যত্ন নিলেও সেটি আস্তে আস্তে অচল হয়ে যেতে থাকে। তবে ডিভাইসটি যেহেতু ওয়ারেন্টির অধীনে ছিল, তাই লেহটিমাকি বিন্দুমাত্র দেরি না করে তৎক্ষণাৎ সেটিকে মেরামতির জন্য স্যামসাং-এর সার্ভিস সেন্টারে পাঠিয়ে দেন।

এতে সুরাহা হয় না! বরঞ্চ দক্ষিণ কোরিয়ার টেক জায়েন্টটি ওই ব্যক্তিকে চরমভাবে হতাশ করে। এক্ষেত্রে সংস্থাটি মেইল করে তাকে জানায় যে, “আপনার গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ৩ ডিভাইসটি ওয়ারেন্টির অধীনে মেরামত করা যাবে না। আপনি ক্ষতিগ্রস্ত ডিভাইসটির সম্বন্ধে যে তথ্য সরবরাহ করেছেন, তার উপর ভিত্তি করে আমরা মেরামত সম্পর্কিত আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে আমাদের সার্ভিস পার্টনারের সাথে যোগাযোগ করেছি। ডিভাইসটির প্রযুক্তিগত পরিদর্শন করতে গিয়ে আমাদের টেকনিশিয়ান এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ডিসপ্লে ছাড়াও ফোনটির ফ্রেমও ভেঙে গেছে এবং এই ক্ষতিটি পতন, নমন বা অত্যধিক চাপ – এই ধরনের কোনো বাহ্যিক যান্ত্রিক প্রভাবের কারণে হয়েছে। এই ডিসপ্লেটি ঠিক করতে প্রায় ৩৪০ মার্কিন ডলার খরচ হবে।”

সংস্থার তরফে পাওয়া এই প্রতিক্রিয়া রীতিমতো হতভম্ব করে দেয় জুহানিকে। চরমভাবে বীতশ্রদ্ধ হয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি আর এই ফোনের জন্য স্যামসাং-কে এক পয়সাও দেবেন না, এবং ভবিষ্যতে আর কখনও স্যামসাংয়ের ডিভাইস কিনবেন না। আর এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটিকে চিরদিনের জন্য মনে রাখতে স্যামসাং-এর তরফ থেকে পাওয়া প্রত্যাখ্যানের মেইল এবং ভাঙা ফোনটিকে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রেখে দেন তিনি। যাইহোক, চাঞ্চল্যকর এই খবরটি যে পাঠকদের নজর কাড়তে বাধ্য, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য!