পেট্রল-ডিজেলের তুলনায় ইলেকট্রিক গাড়ি পরিবেশ বেশি দূষিত করে, চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষণায়

পরিবেশ দূষণের থাবা থেকে বাঁচতে অন্যতম বড় অস্ত্র বৈদ্যুতিক যানবাহন। এগুলি তুলনামূলক কম দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ নির্গমন করে বলেই “পরিবেশবান্ধব” হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। সাধারণভাবে পেট্রোল কিংবা ডিজেল চালিত গাড়ির সাপেক্ষে ইলেকট্রিক ভেহিকেল অধিক প্রকৃতিবান্ধব হিসাবেই পরিচিত ছিল। তবে এবার যদি বলি এতক্ষণ যা বললাম তা সবই ভুল! আমরা অনেকেই জানি না, পরিবেশবান্ধব ভেবে নিয়ে যে সমস্ত বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহার করছি সেগুলি আদতে আর পাঁচটি চিরাচরিত জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ির তুলনায় অতিরিক্ত ধূলিকণা বাতাসে যুক্ত করে চলেছে।

ইলেকট্রিক ভেহিকেলের পার্টিকেল পলিউশন পেট্রল/ডিজেল গাড়ির থেকে বেশি

সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে Emission Analytics নামে এক সংস্থা। ইভির দূষণ সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা ধ্যান-ধারণাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে তাদের সদ্য প্রকাশিত জার্নাল।বৈদ্যুতিক ও পেট্রোল-ডিজেল চালিত গাড়ির ব্রেক এবং টায়ার থেকে নির্গত ভাসমান ধূলিকণার উপরেই গবেষণা চালিয়েছিল এই সংস্থা।

তাদের মতে এই জাতীয় ধূলিকণা একটি জীবাশ্ম জ্বালানির গাড়ির তুলনায় বৈদ্যুতিক যানবাহনে অনেক বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়। এর প্রধান কারণ অতিরিক্ত ওজন। এর ফলেই ব্যাটারি চালিত যে কোনো ধরনের গাড়িতে তার ব্রেক এবং টায়ার থেকে তুলনায় অতিরিক্ত ভাসমান ধূলিকণা নির্গত হয়। গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে গ্যাস কিংবা পেট্রোল-ডিজেলের যে সমস্ত গাড়িতে যথাযথ এগজস্ট ফিল্টার ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলির তুলনায় বিদ্যুৎচালিত গাড়িগুলিতে এই ধূলিকণা উৎপাদনের পরিমাণ 1850 গুণ বেশি।

গবেষণায় সবচেয়ে বেশি ব্যাটারি চালিত গাড়ির টায়ারের বিষয়টিতেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাধারণভাবে ইভির ওজন খানিকটা বেশি হওয়ার ফলে টায়ার দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। তার ফলে টায়ারের মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থগুলি সহজেই মিশতে থাকে বাতাসে। প্রসঙ্গত, টায়ার উৎপাদনের ক্ষেত্রে ক্রুড ওয়েল থেকে নির্গত সিন্থেটিক রবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

দাবি করা হয়েছে যে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিপুল ওজনের জন্য দায়ী তার ব্যাটারি। যে কোনো পেট্রোল কিংবা ডিজেলের গাড়িতে ব্যবহৃত ব্যাটারি হয় খানিকটা ছোট। এর চেয়ে অনেক বড় এবং ভারী ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ইভির মধ্যে। এই অতিরিক্ত ওজন সরাসরি গিয়ে বাড়তি চাপ প্রয়োগ করে টায়ার ও ব্রেকে। এর ফলে কম সময়ে এই জাতীয় গাড়িগুলির টায়ার ও ব্রেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।