কোন ফোন কিনবেন? Google Pixel 7a নাকি Pixel 7, জেনে নিন

Google Pixel 7a নাকি Pixel 7 কোন ফোনটি কেনা লাভজনক হবে দেখে নিন

গত ১০ই মে I/O 2023 টেক কনফারেন্স চলাকালীন Google Pixel 7a স্মার্টফোনকে ভারত সহ বিশ্বব্যাপী ঘোষনা করা হয়। এটি ২০২২ সালের ৬ই অক্টোবর লঞ্চ হওয়া Pixel 7 মডেলের অনুরূপ ডিজাইন সহ এসেছে। পাশাপাশি পূর্বসূরির মতো একাধিক হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার স্পেসিফিকেশনও অফার করে উত্তরসূরিটি। যদিও – ডিসপ্লে সাইজ, স্টোরেজ, ক্যামেরা রেজোলিউশন, কানেক্টিভিটি, এবং ব্যাটারি ক্যাপাসিটির ক্ষেত্রে তারতম্য লক্ষ্যণীয়। আবার দামের নিরিখে নবাগত এবং বিদ্যমান ফোন দুটির মধ্যে প্রায় ১৬,০০০ টাকার পার্থক্য থাকছে। ফলে Google Pixel 7a নাকি Pixel 7 কোন ফোনটি কেনা লাভজনক হবে তা এখন বিচার্য বিষয়। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজ আমরা আলোচ্য দুটি ফোনের দাম ও ফিচারগত তুলনামূলক আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি…

Google Pixel 7a vs Pixel 7 : ডিসপ্লে, সেন্সর

গুগল পিক্সেল ৭এ স্মার্টফোনে আছে ৬.১-ইঞ্চির ফুল এইচডি OLED ডিসপ্লে প্যানেল, যা ৯০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে। ডিসপ্লের সুরক্ষার জন্য রয়েছে গরিলা গ্লাস। সিকিউরিটির জন্য এতে ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও ফেস আনলক ফিচার উপলব্ধ।

গুগল পিক্সেল ৭ স্মার্টফোনে ৬.৩২-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস OLED ডিসপ্লে প্যানেল রয়েছে, যা ৯০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, ১,৪০০ নিট পিক ব্রাইটনেস এবং HDR টেকনোলজি সাপোর্ট করে। নিরাপত্তার জন্য এতে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার মিলবে।

Google Pixel 7a vs Pixel 7 : প্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, র‌্যাম, স্টোরেজ

উন্নত পারফরম্যান্স প্রদানের জন্য গুগল পিক্সেল ৭এ স্মার্টফোনে গুগল টেন্সর ২ চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে। এটিকে ৮ জিবি র‌্যাম এবং ১২৮ জিবি স্টোরেজ সহ পাওয়া যাবে। অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ডিভাইসে লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ১৩ প্রি-লোডেড থাকছে। সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এই ফোনের সাথে ইউজাররা ৫ বছর সিকিউরিটি আপডেট ও ৩টি অ্যান্ড্রয়েড আপডেট পাবে।

অভ্যন্তরীণ স্পেসিফিকেশনের কথা বললে, গুগল পিক্সেল ৭ স্মার্টফোনটি সংস্থার নিজস্ব টেন্সর জি২ চিপসেট সহ এসেছে। এই হ্যান্ডসেট স্টক অ্যান্ড্রয়েড ১৩ অপারেটিং সিস্টেমে রান করে। আর স্টোরেজ হিসাবে ডিভাইসে ৮ জিবি LPDDR5 র‍্যাম এবং ১২৮ জিবি/২৫৬ জিবি UFS 3.1 রম বিদ্যমান থাকছে।

Google Pixel 7a vs Pixel 7 : ক্যামেরা সেটআপ

ক্যামেরা বিভাগের কথা বললে, Google Pixel 7a ফোনে ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – ৬৪ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর এবং ৮এক্স সুপার রেস জুম সহ ১৩ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স। এই রিয়ার ক্যামেরা-দ্বয় ৪কে (4K) রেজোলিউশন ভিডিও রেকর্ডিংয়ে সমর্থ। একই সাথে – নাইট সাইট, ম্যাজিক ইরেজার, ফটো আনব্লার -এর মতো ক্যামেরা ফিচারও সাপোর্ট করে। যাইহোক ডিভাইসের সামনে ১৩ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা লক্ষণীয়।

ভিডিও এবং ফটোগ্রাফির জন্য, Google Pixel 7 ফোনের রিয়ার প্যানেলে ডুয়েল-ক্যামেরা সেটআপ অবস্থান করছে। এই ক্যামেরাগুলি হল – অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন (OIS) সহ ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর এবং ১১৪-ডিগ্রি ফিল্ড-অফ-ভিউ (FoV) সহ ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স। আর ফোনের সামনে এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ একটি ১০.৮ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা বর্তমান। এই ফোনে ‘সিনেম্যাটিক ব্লার’ ক্যামেরা ফিচার অন্তর্ভুক্ত করেছে গুগল।

Google Pixel 7a vs Pixel 7 : ব্যাটারি, কানেক্টিভিটি পোর্ট, রেটিং

কানেক্টিভিটি অপশন হিসাবে গুগলের এই ফোনে – ৫জি, ওয়াই-ফাই ৬ই, ব্লুটুথ ৫.৩ এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট অন্তর্ভুক্ত। আবার পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য পিক্সেল ৭এ স্মার্টফোনে ৪,৩৮৫ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে, যা ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং এবং ৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি সাপোর্ট করে। এছাড়া জল ও ধুলো প্রতিরোধের জন্য এটি IP67 রেটিং প্রাপ্ত।

কানেক্টিভিটির জন্য গুগল পিক্সেল ৭ হ্যান্ডসেটে – ৪জি এলটিই, ৫জি, ওয়াই-ফাই ৬ই, ব্লুটুথ ৫.২, এনএফসি এবং জিপিএস বিকল্প সামিল রয়েছে। পাওয়ার ব্যাকআপের ক্ষেত্রে এতে ৪,৩৫৫ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি সমন্বিত, যা ৩০ ওয়াট ওয়্যার্ড ফাস্ট চার্জিং এবং কিউআই (Qi) সার্টিফায়েড ওয়্যারলেস ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। গুগলের দাবি অনুসারে, উক্ত মডেলটি একটা গোটা দিন ব্যাটারি লাইফ প্রদানে সমর্থ। আবার ব্যবহারকারীরা যদি এক্সট্রিম ব্যাটারি সেভার অপশন এনাবল করেন, তাহলে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ পেতে সক্ষম হবেন। এটি ধুলো ও জল প্রতিরোধের জন্য IP68 রেটিং সহ এসেছে।

Google Pixel 7a vs Pixel 7 : দাম

ভারতের বাজারে গুগল পিক্সেল ৭এ ফোনের ৮ জিবি র‌্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের দাম রাখা হয়েছে ৪৩,৯৯৯ টাকা। এটিকে – চারকোল, সি এবং স্নো কালারে পাওয়া যাবে।

এদেশে গুগল পিক্সেল ৭ মডেলকে ৫৯,৯৯৯ টাকার প্রারম্ভিক মূল্যে লঞ্চ করা হয়েছিল। এটি স্নো, অবসিডিয়ান এবং লেমনগ্রাস, এই তিনটি আকর্ষণীয় কালার অপশনে উপলব্ধ।